উদ্বোধনের পর একদিনের জন্যও খোলেনি ক্যান্টিন

চবি কলা অনুষদ

চবি প্রতিনিধি | শুক্রবার , ৭ জানুয়ারি, ২০২২ at ৫:০৪ পূর্বাহ্ণ

নির্মাণ কাজ শেষে উদ্বোধন হয়েছে প্রায় তিন বছর আগে। কিন্তু একদিনের জন্যও খোলেনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের শিক্ষার্থী ক্যান্টিন। আদৌ খুলবে কিনা সেটা নিয়েও কর্তৃপক্ষের কোনো গরজ নেই। ক্যান্টিন না থাকায় ঝুপড়িতে উচ্চ মূল্যে খাবার খেতে হয় শিক্ষার্থীদের। কেউ চাকসুতে (চবি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ) গিয়ে দুপুরের খাবার বা নাস্তা করেন। চাকসুর খাবারের মান নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন। কেউ আবার আব্দুর রব হলে গিয়ে দুপুরের খাবার খান। ক্যান্টিন না থাকায় নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হয় শিক্ষার্থীদের। এ জন্য ক্ষোভও রয়েছে তাদের। শিক্ষার্থীদের দাবি, অতিসত্বর যেন ক্যান্টিনটি খুলে দেওয়া হয়। জানা গেছে, কলা অনুষদের পশ্চিম পাশে শিক্ষার্থীদের জন্য একটি ক্যান্টিন ছিল। নিচু হওয়ায় বর্ষাকালে সেখানে পানি উঠত। এছাড়া বিভিন্ন কারণে প্রায় এক যুগ সেটি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এরপর দীর্ঘদিন শিক্ষার্থীরা দাবি জানিয়ে আসলেও ক্যাফেটেরিয়া স্থাপন করেনি কর্তৃপক্ষ। এরপর ২০১৯ সালের ২৯ মে তৎকালীন উপাচার্য প্রফেসর ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী পুরাতন ক্যান্টিনের পাশে নতুন ক্যান্টিনটি উদ্বোধন করেন। পরের মাসে ১৫ জুন অবসরে যান ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী। ১৬ জুন থেকে উপাচার্যের রুটিন দায়িত্ব পালন করেন প্রফেসর শিরীণ আখতার। এরপর দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও ক্যান্টিনটি খোলার কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য মতে, কলা ও মানববিদ্যা অনুষদে ১৩টি বিভাগ ও তিনটি ইনস্টিটিউট রয়েছে। দুই ইনস্টিটিউটের একাডেমিক কার্যক্রম বাইরে পরিচালিত হয়। বাকি ১৩টি বিভাগ ও একটি ইনস্টিটিউটের প্রায় সহস্রাধিক শিক্ষার্থী প্রতিদিন ক্লাস, পরীক্ষাসহ নানা কাজে অনুষদে আসেন। অনুষদের পূর্ব পাশে শিক্ষকদের জন্য সুন্দর লাউঞ্জের ব্যবস্থা থাকলেও শিক্ষার্থীদের ভরসা ঝুপড়ির দোকানগুলো। ঝুপড়ির দোকানের খাবারের দাম বেশি, মানও ভালো নয়; এছাড়া অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রান্নাসহ নানা অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। এ নিয়ে শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি শীঘ্রই ক্যান্টিনটি খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মো. রফিক বলেন, কলা অনুষদের শিক্ষার্থীদের জন্য একটি ক্যান্টিন খুব জরুরি দরকার। ক্যান্টিন না থাকায় বাধ্য হয়ে আমাদেরকে ঝুপড়িতে খেতে হয়। সেখানে খাবারের দাম বেশি। নিম্নমানের খাবার দেওয়া হয়। এছাড়া অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রান্না করা হয়। আরেক শিক্ষার্থী মো. মিজান বলেন, এত বড় একটা অনুষদ অথচ শিক্ষার্থীদের জন্য একটা ক্যাফেটোরিয়া নেই। এটি আসলেই দুঃখজনক। কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছা থাকলে এটা সহজেই চালু করা যায়।
এটা নিয়ে কিছুই জানেন না অনুষদের বিভিন্ন বিভাগের সভাপতিরাও। ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের মীর সাইফুদ্দীন খালেদ চৌধুরী আজাদীকে বলেন, আমি এই ব্যাপারে কিছু জানি না। এটা ডিন অফিস ভালো বলতে পারবে।
কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডিন প্রফেসর মহীবুল আজিজ আজাদীকে বলেন, এ ব্যাপারে রেজিস্ট্রার ভালো বলতে পারবেন। আমরা ভর্তির কাজ নিয়ে ব্যস্ত। নির্দেশনা আসলেই বলতে পারবো। আমরা শুধুমাত্র নির্দেশনা পালন করি।
অপরদিকে ক্যান্টিনের বিষয়ে কিছু জানেন না ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার প্রফেসর এস এম মনিরুল হাসান। তিনি বলেন, এগুলো ডিনের বিষয়। ডিন অফিস চাহিদা দিলেই তো কাজ হবে। তবে তিনি ডিনের সাথে কথা বলবেন বলে জানান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহেলেনার বিরুদ্ধে আরেক মামলায় অভিযোগপত্র
পরবর্তী নিবন্ধসীতাকুণ্ডে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় কিশোর নিহত