আগামী ২৬ জুন বাংলা প্রথম পত্র দিয়ে চলতি বছরের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষা শুরু হবে। তত্ত্বীয় পরীক্ষা শেষ হবে ১০ আগস্ট। আর ব্যবহারিক পরীক্ষা ১১ আগস্ট শুরু হয়ে শেষ হবে ২১ আগস্ট। পাশাপাশি আলিম ও ভোকেশনাল পরীক্ষাও শুরু হবে। আগামী ১৭ তারিখ থেকে প্রবেশপত্র বিতরণ করা হবে। এবারে চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের অধীনে ৩০৭টি কলেজের এক লাখ ৩৫ জন শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিবে। মোট ১১৪টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষা সফলভাবে সম্পন্ন করতে ৩০টি সাধারণ ভিজিল্যান্স টিম ও ১০টি বিশেষ ভিজিল্যান্স টিম কাজ করবে। এবারে পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র রয়েছে ৪৪ হাজার ১৩৯ জন, ছাত্রী রয়েছে ৫৫ হাজার ৮৯৬ জন। এরমধ্যে বিজ্ঞান শাখার রয়েছে ২২ হাজার ৪১৭ জন; ছাত্র ১০ হাজার ৬৩৮ জন ও ১১ হাজার ৭৭৯ জন ছাত্রী। মানবিক শাখার রয়েছে ৪৫ হাজার ১২২ জন; ১৭ হাজার ২৭৩ জন ছাত্র ও ২৭ হাজার ৮৪৯ জন ছাত্রী রয়েছে। ব্যবসায় শিক্ষা শাখার রয়েছে ৩২ হাজার ৪৯৫ জন; ১৬ হাজার ২২৮ জন ছাত্র ও ১৬ হাজার ২৬৭ জন ছাত্রী রয়েছে এবং গাহর্স্থ্য এর একজন ছাত্রী রয়েছে। গত বছর চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় ২৮৭টি কলেজের অংশ নিয়েছিল এক লাখ ৬ হাজার ৩৪ জন শিক্ষার্থী। এবারে পরীক্ষা উপলক্ষে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে চট্টগ্রাম বোর্ড কর্তৃপক্ষ।
চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১৭ তারিখ বোর্ড চেয়ারম্যান ভিজিল্যান্স টিম ও কেন্দ্র সচিবদের সাথে বৈঠক করবেন। এরপর প্রবেশপত্র বিতরণ শুরু হবে। ইতোমধ্যে সকল প্রশ্নপত্র জেলা প্রশাসকদের নিকট পৌঁছে গেছে। ১৭ তারিখের পর সেইসব প্রশ্নপত্র ইউএনও এর সাথে সমন্বয় করে সর্টিং করা হবে। কোনদিন কোন পরীক্ষা হবে এবং কোন কেন্দ্রে কতগুলো প্রশ্নপত্র যাবে সবকিছু তারা নির্ধারণ করবেন। এছাড়া ১৭ তারিখের পর কেন্দ্রে কেন্দ্রে পরীক্ষা সরঞ্জাম পাঠানো হবে। যে সকল শিক্ষার্থী প্রতিবন্ধী বা বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন তাদের ১৭ তারিখের পর থেকে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে শ্রুতি লেখকের জন্য বোর্ড কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করতে বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী ও শ্রুতি লেখকের উভয়ের প্রতিষ্ঠান প্রধানের সুপারিশ লাগবে। এছাড়া শ্রুতিলেখক শিক্ষার্থীর অভিভাবকের অনাপত্তিপত্রও লাগবে।
জানা গেছে, এবার এইচএসসি পরীক্ষায় চট্টগ্রাম মহানগরসহ পুরো চট্টগ্রাম জেলা থেকে ৭১ হাজার ৫২৩ জন শিক্ষার্থী অংশ নিবে। কক্সবাজার জেলা থেকে অংশ নিবে ১২ হাজার ৫ জন শিক্ষার্থী। রাঙামাটি জেলা থেকে অংশ নিবে ৫ হাজার ৫৫৪ জন শিক্ষার্থী। খাগড়াছড়ি জেলা থেকে অংশ নিবে ৭ হাজার ৮২ জন। বান্দরবান জেলা থেকে অংশ নিবে ৩ হাজার ৮৭১ জন শিক্ষার্থী। এবারে চট্টগ্রাম মহানগরে পরীক্ষার কেন্দ্র রয়েছে ২৭টি। চট্টগ্রামের উপজেলাগুলোতে রয়েছে ৪২টি। কক্সবাজার জেলায় রয়েছে ১৭টি, রাঙামাটি জেলায় রয়েছে ১০টি, খাগড়াছড়ি জেলায় রয়েছে ১০টি ও বান্দরবান জেলায় রয়েছে ৮টি পরীক্ষার কেন্দ্র।
পরীক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ নির্দেশাবলী : পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীদের কক্ষে আসন গ্রহণ করতে হবে। প্রথমে বহুনির্বাচনী ও পরে সৃজনশীল বা রচনামূলক (তত্ত্বীয়) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ৩০ নম্বরের বহুনির্বাচনী (এমসিকিউ) পরীক্ষার ক্ষেত্রে সময় ৩০ মিনিট এবং ৭০ নম্বরের সৃজনশীল (সিকিউ) পরীক্ষার ক্ষেত্রে সময় ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট। ব্যবহারিক বিষয়–সংবলিত পরীক্ষার ক্ষেত্রে ২৫ নম্বরের বহুনির্বাচনী পরীক্ষার ক্ষেত্রে সময় ২৫ মিনিট এবং ৫০ নম্বরের সৃজনশীল পরীক্ষার ক্ষেত্রে সময় ২ ঘণ্টা ৩৫ মিনিট। পরীক্ষা বিরতিহীনভাবে প্রশ্নপত্রে উল্লিখিত সময় পর্যন্ত চলবে।
পরীক্ষার সার্বিক প্রস্তুতি সম্পর্কে চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ইলিয়াছ উদ্দিন আহমদ আজাদীকে বলেন, ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হবে আগামী ২৬ জুন থেকে। পরীক্ষার সার্বিক প্রস্তুতি সন্তোষজনক। আমরা ইতোমধ্যে পরীক্ষার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। প্রশ্নপত্রও জেলা প্রশাসকদের নিকট পৌঁছে গেছে। পরীক্ষার সরঞ্জামও প্রস্তুত রয়েছে, সেগুলো ১৭ তারিখ কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে যাবে। পাঁচ জেলার প্রশাসকের যোগাযোগ হয়েছে। উনারা সুন্দরভাবে পরীক্ষা গ্রহণ করতে প্রস্তুত। আগামী ১৭ তারিখ পরীক্ষা সংক্রান্ত একটি বৈঠক হবে। এরপর প্রবেশপত্র বিতরণ শুরু হবে। শিক্ষার্থীরা স্ব স্ব প্রতিষ্ঠান থেকে প্রবেশপত্র গ্রহণ করবে। যেসব শিক্ষার্থীর শ্রুতি লেখক লাগবে তারা যথাযথ নিয়ম মেনে বোর্ডে আবেদন করলে আমরা সহায়তা করবো। ১৭ তারিখের পর থেকে পরীক্ষার আগ পর্যন্ত প্রবেশপত্র ও রেজিস্ট্রেশন কার্ড দিয়ে আবদেন করতে পারবে। বোর্ড চেয়ারম্যান বলেন, এইচএসসি পরীক্ষা এটা বিশাল একটা কর্মযজ্ঞ। এ কর্মযজ্ঞ সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।