জেলা প্রশাসক ফরিদা বেগম বলেছেন, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও চট্টগ্রামে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য, উৎসবমুখর, অত্যন্ত সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রেখে আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা সম্পন্ন করা হবে। অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার এ বিষয়টিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছেন। আগামী ২ অক্টোবর শুভ মহালয়া ও ৮–১২ অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে দুর্গাপূজার পঞ্চমীর বোধন ও মহাষষ্ঠী থেকে বিজয়া দশমী অনুষ্ঠিত হবে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ পূজা সম্পন্ন করতে ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। যেখানে যেখানে মণ্ডপ তৈরি হবে সেখানে অবশ্যই সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে। প্রতিমা তৈরি থেকে শুরু করে পূজা শেষ না হওয়া পর্যন্ত সার্বিক নিরাপত্তায় পুলিশ নিয়োজিত থাকবে। প্রত্যেক পূজা মণ্ডপে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেব আনসার সদস্য নিয়োজিত থাকবে। সেনাবাহিনী, পুলিশ ও বিজিবি পূজা মণ্ডপের নিরাপত্তায় টহল দেবে। নারী–পুরুষ যাতে সুশৃঙ্খলভাবে পূজা মণ্ডপে যাতায়াত করতে পারে সে বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে। আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত প্রস্তুতিমূলক সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জেলা প্রশাসক বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় পূজা চলাকালীন শুধুমাত্র আযান ও নামাজের সময় উচ্চস্বরে বাদ্যযন্ত্র বাজানো থেকে বিরত থাকতে হবে। নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে আমরা সর্বজনীন দুর্গাপূজা উদযাপন করতে চাই। এ জন্য সকলের সার্বিক সহযোগিতা প্রয়োজন। পূজা কমিটির তালিকা মতে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ পূজা মন্ডপগুলোতে নিরাপত্তায় বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হবে। পূজা মন্ডপের আশপাশে পূজার সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের সাথে ছাত্র সমন্বয়কেরা মাঠে থাকবে। দুর্গাপূজাকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে কেউ যাতে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে সে বিষয়ে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী আইন–শৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অবস্থানে থাকবে। প্রত্যেক পূজা মণ্ডপে সরকার প্রদত্ত উপহার সামগ্রী (ভোগ্যপণ্য) যথাসময়ে পৌঁছে দেয়া হবে।
সভায় জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) রায়হান উদ্দিন খান বলেন, অত্যন্ত সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর পরিবেশে আসন্ন সর্বজনীন শারদীয় দুর্গাপূজা সম্পন্ন করতে পুলিশের পক্ষ থেকে যা–ই করা প্রয়োজন তা–ই করা হবে। পূজা মণ্ডপ ও পূজায় আগত দর্শনার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রত্যেক থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ও পূজা কমিটির নেতৃবৃন্দ ও সংশ্লিষ্টদের নিয়ে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। অধিক ঝুঁকিপূর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ পূজা মণ্ডপগুলোকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে রাখা হবে। পূজা চলাকালীন লোডশেডিং না দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ ঠিক রাখার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন মহানগর ও জেলা পূজা কমিটির নেতৃবৃন্দ।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সাদি–উর রহিম জাদিদ জানান, চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলায় এবার ২ হাজার ৪৫৮টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তন্মধ্যে মহানগরে ২৯৩টি ও জেলার ১৫ উপজেলায় ২ হাজার ১৬৫টি। জেলা প্রশাসক ফরিদা খানমের সভাপতিত্বে ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সাদি–উর রহিম জাদিদের সঞ্চালনায় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন, পুলিশ সুপার (এসপি) রায়হান উদ্দিন খান, এনএসআই’র যুগ্ম পরিচালক শাহ সুফি নুর আলম সরকার, সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভশনের ক্যাপ্টেন ফায়িজ, বিজিবির সহকারী পরিচালক মফিজুল ইসলাম, ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মো. ওয়াজেদ চৌধুরী অভি, আনসার ভিডিপির জেলা কমান্ড্যান্ট ফরিদা পারভীন সুলতানা, সিএমপির অতিরিক্ত উপ–পুলিশ কমিশনার (অপস্) বাবুল চন্দ্র বণিক, র্যাবের এএসপি মো. নাসির উদ্দিন, কোস্টগার্ড প্রতিনিধি লে. কর্নেল মোসাব্বির, নৌবাহিনী প্রতিনিধি লে. সিফাত রাব্বি আশরাফ চৌধুরী, মহানগর, জেলা ও ১৫ উপজেলা পূজা কমিটির পক্ষে লায়ন আশীষ কুমার ভট্টাচার্য, রত্নাকর দাশ টুনু, অ্যাডভোকেট নিতাই প্রসাদ ঘোষ, নটু কুমার ঘোষ, রুবেল দেব, স্বপন শীল, রাজীব চক্রবর্তী, রনজিত কুমার শীল, প্রণব দাশ, রিটন দাশ, রাজীব কুমার ধর, গৌতম শংকর ধর, বিষ্ণু শেখর চক্রবর্তী, রিমন মুহুরী, অলক কুমার দে, সাগর মিত্র, রূপন চৌধুরী, নিখিল চন্দ্র দে, মাধাই চন্দ্র নাথ, ডা.সন্তোষ কুমার শীল, রিতেন কুমার সাহা, লিংকন চক্রবর্তী, সন্তোষ কুমার শীল, মাস্টার মধাব চন্দ্র দাশ, অরুণ পালিত, অমলেন্দু সেন, অনির্বাণ চৌধুরী, রাজীব, মোহন দে প্রমুখ। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।