উৎসব ফিরছে স্কুলে-স্কুলে

প্রাথমিকের ৬৯ ভাগ বই পৌঁছে গেছে চট্টগ্রামে একটিও আসেনি প্রাক-প্রাথমিকের

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ২৩ ডিসেম্বর, ২০২১ at ৬:১৮ পূর্বাহ্ণ

শেষ হচ্ছে আরেকটি শিক্ষাবর্ষ। আর ক’দিন পরই নতুন বছর। নতুন বছর মানেই নতুন ক্লাস, আর নতুন বইয়ের উৎসব। নতুন বইয়ের ঘ্রাণে শিক্ষার্থীদের বাঁধভাঙ্গা উচ্ছ্বাস। উৎসব আমেজে নতুন বই হাতে পাওয়ার লোভে বছরের প্রথম দিনটির জন্য অপেক্ষায় থাকে সারাদেশের কয়েক কোটি শিক্ষার্থী। তবে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি সব যেন এলোমেলো করে দেয় গতবছর। ব্যতিক্রম হিসেবে গতবারই বই উৎসব হয়নি দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে। উৎসব না করে বিকল্প উপায়ে বই পৌঁছে দেয়া হয় শিক্ষার্থীদের হাতে। তবে বই বিতরণে স্কুলে-স্কুলে পুনরায় উৎসব ফিরছে এবার। যদিও এখনো পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক ভাবে এ সিদ্ধান্ত জানা যায়নি। তবে লিখিত নির্দেশনা জারি না করলেও উৎসবের মাধ্যমে বই বিতরণে এরইমধ্যে মৌখিক নির্দেশনা দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রামের জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম। গতকাল তিনি আজাদীকে বলেন, প্রাথমিকের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে উৎসবের মাধ্যমেই বই বিতরণের মৌখিক ভাবে নির্দেশনা পাওয়া গেছে। তবে কয়েকদিনের মধ্যেই এ সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিক নির্দেশনা আসতে পারে। আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। উৎসবের মাধ্যমেই শিক্ষার্থীদের হাতে আমরা বই তুলে দেব।
অবশ্য, মাধ্যমিক পর্যায়ে বই উৎসবের বিষয়ে নিশ্চিত তথ্য দিতে পারেন নি চট্টগ্রামের জেলা শিক্ষা অফিসার জিয়াউল হায়দার হেনরী। তিনি বলেন, বই উৎসবের বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে আমরা এখনো পর্যন্ত নির্দেশনা পাইনি। যদিও আমাদের উৎসবের প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে বলা হয়েছে।
এদিকে, জেলার প্রাথমিকের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে এরই মধ্যে চাহিদার ৬৯ শতাংশ বই পৌঁছে গেছে বলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় জানিয়েছে। তবে প্রাক-প্রাথমিকের একটি বইও এখনো পর্যন্ত আসেনি চট্টগ্রামে। ‘আমার বই’ নামে একটি বই পেয়ে থাকে প্রাক-প্রাথমিকের খুদে শিক্ষার্থীরা। যার একটিও এখনো পর্যন্ত পৌঁছেনি। অবশ্য, ৩০ ডিসেম্বরের আগেই সব বই পাওয়া যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের ২০২০ সালের তথ্য অনুযায়ী, মহানগরীর ৬টি থানা ও ১৫টি উপজেলাসহ চট্টগ্রাম জেলায় প্রাথমিক পর্যায়ের মোট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৪ হাজার ৩৬৪টি। এর মধ্যে জাতীয়করণকৃতসহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ২ হাজার ২৬৯টি, বেসরকারি কিন্ডার গার্টেন (কেজি স্কুল) ১ হাজার ৭০৭টি, এনজিও স্কুল ১১৮টি, উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন ১২৭টি, রঙ (আনন্দ স্কুল) ৩০টি, আন রেজিস্ট্রার্ড স্কুল ১০টি এবং পরীক্ষণ স্কুল ২টি। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১০ লাখের বেশি।
এসব শিক্ষার্থীর জন্য ২০২২ সালের সম্ভাব্য চাহিদার ভিত্তিতে বরাদ্দকৃত মোট বইয়ের সংখ্যা ৪৬ লাখ ৮ হাজার ৪৯২টি। এর মধ্যে সোমবার (২০ ডিসেম্বর) পর্যন্ত ৩১ লাখ ৭৩ হাজার ৪১৭টি বই থানা-উপজেলার গোডাউনে পৌঁছে গেছে। যা মোট চাহিদার প্রায় ৬৯ ভাগ। এর বাইরে প্রাক-প্রাথমিক পর্যায়ের ১ লাখ ৬৩ হাজার ১৯ জন শিক্ষার্থীর জন্য একটি করে বইয়ের চাহিদা রয়েছে চট্টগ্রাম জেলায়। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ের মনিটরিং অফিসার নূর মোহাম্মদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। অবশ্য প্রাক-প্রাথমিকের একটি বইও এখনো পর্যন্ত পৌঁছেনি চট্টগ্রামে। ডিসেম্বরের মধ্যে পাওয়া যায় কী না, তা নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে। যদিও ডিসেম্বরের মধ্যেই সব বই পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম। অবশ্য, বই পাওয়া না গেলেও প্রাক-প্রাথমিকের একটি করে অনুশীলন খাতার শতভাগ পৌঁছে গেছে বলে জানান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধযাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা, আহত ১৫
পরবর্তী নিবন্ধএকুশের প্রথম কবিতার জনক মাহবুব উল আলম চৌধুরীর ১৪ তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ