স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেন, জরায়ু ক্যান্সার রোধে কার্যকরী এইচপিভি টিকা নিয়ে নানা রকম অপপ্রচার চলছে। নানান রকম কথাবার্তা হয়েছে। আমি মনে করে অপপ্রচার সবসময় থাকে। একসময় আমরা যখন ফ্যামিলি প্লানিং নিয়ে কাজ করেছি, ডায়রিয়া নিয়ে কাজ করেছি তখনও অপপ্রচার ছিল। অপপ্রচার রুখে দেবার শক্তি হচ্ছে মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা। এটার উপর আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি। মানুষ যদি সচেতন হয় যে যে দিক থেকে বাধা নিয়ে আসুক না কেন তা অতিক্রম করা সম্ভব।
গতকাল রোববার দুপুরে নগরীর সার্কিট হাউসের সভাকক্ষে এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইন–২০২৪ উপলক্ষ্যে চট্টগ্রাম জাতীয় পর্যালোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, আমরা এখানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, সিটি কর্পোরেশন, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, কওমি মাদ্রাসার প্রতিনিধি, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিভাগের কর্মকর্তা, শিক্ষক সমাজসহ বিভিন্ন স্তরের অংশীদারদের সঙ্গে সভা করেছি, যাতে সবার অংশগ্রহণে এইচপিভি টিকা কার্যক্রমটা আমরা সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করতে পারি।
এইচপিভি টিকা নিয়ে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা আরও বলেন, এইচপিভি টিকা কার্যক্রমে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। ইতোমধ্যে ২৫ লাখ টিকা দেওয়া হয়েছে। আশা করি, সবার সহযোগিতায় বাকি সময়ের মধ্যে আমরা ৯০ শতাংশ টিকা দেওয়া সম্পূর্ণ করতে পারবো। ডেঙ্গু বিষয়ে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, ডেঙ্গু নিয়ে আমরা দেশের প্রত্যেকটা হাসপাতালে, ক্লিনিকে বিশেষভাবে ডাক্তারদের প্রশিক্ষণ দিয়েছি। নার্সদের প্রশিক্ষণ দিয়েছি। প্রত্যেকটা হাসপাতালে ডেঙ্গু বিষয়ে ফোকাল কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে এবং আলাদা ইউনিট গঠন করা হয়েছে। আপনারা যদি তুলনা করে দেখেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা অনেক কম। তাই বলে আমরা থেমে নেই। আমরা প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে যাচ্ছি, যাতে ডেঙ্গু সংক্রমণ এবং মৃত্যু আরও কমানো যায়। এটা শুধু সরকারের একার পক্ষে সম্ভব না। আমরা ছাত্র–জনতা প্রত্যেকেই যদি ডেঙ্গু প্রতিরোধে এগিয়ে আসি, যেখানে যেখানে ময়লা–আবর্জনা, পানি জমে থাকে এবং মশার উপদ্রব হওয়ার স্থানগুলো পরিষ্কার রাখি, তাহলে ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমরা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবো। এ জন্য সবার অংশগ্রহণ ও সহযোগিতা প্রয়োজন।
অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মুহাম্মদ আনোয়ার পাশার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পর্যালোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অফিসার ডা. চিরঞ্জিত দাস, ইউনিসেফের চিফ এসবিসি সেকশন প্রতিনিধি মিস ব্রিজেত জব জনসন, চট্টগ্রামের বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) অং সুই প্রু মারমাসহ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সকল বিভাগ ও অধিদফতর সমূহের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা।