চীনের পর ভারতেও ইনফ্লুয়েঞ্জার লক্ষণযুক্ত হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাসে (এইচএমপিভি) আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া গেছে। তবে বাংলাদেশে এ ভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। এ ভাইরাসে সাধারণত শ্বাসতন্ত্র আক্রান্ত হয়। আক্রান্ত ব্যক্তির ঠাণ্ডা, সর্দিকাশি, জ্বর, শ্বাসকষ্ট, র্যাশ ওঠার মত লক্ষণ দেখা যায়। উপসর্গ মৃদু। তবে শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে নিউমোনিয়ার মত মারাত্মক জটিলতা তৈরি করতে পারে।
ভারতে এ ভাইরাসে প্রথম আট মাসের এক শিশুর আক্রান্তের খবরে বাংলাদেশে ঝুঁকির প্রবণতা নিয়ে জানতে চাওয়া হয় জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, আইইডিসিআরের উপদেষ্টা মুশতাক হোসেনের কাছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশেও এই ভাইরাসটি ছিল, আছে। ফলে এ নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই। আক্রান্ত হলে লক্ষণ ইনফ্লুয়েঞ্জার মত। এই রোগ বাংলাদেশে ছিল। পৃথিবীর সব দেশেই আছে, এটা নতুন না। সতর্ক থাকা উচিত, কিন্তু শুধু শুধু আতঙ্কিত হওয়ার দরকার নাই। চীনের হাসপাতালের জরুরি বিভাগে অনেক রোগী আসছে, তাই তারা জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। এটা তাদের দেশের নিয়ম। খবর বিডিনিউজের।
এইচএমপি ভাইরাস ‘প্রাণঘাতী রোগ নয়’ জানিয়ে ডা. মুশতাক বলেন, যারা নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত, তাদের জন্য এটি প্রাণঘাতী হতে পারে। কারও যদি আগে থেকে কোমর্বিডিটি থাকে, তাহলে যে কোনো রোগই তার জন্য প্রাণঘাতী হতে পারে। এই ভাইরাসে বাচ্চা ও বয়স্করা বেশি ঝুঁকিতে থাকে। ইনফ্লুয়েঞ্জার যেমন ঝুঁকি, এই রোগেরও তেমন ঝুঁকি। ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে দূরে থাকতে হাত ধোয়া, মাস্ক পরা, জ্বর ও সর্দিকাশি আছে এমন ব্যক্তি থেকে দূরে থাকা, জটিল রোগী হলে সরাসরি চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন এই বিশেষজ্ঞ।
এবারের শীত চীনের উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি) ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে শিশুরা এ ভাইরাসে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে সতর্কতা জারি করেছে চীন। চীনের পর ভারতেও এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বিষয়টি নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন থাকার পরামর্শ দিয়েছে ভারত সরকারও।
বাংলাদেশের বিষয়ে আইইডিসিআরের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মুশতাক বলেন, একটা জিনিস স্বাস্থ্য বিভাগ করতে পারে, সেটা হল ইনফ্লুয়েঞ্জা সার্ভিলেন্সের সঙ্গে এইচএমপি ভাইরাসকেও সার্ভিলেন্স করতে হবে। সার্ভিলেন্সের মধ্যে নিয়ে আসলে এই ভাইরাসের জেনোম সিকোয়েন্স করা হবে। ভাইরাস পরিবর্তিত হচ্ছে কিনা, আরও মারাত্মক হচ্ছে কিনা তা বোঝা যাবে।