উৎসব নয়, বিকল্প উপায়ে শিক্ষার্থীর হাতে যাবে প্রাথমিকের বই

চট্টগ্রামে পৌঁছে গেছে চাহিদার ৩১ শতাংশ

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ৪ ডিসেম্বর, ২০২০ at ৫:৪৯ পূর্বাহ্ণ

শেষ হচ্ছে আরেকটি শিক্ষাবর্ষ। আর ক’দিন পরই নতুন বছর। নতুন বছর মানেই নতুন ক্লাস, আর নতুন বইয়ের উৎসব। নতুন বইয়ের ঘ্রানে শিক্ষার্থীদের বাঁধভাঙ্গা উচ্ছ্বাস। উৎসব আমেজে নতুন বই হাতে পাওয়ার লোভে বছরের প্রথম দিনটির জন্য অপেক্ষায় থাকে সারাদেশের কয়েক কোটি শিক্ষার্থী। তবে এবার সব কিছুই যেন ব্যতিক্রম। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস এলোমেলো করে দিয়েছে সব। নতুন বইয়ের অপেক্ষা থাকলেও উৎসবের আমেজ থাকছেনা এবার। কারণ, বই উৎসব না করে বিকল্প উপায়ে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
যদিও বিকল্প কোন উপায়ে শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁেছ দেয়া হবে, তা এখনো নির্ধারণ হয়নি বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম। তিনি আজাদীকে বলেন, এবার বই উৎসব হচ্ছেনা। উৎসব করতে গেলে শিক্ষার্থীদের সমাবেশ বা জড়ো করতে হবে। এই অতিমারি কালে যা চরম ঝুঁকি তৈরি করবে। যার কারণে উৎসব না করে বিকল্প উপায়ে শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছে দেয়ার নির্দেশনা রয়েছে। তবে কোন পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছে দেয়া হবে, তা এখনো নির্ধারিত হয়নি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর তা চূড়ান্ত করবে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছানোর ব্যবস্থা নেবো। এতে উৎসবের আমেজ বঞ্চিত হলেও শিক্ষার্থীরা নিরাপদ থাকবে বলেও মনে করেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা।
এদিকে, চট্টগ্রাম জেলার স্কুলগুলোতে এরই মধ্যে চাহিদার ৩১ শতাংশ বই পৌঁছে গেছে বলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, মহানগরীর ৬টি থানা ও ১৪টি উপজেলাসহ চট্টগ্রাম জেলায় প্রাথমিক পর্যায়ের মোট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৪ হাজার ৩৬৪টি। এর মধ্যে জাতীয়করণকৃতসহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ২ হাজার ২৬৯টি, বেসরকারি কিন্ডার গার্টেন (কেজি স্কুল) ১ হাজার ৭০৭টি, এনজিও স্কুল ১১৮টি, উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন ১২৭টি, রক্স (আনন্দ স্কুল) ৩০টি, আন রেজিস্ট্রার্ড স্কুল ১০টি এবং পরীক্ষণ স্কুল ২টি।
এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রথম শ্রেণিতে ২ লাখ ৪ হাজার ১৫১ জন, ২য় শ্রেণিতে ২ লাখ ২ হাজার ৭৬৫ জন, ৩য় শ্রেণিতে ২ লাখ ৫ হাজার ৩৩৭ জন, ৪র্থ শ্রেণিতে ২ লাখ ৪ হাজার ১৬৪ এবং ৫ম শ্রেণিতে ১ লাখ ৮৯ হাজার ৩১২ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। সবমিলিয়ে জেলার ৪ হাজার ৩৬৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১০ লাখ ৫ হাজার ৭২৯ জন। এসব শিক্ষার্থীর জন্য ২০২১ সালের প্রাথমিকের মোট বইয়ের সম্ভাব্য চাহিদা ছিল ৪৫ লাখ ৯৮ হাজার ১৩৯টি। এর মধ্যে গতকাল (৩ ডিসেম্বর) পর্যন্ত ১৪ লাখ ৪৫ হাজার ৮৯৮টি বই থানা-উপজেলার গোডাউনে পৌঁছে গেছে। যা মোট চাহিদার ৩১ ভাগ। এছাড়া প্রাক-প্রাথমিক পর্যায়ের ১ লাখ ৬১ হাজার ৭১৪ জন শিক্ষার্থীর জন্য একটি করে বইয়ের চাহিদা রয়েছে চট্টগ্রাম জেলায়। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ের মনিটরিং অফিসার নূর মোহাম্মদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উৎসব না হলেও বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছানোর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে জানিয়ে ডিসেম্বরের মধ্যেই শতভাগ বই স্কুলে স্কুলে পৌঁছে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের খরচ বাড়ছে ৪শ’ কোটি টাকা
পরবর্তী নিবন্ধনানিয়ারচরে ইউপিডিএফের চাঁদা কালেক্টর নিহত