উপমহাদেশের প্রথিতযশা ইতিহাসবিদ ড. আবদুল করিম

কানিজ ফাতেমা | বৃহস্পতিবার , ২৪ জুলাই, ২০২৫ at ৫:০৭ পূর্বাহ্ণ

ঔপনিবেশিকতার প্রভাবে মানুষের যখন আত্মপ্রত্যয়ের অভাব ঘটেছিল তখন যেসব ঐতিহাসিকগণ প্রমাণ করেছিলেন যে ভারত উপমহাদেশে প্রাক্‌-ঔপনিবেশিক যুগ তথা মধ্যযুগও স্বর্ণময়, তাঁদের মধ্যে প্রফেসর ড. আবদুল করিম অন্যতম। তিনি আরবি ও ফারসি ভাষায় দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে মধ্যযুগের মূল উৎস অনুসন্ধান করে মধ্যযুগের বাংলার ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করেছেন। এছাড়াও ড. করিম মুদ্রা ও শিলালিপি নিয়ে গবেষণার মাধ্যমে মৌলিক অবদান রাখার পাশাপাশি মধ্যযুগের বাংলার ইতিহাসের নতুন নতুন গবেষণার ক্ষেত্রও উন্মুক্ত করেছেন। ইতিহাসের গবেষণায়, চর্চায়, সাধনায় প্রত্যেকটা মূল্যবান সময়কে কাজে লাগিয়েছেন। তাঁর অজস্র মৌলিক গ্রন্থরাজি মধ্যযুগের ইতিহাসের আকর হয়ে আছে। তাই তিনি মধ্যযুগের বাংলার ইতিহাসচর্চার প্রবাদপুরুষ।

জন্ম ১ জুন, ১৯২৮। পিতা সৈয়দ ওয়াইজ উদ্দিন। মাতা সৈয়দা রাশিদা খাতুন। শৈশব ও কৈশোর কেটেছে চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলার চাঁপাছড়ি গ্রামে। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার ছোট। শিক্ষার হাতেখড়ি মৌলভী মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান চৌধুরীর নিকট। এরপর তিনি চাঁপাছড়ি ও বাহারছড়া গ্রামে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপন করেন এবং বৈলছড়ি জুনিয়র মাদ্রাসা থেকে ষষ্ঠ শ্রেণি পাশ করে ১৯৪০ সালে চট্টগ্রাম ইসলামিক ইন্টারমিডিয়েট কলেজে (বর্তমান সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ) সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হন। এ কলেজ থেকে ১৯৪৪ সালে হাই মাদ্রাসা পরীক্ষায় মেধা তালিকায় ২য় স্থান এবং ১৯৪৬ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৮ম স্থান অধিকার করে উচ্চ শিক্ষার আশায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ভর্তি হন। তিনি ১৯৪৯ সালে কৃতিত্বের সাথে স্নাতক (সম্মান) এবং ১৯৫০ সালে স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করার গৌরব অর্জন করেন।

প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাজীবন শেষ করে আবদুল করিম বর্তমান নারায়নগঞ্জ জেলার মুড়াপাড়া ভিক্টোরিয়া কলেজে কিছুদিন শিক্ষকতা করেন। ১৯৫১ সালের শেষের দিকে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে প্রভাষক পদে যোগদান করেন। তৎকালীন বিভাগীয় প্রধান ইতিহাসবিদ আবদুল হালিম এর অনুপ্রেরণা ও পরামর্শে বিশিষ্ট প্রত্নতত্ত্ববিদ ও ইতিহাসবিদ আহমদ হাসান দানীর তত্ত্বাবধানে আবদুল করিম গবেষণা-কর্মে মনোনিবেশ করেন। ফলশ্রুতিতে ১৯৫৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে “Social History of the Muslims in Bengal Down To A.D. 1538” শীর্ষক অভিসন্দর্ভ রচনা করে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ১৯৬০-’৬২ সালে ইতিহাসবিদ জে. বি. হ্যারিসনের তত্ত্বাবধানে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন School of Oriental and African Studies থেকে “Murshid Quli Khan and His Times ” শিরোনামে অভিসন্দর্ভ রচনা করে স্বল্প সময়ে দ্বিতীয়বার পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৬৬ সালে নব প্রতিষ্ঠিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ড. করিম ইতিহাস বিভাগে রিডার ও বিভাগীয় প্রধান হিসেবে যোগদান করেন।

প্রফেসর ড. আবদুল করিমের গবেষণা ও প্রকাশনা-কর্ম বিশাল। তাঁর প্রকাশিত ইংরেজি গ্রন্থের সংখ্যা ১০টি, বাংলা গ্রন্থের সংখ্যা ২৪টি, প্রকাশিত ইংরেজি প্রবন্ধ ৭২টি, বাংলাপিডিয়ায় লিখিত ভুক্তির সংখ্যা ১২০টি, প্রকাশিত বাংলা প্রবন্ধ ৮৫টি, গ্রন্থ সমালোচনা ইংরেজি ৪টি, বাংলা ৫টি, মুখবন্ধ ও ভূমিকা (বাংলা) ১২টি। করিম স্যারের রচনারীতি স্বচ্ছ, সাবলীল এবং প্রাণবন্ত। তিনি ঘটনার বর্ণনামূলক, জীবনচরিত ভিত্তিক, ধর্মীয়, মুদ্রাতত্ত্বীয়, শিলালিপি তত্ত্বীয় প্রভৃতি গ্রন্থ রচনা করেন। ‘ Social History of the Muslims in Bengal’ গ্রন্থটি ড. আবদুল করিম রচিত সর্বপ্রথম এবং সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থ। বইটি তাঁর পিএইচডি অভিসন্দর্ভের ভিত্তিতে রচিত। এই গ্রন্থটি রচনার মাধ্যমে তিনি রাজনৈতিক ইতিহাসের ধারা ভেঙে সামাজিক ধারায় ইতিহাস চর্চার রীতি চালু করেন এবং প্রমাণ করেন এই উপমহাদেশে প্রাক্‌-ঔপনিবেশিক যুগও স্বর্ণময়। তিনি প্রাচীন ভারত থেকে গবেষণার ঝোঁক মধ্যযুগের দিকে নিয়ে এসেছিলেন। ‘ Murshid Quli Khan and His Times ’ গ্রন্থটি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাঁর দ্বিতীয় পিএইচডি অভিসন্দর্ভের ভিত্তিতে রচিত। গ্রন্থটিতে তিনি মুর্শিদকুলী খানের শাসনকাল পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে বিশ্লেষণ করেন এবং তৎকালীন ইউরোপীয় কোম্পানির সঙ্গে নবাবের সম্পূর্ণ বাংলার ব্যবসায়-বাণিজ্যে অর্থনৈতিক অবস্থা ও সামাজিক জীবনের উপর মুর্শিদকুলী খানের প্রভাব তাঁর গবেষণায় স্থান পেয়েছে।

ইতিহাসবিদ আবদুল করিম মুসলিম শাসকদের মুদ্রা বিশ্লেষণ করে ‘ Corpus of the Muslim Coins of Bengal (down to A.D 1938)কর্তৃক একমাত্র বাংলাদেশী হিসেবে Akbar’s Silver Medal (1960)স্বীকৃতি এনে দেয়। তিনি পরবর্তী গবেষকদের জন্য ১৯৭৬ সালে মুদ্রাবিষয়ক ভাণ্ডার ‘ Catalogue of Coins in the Cabinet of the Chittagong University Museum ’ এবং শিলালিপি অধ্যয়ন করে ১৯৯২ সালে ‘ Corpus of the Arabic and Persian Inscriptions of Bengal ’ গ্রন্থ রচনা করেন। আবদুল করিম মাদ্রাসায় ছাত্র থাকাকালীন আরবি ও ফারসি ভাষায় ব্যুৎপত্তি অর্জন করেছিলেন যা মুদ্রা ও শিলালিপি গবেষণাকে সহজতর করে। মধ্যযুগের বাংলার মুদ্রা ও শিলালিপি অধ্যয়ন এবং বিশ্লেষণ করে অধ্যাপক করিম একদিকে নিজে যেমন সুলতানি এবং মোগল আমলের বাংলার সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক ইতিহাস রচনার নতুন দিক উন্মোচন করেছেন, অন্যদিকে ভবিষ্যত গবেষকদের যাত্রাপথ করেছেন আলোকিত। ‘ Dacca The Mughal Capital ’ ড. করিমের আরেকটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ। গ্রন্থটি রচনার উপাত্ত খুঁজতে গিয়ে তিনি ডাচ ভাষাও আয়ত্ত করেছিলেন। এ গ্রন্থটির প্রধান গুরুত্ব হচ্ছে এটি বাংলার ইতিহাসের এক সন্ধিক্ষণের কালপুঞ্জিকে সঠিকভাবে তুলে ধরেছে। এটিই সম্ভবত প্রথম গবেষণামূলক গ্রন্থ যা আমাদের দেশে নগর এবং নগরায়ন সম্পর্কে গবেষক ও ছাত্রদের গবেষণার দ্বার উন্মুক্ত করে দেয়। এছাড়া বিলেতে বসে মূল অভিসন্দর্ভের বাইরে মসলিন শিল্পের ইতিহাস নিয়ে মৌলিক রচনা ‘ঢাকাই মসলিন’ প্রকাশ করেন। তবে বাংলা ভাষায় লেখা ‘বাংলার ইতিহাস : সুলতানী আমল’ গবেষকদের বিচারে শ্রেষ্ঠ মৌলিক কর্ম। বর্তমান রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে করিম স্যার ২৭ বছর পূর্বে লিখেছেন ‘ The Rohingyas : A Short Account of Their History and Culture’। ইতিহাসের উৎস হিসেবে মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্য অনুসন্ধান করতে গিয়ে রচনা করেন সাহিত্যে অসামান্য দলিল ‘বাংলা সাহিত্যের কালক্রম (মধ্যযুগ)’। সর্বশেষ রচিত ‘সমাজ ও জীবন’ ১ম ও ২য় খণ্ড তাঁর শুধু আত্মজীবনী নয়, বরং তৎকালীন সমাজের নানা ঘটনার প্রতিচ্ছবি। সমাজের নানা অসঙ্গতি, কুসংস্কার, অনিয়ম ও ধর্মের নামে ভণ্ডামি তিনি তরুণ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরেছেন।

বাংলার ইতিহাস চর্চার পাশাপাশি প্রফেসর আবদুল করিম অসাধারণ সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক দক্ষতার অধিকারী ছিলেন। একজন প্রশাসক হিসেবে তিনি বিচক্ষণ ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ছিলেন। এ গুণী শিক্ষাবিদ একাধারে হাউস টিউটর, প্রভোস্ট, ডিন এবং ১৯৭৫ থেকে ১৯৮১ মেয়াদে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক, প্রশাসনিক ও ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নে অনন্য ভূমিকা রেখেছিলেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জাদুঘর প্রতিষ্ঠায়ও তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীকে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিডার ইনস্টিটিউট হিসেবে ১৯৬৮ সালে ‘হাটহাজারী কলেজ’, ‘বাঁশখালী কলেজ’ এবং ১৯৯৫ সালে ‘পশ্চিম বাঁশখালী উপকূলীয় ডিগ্রি কলেজ’ প্রতিষ্ঠায় মূখ্য ভূমিকা পালন করেন। সুদীর্ঘসময় শিক্ষকতার মহান দায়িত্ব পালন করে ১৯৮৪ সালে অবসর গ্রহণের পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ Institute of Bangladesh Studies ’ এ সিনিয়র ফেলো হিসেবে যোগ দেন। এ সময়ে (১৯৮৯-১৯৯০) তিনি দুই খণ্ডে ‘বাংলায় মোগলদের ইতিহাস’ রচনা করেন। ১৯৯২ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে ‘সুপারনিউমেরারি প্রফেসর’ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সুদীর্ঘ গবেষণা-জীবনে ইতিহাসচর্চা ও অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ প্রফেসর আবদুল করিম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ১৯৯৫ সালে ‘একুশে পদক’ সম্মাননা লাভ করেন। তিনি ১৪ জানুয়ারি ২০০১ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে প্রথম ‘এমেরিটাস প্রফেসর’ পদে যোগদান করেন এবং আমৃত্যু উক্ত পদে নিয়োজিত ছিলেন।

বাংলাদেশের ‘বাংলাদেশ’ নামকরণের বিষয়ে প্রফেসর আবদুল করিমের অসামান্য যুক্তি প্রতিপক্ষের কাছে ছিল উপযুক্ত জবাব। ঐতিহাসিক ড. আর. সি. মজুমদার এর মতে, “ইতিহাসের দিক হইতে পূর্ববঙ্গের ‘বাংলাদেশ’ নাম গ্রহণের কোন যৌক্তিকতা নাই” এবং “বর্তমান পূর্ববঙ্গের রাষ্ট্রনায়কগণ ইতিহাস ও ভূগোলকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করিয়া আবেগের দ্বারা পরিচালিত হইয়া তাহাদের দেশের ‘বাংলাদেশ’ নাম গ্রহণ করিয়াছেন।” প্রফেসর আবদুল করিম ঐতিহাসিক যুক্তি-প্রমাণ উপস্থাপন করে লিখেছেন – “ড. মজুমদারের এই উক্তি তথ্যভিত্তিক নয়; যেই বঙ্গ- বঙ্গ এর অধিবাসী বঙ্গাল হইতে মুসলমানদের বঙ্গালাহ, বাঙ্গালাহ নামের উৎপত্তি, সেই বঙ্গ এর সম্পূর্ণ অংশই বর্তমান বাংলাদেশের অভ্যন্তরে। সুতরাং বাংলাদেশ নামকরণ মোটেই অযৌক্তিক নয়।” বাংলাদেশের ‘বঙ্গালাহ’ মধ্যযুগের মুসলিম শাসকদের দেওয়া নাম। যা থেকে মোগল আমলে সুবাহ বাঙ্গালাহ, ইংরেজ আমলে বেঙ্গল এবং ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ‘বাংলাদেশ’ নামে রূপলাভ করেছে।

প্রফেসর আবদুল করিম ইতিহাসকে ভালবাসতেন, ইতিহাস পড়তে ভালবাসতেন, ইতিহাস পড়াতে ভালবাসতেন এবং ইতিহাস লিখতে ভালবাসতেন। ইতিহাস কোন কাহিনী নয়, নয় কেবল সাল তারিখের কচকচি। ইতিহাস এমন এক নদী, যে অতীত এবং বর্তমানকে এক করে ভবিষ্যৎ জয়ের পথ উন্মোচন করে। ইতিহাসচর্চায় প্রফেসর করিম ছিলেন নিবেদিত প্রাণ। ড. করিমের অন্যতম গুণ ইতিহাসের ছাত্র-ছাত্রীদের ইতিহাস গবেষণায় আগ্রহী করে তোলা এবং নতুন নতুন বিষয়ের উপর গবেষণায় উৎসাহিত করা। তাঁর প্রথম পিএইচডি গবেষক সুনীতিভূষণ কানুনগো (চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক এবং প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ)। কানুনগো’র গবেষণা অভিসন্দর্ভের শিরোনাম ছিল ‘ A History of Chittagong under Muslim Rule.’ এটি ড. করিমের হাতে গড়া যেমন প্রথম পিএইচডি, তেমনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর প্রথম পিএইচডি অভিসন্দর্ভ।

প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ প্রফেসর আবদুল করিম ২৪ জুলাই ২০০৭ সালে বর্ষণমুখর এক সন্ধ্যায় মৃত্যুবরণ করেন। ১৮তম মৃত্যুবার্ষিকীতে স্যারের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ৬ সেপ্টেম্বর ২০০৭ সালে কলা ও মানববিদ্যা অনুষদ ভবনকে ‘ড. আবদুল করিম ভবন’ নামকরণ করা হয়। শিক্ষার্থীদের জ্ঞান সৃজন, জ্ঞান বিতরণ ও গ্রন্থ লেখনীর মাধ্যমে শুধুমাত্র চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগকে সমৃদ্ধ করেছেন তা নয়, উপমহাদেশেও প্রথিতযশা ইতিহাসবিদ হিসেবে নিজেকে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছিলেন। অসাধারণ পাণ্ডিত্যের অধিকারী, জ্ঞানতাপস, সফল গবেষক ও গুণী এই ইতিহাসবিদ আমাদের সবার কাছে এক অনুপম আদর্শ ও চিরন্তন প্রেরণার উৎস। শ্রদ্ধেয় করিম স্যার ছিলেন বিনয়ী, সদালাপী, অমায়িক সর্বোপরি একজন শিক্ষার্থীবান্ধব শিক্ষক। তাঁর শত সহস্র শিক্ষার্থী ও গবেষক তাঁকে স্মরণীয় করে রাখবে, তাঁর রচনাবলী তাঁকে অমরত্ব দান করবে।

লেখক : প্রাবন্ধিক; সহকারী অধ্যাপক, ইতিহাস বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

পূর্ববর্তী নিবন্ধআমার দেশ আমার শহর
পরবর্তী নিবন্ধজেমসের কনসার্টের অর্থে সহায়তা করা হবে ক্ষতিগ্রস্তদের