ভবিষ্যতে শীর্ষে থাকা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির কোম্পানিগুলো ব্যবহারকারীদের নির্দিষ্ট কিছু কাজ করে দেওয়ার উপযোগী করে ‘ব্যক্তিগত ডিজিটাল সহকারী’ বানাবে… এমনটাই বিশ্বাস মাইক্রোসফটের সহ–প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটসের। এমন প্রযুক্তি এলে তা এতটাই সুদূরপ্রসারী হবে যে ব্যবহারকারীর স্বভাবকে পর্যন্ত পাল্টে দিতে পারে। যারা পার্সোনাল এজেন্ট তৈরিতে এগিয়ে থাকবে তারাই সবকিছু বদলে দেবে। এরপর আর কারো সার্চ ইঞ্জিনে যাওয়ার দরকার হবে না, অ্যামাজনের মতো সাইটও কারো দরকার পড়বে না। বলেন গেটস। একজন ব্যবহারকারীর চাহিদা ও অভ্যাসগুলো বুঝে সেগুলো পূরণ করতে সাহায্য করবে ‘কল্পিত’ এই ডিজিটাল খানসামা। আপনার হয়ে দরকারি কাগজপত্রও পড়ে দেবে। খবর বিডিনিউজের।
সোমবার স্যান ফ্রান্সিসকোতে গোল্ডম্যান স্যাকস ও এসভি অ্যানজেল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে আয়োজন করে একটি সভা। সেখানেই এমন বক্তব্য দেন ৮০ ও ৯০–এর দশকে পার্সোনাল কম্পিউটারে বিপ্লব আনা গেটস। ছোট উদ্যোক্তারা নাকি শীর্ষ কোম্পানিগুলো, কারা এগিয়ে থাকবে সেই দৌড়ে – এই প্রসঙ্গে গেটস বলেন, সম্ভবনার পাল্লা দুইদিকেই সমান সমান।
মাইক্রোসফট যদি এই প্রযুক্তি নিয়ে এগিয়ে না থাকতে পারে তাহলে আমি হতাশ হব। এর সঙ্গে তিনি আরও বলেন, তবে ইনফ্ল্যাকশনের মতো কিছু নতুন সার্ট–আপের কাজ দেখে আমি মুগ্ধ। সাবেক ‘ডিপমাইন্ড কর্মকর্তা ও ইনফ্ল্যাকশন ডটএআই–এর সহ–প্রতিষ্ঠাতা মুস্তাফা সুলেইমানকে ইঙ্গিত করে বলেন তিনি।
সবাই ব্যবহার করতে পারবে এমন একটি কার্যকর ডিজিটাল সহকারী বাজারে আসতে এখনো অনেকটা দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হবে…এমন ভবিষ্যদ্বাণী করে গেটস যোগ করেন, তার আগ পর্যন্ত কোম্পানিগুলো তাদের সেবায় চ্যাটজিপিটির মতো জেনারেটিভ এআই প্রযুক্তি যোগ করার চেষ্টা চালিয়ে যাবে।
স্বাস্থ্য প্রযুক্তি নিয়ে বিল ও মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের চলমান কার্যক্রম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এআই স্বাস্থ্য খাতে নিত্যনতুন উদ্ভাবন আনবে এবং ঔষধ শিল্পেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি আসবে।
যদিও মানুষের মস্তিস্ক কীভাবে কাজ করে তার প্রায় সবটাই মানুষের এখনো অজানা, তারপরেও মাইক্রোসফট কারিগর গেটস বিশ্বাস করেন মানুষের স্মৃতিবিভ্রম ঘটনো আলঝেইমারের মতো অনেক রোগের ওষুধের খুবই কাছাকছি পৌঁছে গেছে মানবজাতি। আগামী ১০ বছরের মধ্যেই মানুষের শরীরে সেসব ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখা হবে, তার এমন আশাবাদ প্রকাশিত হয়েছে বার্তা সংস্থা সিএনবিসির খবরে।
জেনারেটিভ এআইয়ের বিকাশে বদলে যাবে উচ্চতর দক্ষতাসম্পন্ন পেশাগুলোর চিত্র, সঙ্গে গেটস আরো ইঙ্গিত করেন, ভবিষ্যতে মানুষের মতো দেখতে রোবটের শ্রমের দাম মানুষের শ্রমের দামের চেয়ে কমে যাবে, এতে প্রভাব পড়বে শ্রমনির্ভর পেশাগুলোতেও। আমরা যখন সেসব রোবট কাজে লাগাব, আমাদের কেবল মাথায় রাখাতে হবে সেগুলো যেন আলঝেইমারে আক্রান্ত না হয়। রসিকতা করে বলেন গেটস। এর আগে ওপেনএআইয়ের চ্যাটজিপিটিকে গেটস বলেছিলেন ১৯৮০ সালের পর প্রযুক্তির সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ অগ্রগতি।