উন্নয়নের স্বার্থে নির্বাচিত মেয়রের ক্ষমতা বৃৃদ্ধি প্রয়োজন : মাহমুদুল ইসলাম

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ২৩ জানুয়ারি, ২০২১ at ১০:৪৯ পূর্বাহ্ণ

নগর উন্নয়নের স্বার্থে নির্বাচিত মেয়রের ক্ষমতা বৃৃদ্ধি প্রয়োজন বলে মনে করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রথম মেয়র মাহমুুদুল ইসলাম চৌধুরী। এক্ষেত্রে সিটি গভর্মেন্ট গঠন বা নগর সরকার ছাড়া চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সার্বিক কর্তৃত্ব অর্জন অসম্ভব বলে মনে করেন তিনি। তার ভাষায়, নগরের উন্নয়নের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল সেবা সংস্থার সমন্বয়ের নেতৃত্ব সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচিত মেয়রের হাতে থাকা উচিত। অন্যথায় তিনি (মেয়র) হবেন ঠুঁটো জগন্নাথ।
গতকাল দৈনিক আজাদীর সাথে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি। নির্বাচিত মেয়রের ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য নগর সরকার ব্যবস্থায় ফিরে যওয়ার প্রস্তাব দেন মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বলেন, নগর সরকার ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়া সম্ভব না হলে প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের তত্ত্বাবধানে একটি ‘কো-অর্ডিনেশন কমিটি’ গঠন করা যায়। একজন মন্ত্রী হবেন সেই কমিটির প্রধান। শুধু চট্টগ্রাম নগর না, বৃহত্তর চট্টগ্রামের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সমন্বয় করবেন তিনি।
১৯৮৮ সাল থেকে ১৯৮৯ সাল চট্টগ্রাম পৌর কর্পোরেশনের প্রশাসক ছিলেন মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী। ১৯৮৯ সালে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে রূপান্তর হলে মেয়র হন তিনি। ১৯৯০ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।
মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আমি মেয়র থাকাকালীন সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত হতো সিটি কর্পোরেশন অর্ডিন্যান্স- ১৯৮২ দিয়ে। যেখানে নগর সরকারের নির্দেশনা ছিল। সকল সেবাসংস্থার প্রধানের জবাবদিহি বাধ্যতামূলক ছিল। সেবা ও উন্নয়ন সংস্থার প্রধানগণ চসিকের সভায় ‘অফিশিয়াল কমিশনার’ হিসেবে বাধ্যতামূলক উপস্থিত থাকার বিধান ছিল। সেটা ১৯৯৩ সালে বিএনপি সরকার রহিত করে। সেই আইন পুনরুদ্ধারের উদ্যোগ নেয়া দরকার। কারণ, এখন কার্যত মেয়রের কোনো ক্ষমতা নাই। তিনি বলেন, আমাদের সময়ে কাউন্সিলরগণ উপ-সচিব মর্যাদায় ছিলেন। এখন কি সে মর্যাদা আছে? সে সময় খুলনায় আবদুল খালেক মন্ত্রী ছিলেন। কেন তিনি মন্ত্রীত্ব ছেড়ে খুলনার মেয়র হয়েছিলেন।
তিনি বলেন, সিটি মেয়রের কাছে নাগরিক প্রত্যাশা বেশি। অথচ রাস্তা পরিষ্কার, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও লাইট জ্বালানো ছাড়া আর কোনো কাজ করতে পারেন না তিনি।
‘কো-অর্ডিনেশন কমিটি’ গঠন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চট্টগ্রামে বিশাল উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ হচ্ছে। কিন্তু সেখানে কোনো সমন্বয় নাই। এতে দুর্ভোগ বাড়ছে নাগরিকদের। যেহেতু মেয়রের সমন্বয় করার আইনি ক্ষমতা নাই তাই কো-অর্ডিনেশন কমিটি গঠন করলে সমন্বয় নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
সাবেক এ মেয়র বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনকে গাজীপুর বা দেশের অন্য সিটি কর্পোরেশনগুলোর সাথে তুলনা করলে হবে না। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই এলাকা। প্রাকৃতিকভাবে পাহাড়, নদী, সমুদ্রবেষ্টিত চট্টগ্রামে আছে বন্দর। আমদানি-রপ্তানির সিংহভাগ হয় টটগ্রাম বন্দর দিয়ে। কাজেই চট্টগ্রামকে অবশ্যই আলাদা গুরুত্ব দিতে হবে। তাই চট্টগ্রামের জন্য আলাদা কো-অর্ডিনেশন কমিটি গঠন করতে হবে।
তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সিটি মেয়রদের ক্ষমতা আছে। নিউ ইয়র্কের মেয়র পুলিশ কমিশনারকে অ্যাপয়ন্টমেন্ট দেন। আমাদের এখানে সেটা কি কল্পনীয়? তবে মেয়রদের ক্ষমতা থাকা উচিত। তবে এ সময় আমলারা মেয়রের ক্ষমতা বৃদ্ধি পাক সেটা চাইবেন না বলেও মন্তব্য করেন সাবেক এ মেয়র।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅভিযোগ-পাল্টা অভিযোগেও জমজমাট প্রচারণা
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে আরেকটি হোয়াইট ওয়াশের হাতছানি