চট্টগ্রাম মহানগরীতে সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ‘রোড ক্র্যাশের অন্যতম ঝুঁকি গতি’ শীর্ষক এক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সিএমপি সদরদপ্তরে অনুষ্ঠিত দুই দিনব্যাপী কর্মশালায় সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মোহাম্মদ আসফিকুজ্জামান আকতার প্রধান অতিথি ছিলেন।
তিনি বলেন, সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিতে বৈশ্বিকভাবে স্বীকৃত তিনটি ‘ই’ যথা, ইঞ্জিনিয়ারিং, এডুকেশন এবং এনফোর্সমেন্টের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা হিসেবে পুলিশ মূলত আইন বাস্তবায়নের দায়িত্ব পালন করে, যা সড়ক নিরাপত্তার একটি গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু আংশিক অংশ। যদি আমরা সড়কে মৃত্যুর সংখ্যা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে চাই, তাহলে আমাদের অবশ্যই রোড ইঞ্জিনিয়ারিং উন্নত করা ও সড়ক ব্যবহারকারীদের নিয়ম–কানুন সম্পর্কে আরও সচেতন ও শিক্ষিত করে তুলতে হবে। চট্টগ্রাম নগরীতে সড়ক নিরাপত্তা জোরদার করতে পুলিশ কর্মকর্তাদের দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিস ইনিশিয়েটিভ ফর গ্লোবাল রোড সেফটি প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়। গ্লোবাল রোড সেফটি পার্টনারশিপ হিসেবে এই কর্মশালার আয়োজন করে। এতে দুই ব্যাচে মোট ৭৩ জন পুলিশ কর্মকর্তা প্রশিক্ষণ নেন। অনুষ্ঠানে আসফিকুজ্জামান আকতার ‘রোড ক্রাশের ঝুঁকি গতি : একটি জাতীয় সংকট’ শীর্ষক সেশন পরিচালনা করেন। এ সময় বিশেষ অতিথি ছিলেন সিএমপি’র উপ–পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক–উত্তর) নেসার উদ্দিন আহমদ। প্রশিক্ষক ছিলেন জিআরএসপি’র সিনিয়র রোড পুলিশিং উপদেষ্টা মাইকেল ফিল্যান্ড ও পল সিমকক্স। তাঁরা রোড ক্রাশ প্রতিরোধে আইন প্রয়োগের ভূমিকা, উচ্চ গতির ঝুঁকি, গতি নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয়তা, আধুনিক গতি নিয়ন্ত্রণ প্রযুক্তি ও কৌশল, এবং রাস্তার পাশের চেকপয়েন্টগুলোর নিরাপদ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। উল্লেখ্য, দেশে সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) যানবাহনের ধরন অনুযায়ী সর্বোচ্চ গতিসীমা নির্ধারণ করেছে। সিটি কর্পোরেশন এলাকায় যানবাহনের সর্বোচ্চ গতি নির্ধারণ করা হয়েছে ৪০ কি.মি/ঘণ্টা, আর মোটরসাইকেলের জন্য ৩০ কি.মি/ঘণ্টা। দুই দিনব্যাপী এই কর্মশালায় ট্রাফিক সার্জেন্ট, উপ–পরিদর্শক, পরিদর্শক, সহকারী পুলিশ কমিশনার ও অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার পর্যায়ের কর্মকর্তারা অংশ নেন। সমাপনী অনুষ্ঠানে উপ–পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক–পশ্চিম) নিষ্কৃতি চাকমা প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের হাতে সনদপত্র তুলে দেন। অনুষ্ঠানে বিআইজিআরএস চট্টগ্রামের ইনিশিয়েটিভ কো–অর্ডিনেটর লাবিব তাজওয়ান উৎসব, এনফোর্সমেন্ট কো–অর্ডিনেটর কাজী হেলাল উদ্দিন, এবং কমিউনিকেশন অফিসার মাহামুদুল হাসান উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সাল থেকে এ পর্যন্ত জিআরএসপি সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে সিএমপি’র প্রায় ৬০০ পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ প্রদান করেছে।