বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এমপি বলেছেন, বঙ্গবন্ধু চা বোর্ডের চেয়াম্যানের দায়িত্ব নিয়ে চা শিল্পের ব্যাপক উন্নয়ন এবং চা শ্রমিকদের কল্যাণে অনেক কাজ করেছিলেন। এরই ধারাবাহিকতার বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে চা উৎপাদন বৃদ্ধির নির্দেশনা দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ১৯৯৬ সালে দেশের উত্তরাঞ্চলের পঞ্চগড়ে চা উৎপাদন শুরু হয়েছে। সেখানে চা উৎপাদনের বিপুল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, সেখানে চা উৎপাদন করে চাষীগণ লাভবান হচ্ছেন। ঠাকুরগাঁও ও লালমনির হাটেও চা উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখানে সমতল ভূমিতেও চা উৎপাদন হচ্ছে এবং দিন দিন চা উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, চা বাংলাদেশের একটি সম্ভাবনাময় রপ্তানি পণ্য। নতুন চাত উদ্ভাবন করে চায়ের উৎপাদন বৃদ্ধি করা হচ্ছে। দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদাও দিন দিন বাড়ছে। প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে দেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা আগের যে কোন সময়ের তুলনায় বেড়েছে, এখন গ্রামের মানুষও নিয়মিত চা পান করেন। চায়ের উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সরকার বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বিদেশে বাংলাদেশের চায়ের বিপুল চাহিদা রয়েছে। চায়ের উৎপাদন বাড়িয়ে অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব।
বাণিজ্যমন্ত্রী গতকাল শুক্রবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং বাংলাদেশ চা বোর্ডের উদ্যোগে ঢাকায় ওসমানী মিলনায়তনে প্রথম জাতীয় চা দিবসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমেদ এমপি বলেন, চাহিদা বৃদ্ধির সাথে সাথে দেশে চায়ের উৎপাদনও অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকার দেশে চায়ের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা প্রদান করছে। চা শিল্পে নিয়োজিত শ্রমিকরা অনেক সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন। দেশে চায়ের উৎপাদন বৃদ্ধির আরও সুযোগ রয়েছে। চা শিল্পের উদ্যোক্তাদের সাথে মতবিনিময় করে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করলে চা উৎপাদন বাড়বে। এতে করে চা শিল্প আরও বিকশিত হবে।
সভার আগে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাণিজ্যমন্ত্রী বেলুন উড়িয়ে এবং ফিতা কেটে প্রথম জাতীয় চা দিবসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। পরে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথি চা প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন। এ সময় ‘বঙ্গবন্ধু ও চা শিল্প’ শীর্ষক লেজার শো প্রদর্শন করা হয়। বাণিজ্যমন্ত্রী চায়ের উন্নতজাতের ক্লোন বিটি-২২ ও বিটি-২৩ আনুষ্ঠানিকভাবে অবমুক্ত করেন।
বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অপর বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন, সদ্য পিআরএল-এ যাওয়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন। স্বাগত বক্তব্য দেন, বাংলাদেশ টি বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. জহিরুল ইসলাম। বক্তব্য দেন, এফবিসিসিআইর প্রেসিডেন্ট মো. জসিম উদ্দিন, বাংলাদেশীয় চা সংসদের সভাপতি এম শাহ আলম, টি ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশের সভাপতি শাহ মঈন উদ্দীন হাসান।
ক্লোন বিটি ২৩’র চারা গ্রহণ করলেন ইস্পাহানির সালমান ইস্পাহানি : প্রথম জাতীয় চা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উন্মোচিত হয়েছে বাংলাদেশে উদ্ভাবিত উন্নত মানের চায়ের চারা বিটি ২২ ও বিটি ২৩। এ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় চা বাগান মালিক ও চা বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান ইস্পাহানি টি লিমিটেডের চেয়ারম্যান সালমান ইস্পাহানি বাণিজ্য মন্ত্রীর হাত থেকে বিটি-২৩ জাতের চা গাছের চারা গ্রহণ করেন। বিটি-২৩ হচ্ছে উন্নত মানের চা গাছের জাত, যা বাংলাদেশের চা গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিটিআরআইর উদ্ভাবিত। ভবিষ্যতে বাংলাদেশের চা বাগানগুলোতে আরো উন্নত মানের চা উৎপাদনের প্রসার ঘটাতে এ চায়ের জাত উদ্ভাবিত হয়। বাংলাদেশের চা শিল্পে ইস্পাহানির অবদানের স্বীকৃতি ও ইস্পাহানির চা বাগানগুলোতে এ গাছের চাষের মাধ্যমে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের চায়ের মানকে আরো উন্নত করতে ইস্পাহানিকে এ গাছের চারা উপহার দেয়া হয়। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।