বর্তমান সময়ে একটি স্বাধীন চাকরি হলো ডেলিভারি ম্যান জব বা পণ্য পৌঁছে দেওয়ার চাকরি। একজন ডেলিভারি ম্যান মূলত কোনো প্রোডাক্ট বা সার্ভিস কাস্টমারের কাছে সরাসরি পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বে থাকেন। বর্তমানে ইন্টারনেট ভিত্তিক বেচাকেনা আর হোম ডেলিভারি সার্ভিসের প্রসারের কারণে শহরে এই পেশার বড় চাহিদা তৈরি হয়েছে। অনেকে বেকারত্ব থেকে মুক্তি পেয়েছে এই পেশায় এসে। করোনা কালীন সময়ে যখন লকডাউন চলছিল তখন দুঃসময়ে কোম্পানি এবং ভোক্তার মাঝে একমাত্র সেতুবন্ধন হয়ে কাজ করেছে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ডেলিভারি ম্যান। বর্তমানে ফুড ডেলিভারির ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা লক্ষ্য করা যায়। কখনো ৫০ শতাংশ ছাড়, প্রথম তিনটি অর্ডারে ডেলিভারি চার্জ ফ্রি, কখনো ৩০ মিনিট বা মাত্র ১০ মিনিটেও ডেলিভারি দেয়া হচ্ছে। সম্প্রতি সৌদি আরবের একটি বহুতল ভবনে ডেলিভারি বয় উড়ে উড়ে বারান্দায় গিয়ে খাবার ডেলিভারি দিয়ে আসছে এরকম একটা ভিডিও নেটে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে।
শহরের অলিতে গলিতে মোটরসাইকেল বা বেশিরভাগই সাইকেলে চড়ে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্ররা তাদের পার্ট টাইম চাকরি হিসেবে পিঠে ব্যাগ ঝুলিয়ে বা কখনো হাতে, স্ট্যান্ডে খাবার নিয়ে রোদে, বৃষ্টিতে, যে কোনো পরিস্থিতিতে ভোক্তার কাছে খাবার পৌঁছে দেওয়ার চিত্র দেখা যায়। রাস্তায় অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় তাদের। জ্যাম থাকলে সময় মত খাবার পৌঁছে দিতে না পারলে অনেকে তাদের সাথে খারাপ আচরণ করে, ডেলিভারি চার্জ দিতে চায় না, এমনকি খাবার তিনটার অর্ডার করে একটা নিয়ে আর দুইটা নেয় না, আবার অনেকে ফোনও ধরে না। এমন অনেক ভোগান্তির শিকার হয় ডেলিভারি বয়রা। কখনো বাসায় ডেলিভারি দিতে গিয়ে নিচে রাখা সাইকেলটিও চুরি হয়ে যায়। একটু এদিক ওদিক হলেই কোম্পানি বা ক্রেতার কাছে জবাবদিহি করতে হয়। এরকম অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তাই আমাদের উচিত যারা আমাদের উপকারে সদা নিয়োজিত তাদের প্রাপ্য সম্মানটুকু দেওয়া। তাদের সাথে মানবিক আচরণ করা। বিভিন্ন পারিপার্শ্বিক কারণে ডেলিভারি দিতে একটু দেরি হলে তাদের সাথে কলহে না জড়ানো। পরস্পরের প্রতি সহানুভূতি ও সম্প্রীতিই পারে সকলের জন্য বাসযোগ্য একটি সুন্দর পৃথিবী গড়তে।