এইচএসসির ‘সাম্প্রদায়িক প্রশ্ন’ অবহেলায় না ইচ্ছাকৃত, তদন্ত হচ্ছে : শিক্ষামন্ত্রী

| বৃহস্পতিবার , ১০ নভেম্বর, ২০২২ at ৯:৪১ পূর্বাহ্ণ

উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের বাংলা প্রথম পত্রের প্রশ্নপত্রে ‘সাম্প্রদায়িক উস্কানির’ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, এটি অবহেলাজনিত কারণে নাকি ইচ্ছাকৃতভাবে করা হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ধরনের ঘটনা ঠেকাতে সামনে প্রশ্নকর্তা ও মডারেটর নিয়োগে শিক্ষাবোর্ডগুলোকে আরও সতর্ক হতে বলেছেন তিনি।

গতকাল বুধবার জাতীয় জাদুঘরে এক আলোচনা সভা শেষে এটা কীভাবে হয়েছে তা দেখা দরকার জানিয়ে তিনি বলেন, সে বিষয়ে তদন্ত চলছে। অবহেলা বা ইচ্ছাকৃত-কোনোটিই ছেড়ে দেওয়ার সুযোগ নেই। খবর বিডিনিউজের। রোববার এইচএসসির প্রথম দিন ঢাকা বোর্ডের বাংলা পরীক্ষার ১১ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নে সনাতন ধর্মের দুই ভাইয়ের জমি নিয়ে বিরোধের বিষয় তুলে ধরা হয়। তাতে দেখানো হয়েছে, ছোট ভাই বিরোধের জেরে বড় ভাইকে শায়েস্তা করতে একজন মুসলিম ব্যক্তির কাছে জমির একাংশ বিক্রি করে দেন। জমি কেনা ব্যক্তি সেই জমিতে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন এবং কোরবানির ঈদে সেখানে গরু কোরবানি দেন।

এতে জমি বিক্রেতা ভাইয়ের মন ভেঙে যায়, তিনি জমি-জমা সব ফেলে সপরিবারে ভারতে চলে যান। বিষয়টি নিয়ে পরীক্ষার পরই আলোচনা শুরু হয়। সরকার যেখানে অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে গুরুত্ব দিচ্ছে, এই প্রশ্ন তার সঙ্গে কতটা সঙ্গতিপূর্ণ, সেই প্রশ্ন ওঠে। পরে ‘বিতর্কিত প্রশ্ন’ তৈরির সঙ্গে জড়িত যশোর শিক্ষা বোর্ডের প্রশ্নকর্তা ও চার মডারেটরকে চিহ্নিত করে ঢাকা বোর্ড। এ বিষয়ে সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে তিন সদস্যের কমিটিকে নির্দেশ দিয়েছে যশোর বোর্ড।

শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, তদন্ত প্রতিবেদন দেখে পাঁচ শিক্ষকের বিরুদ্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া যায়, সে বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। প্রশ্নকর্তা ও মডারেটরদের প্রশিক্ষণ ও নির্দেশিকা দেওয়া হয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, তারপরও কেউ যদি এটা করেন, সেটা চরম অবহেলা অথবা ইচ্ছাকৃত। প্রশ্নকর্তা ও মডারেটর হিসেবে আমরা কাদের দায়িত্ব দিচ্ছি, সেটা দেওয়ার ক্ষেত্রে আরও বেশি সতর্ক হতে হবে। সব শিক্ষাবোর্ডকে আরও সতর্ক হতে হবে।

মঙ্গলবার ঢাকা শিক্ষাবোর্ড থেকে জানানো হয়, বাংলা প্রথমপত্রের প্রশ্নপত্রটি প্রণয়ন করেছেন ঝিনাইদহের মহেশপুরের ডা. সাইফুল ইসলাম ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক প্রশান্ত কুমার পাল। সেটি মডারেট করেন নড়াইলের সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের সহযোগী অধ্যাপক সৈয়দ তাজউদ্দিন শাওন, সাতক্ষীরা সরকারি মহিলা কলেজের সহযোগী অধ্যাপক শফিকুর রহমান, নড়াইলের মির্জাপুর ইউনাইটেড কলেজের সহকারী অধ্যাপক শ্যামল কুমার ঘোষ ও কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা আদর্শ কলেজের সহকারী অধ্যাপক রেজাউল করিম।

অভিযোগের মুখে থাকা প্রশ্নপত্রের মডারেটর সৈয়দ তাজউদ্দিন শাওন বলেন, এ ধরনের প্রশ্ন থাকলে তা সংশোধন করে দেওয়া হয়, অথবা কেটে নতুন প্রশ্ন সংযোজন করা হয়। কিন্তু কীভাবে প্রশ্নটি রয়ে গেল তা তিনি বুঝতে পারছেন না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধফেনীতে বাস-কভার্ড ভ্যান সংঘর্ষে নিহত ৪
পরবর্তী নিবন্ধসরকারের লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে ৪০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি