প্রকৃতির আঘাতে বান্দরবানে লন্ডভন্ড সাতটি উপজেলার হাজার হাজার একর ফসলি জমি। শুধুমাত্র কৃষিতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৩শ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে দাবি কৃষি বিভাগসহ কৃষকের। ঋণের কিস্তি পরিশোধের দুশ্চিন্তায় দিশেহারা কৃষকেরা।
কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে অনেকটা। কিন্তু কৃষকের ক্ষতির চিহ্নগুলো ভেসে উঠছে জেলার সাতটি উপজেলায়। তারমধ্যে বান্দরবান সদর, লামা, আলীকদম, রুমা, রোয়াংছড়ি, থানচি উপজেলায় বন্যায় কলা, পেপেসহ বিভিন্ন ফলের ২ হাজার ৭শ ৭১ হেক্টর জায়গায় আবাদকৃত বাগান পুরোটা নষ্ট হয়ে গেছে। ২ হাজার ৩শ ২৭ হেক্টর জমিতে লাগানো বেগুন, শষা, কাকরোল, বরবটিসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়াও আউশ, আমন, রোপা আমনসহ নষ্ট হয়ে গেছে ৪ হাজার ৭শ ৫৭ হেক্টর জমির বীজ ধান। দুর্গম পাহাড়ের প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতে জুম চাষের ক্ষতি হয়েছে কয়েক হাজার একর। জমিতে চাষের জন্য সরকারি–বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা থেকে ঋণ নেয় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা। বন্যায় চাষের জমির সব ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ঋণের টাকা পরিশোধ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে দিশেহারা কৃষকরা।
গোয়ালিখোলার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক হ্লাচিংনু মারমা, জামালসহ অনেকে বলেন, বন্যায় সব শেষ হয়ে গেছে। বীজ ধান এবং সবজি সবকিছুই লন্ডভন্ড হয়ে গেছে বন্যার তাণ্ডবে। জেলার শস্য ভান্ডার হিসেবে পরিচিত গোয়ালিখোলার জমিগুলোতে সব ধ্বংসের চিহ্ন। এনজিও সংস্থা এবং ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে জমিতে ফসলের চাষ করেছিলাম। ঋণের কিস্তি কিভাবে শোধ করব, পরিবার কিভাবে চালাব, কিছুই বুঝতে পারছি না। সরকারের কাছে আমরা সহযোগিতা চাই।
এ বিষয়ে বান্দরবান জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ–পরিচালক কৃষিবিদ এম এম শাহনেওয়াজ জানান, বান্দরবান জেলায় অতিবৃষ্টিতে পাহাড় ধস ও বন্যায় ৯ হাজার ৮শ ৫৫ হেক্টর ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ৩শ ১০ কোটি টাকা। ক্ষতি পোষাতে কৃষকদের বিনামূল্য বীজ, সার সরবরাহ এবং প্রণোদনার ব্যবস্থা করা হবে।