উদ্বোধনের এক বছর পরও হলে উঠতে পারেনি শিক্ষার্থী

চবি বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব হল লোকবল ও নীতিমালায় আটকা

চবি প্রতিনিধি | বুধবার , ৫ অক্টোবর, ২০২২ at ৮:০৬ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব হলের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৬ সালে। কাজ শেষ হয়েছে প্রায় ২৫ মাস আগে। সেই বছর ঘটা করে হলটি উদ্বোধন করা হয়।
শিক্ষার্থীদের বসবাস উপযোগী করে গড়ে তোলা হয়েছে হলটি। কেনা হয়েছে প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র। কিন্তু নীতিমালা তৈরি না হওয়ায় হলটিতে শিক্ষার্থীদের ওঠাতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। নীতিমালা না থাকায় এখনো বলা যাচ্ছে না কোন কোন বিভাগ বা অনুষদের শিক্ষার্থীরা এ হলে থাকবে। যার কারণে শিক্ষার্থীদের পরিচয়পত্রেও এই হলের সংযুক্তি নেই। হল পরিচালনার জন্য লোকবল নেই বলেও জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। জানা যায়, কোনো হল নির্মাণের আগে সেই হলে কোন অনুষদ বা বিভাগের শিক্ষার্থীরা থাকবে এবং হলটির সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একটি নীতিমালা প্রণয়ন করতে হয়। কিন্তু হলটি নির্মাণের আগে ওই রকম কোনো নীতিমালা প্রণয়ন হয়নি। গত বছরের শুরুর দিকে ফজিলাতুন নেছা মুজিব হলের নীতিমালা তৈরির জন্য ১৬ সদস্যের একটি কমিটি গঠিত হয়। কমিটিতে উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) প্রফেসর বেনু কুমার দে’কে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব করা হয় রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এস এম মনিরুল হাসানকে। দেড় বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও নীতিমালা প্রণয়ন হয়নি। তবে নীতিমালা তৈরি হয়েছে, এখন শুধু অনুমোদন বাকি রয়েছে বলে জানিয়েছেন নীতিমালা প্রণয়ন কমিটির সদস্য সচিব ও রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর এস এম মনিরুল হাসান।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিব হলের কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের মার্চ মাসে। কাজ শেষ হয় ২০২১ সালের আগস্টে। ওই বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর শিক্ষামন্ত্রী দিপু মনি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে হলটি উদ্বোধন করেন।
এর আগে গত বছরের জুনে বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক প্রকাশ দাশগুপ্তকে প্রভোস্ট নিয়োগ দেওয়া হয়। তবে প্রভোস্ট নিয়োগ দেওয়ার ১৫ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো হলে কোনো আবাসিক শিক্ষক ও লোকবল নিয়োগ দেওয়া হয়নি। ১৬ কোটি ২৯ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৫ হাজার ৫৮১ বর্গমিটার আয়তনের পাঁচতলা বিশিষ্ট হলটিতে আসন রয়েছে ৩১২টি। দুটি ব্লকে রয়েছে রান্নাঘর, শৌচাগার, ক্যান্টিন ও ডাইনিং। এছাড়া শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে টিভিকক্ষ, গ্রন্থাগার, বিউটি পার্লার, ব্যাডমিন্টন খেলার মাঠ, জিমনেশিয়াম ও সুইমিং পুলের সুবিধা। উদ্বোধনের পর দুই মেয়াদে প্রায় ৪০ লাখ টাকার চেয়ার-টেবিল, সোফাসহ নানা আসবাব কেনা হয়েছে।
চবিতে বর্তমানে মেয়েদের জন্য ৫টি হল রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে প্রীতিলতা, শামসুন্নাহার, জননেত্রী শেখ হাসিনা, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ও মাস্টারদা সূর্যসেন হল। মোট ১০ হাজার ৪৬ জন ছাত্রীর জন্য এসব হলে ২ হাজার ৩০৯টি আসন থাকলেও ছাত্রী থাকছে প্রায় ৪ হাজার। বাকি ৬ হাজার ছাত্রী নিজের খরচে হলের বাইরে থাকে।
হলটির নীতিমালা কমিটির সদস্য সচিব ও রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এস এম মনিরুল হাসান আজাদীকে বলেন, এই হল খোলার জন্য দুই বাধা-একটি নীতিমালা, আরেকটি লোকবল। নীতিমালা প্রণয়নের খসড়া সম্পন্ন হয়েছে। এখন এটির অনুমোদন বাকি রয়েছে। পরবর্তী সিন্ডিকেট বৈঠকে এটি উপস্থাপন করা হবে। এরপর লোকবল লাগবে। সেটাও সিন্ডিকেটে পাশ করাতে হবে। সব ঠিক হয়ে গেলে আপাতত অন্য জায়গা থেকে হলেও কিছু লোকবল দিয়ে হল চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
বিভিন্ন বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, ছাত্রী হলে অনেকে ডাবলিং করে থাকে। কষ্ট হলেও শিক্ষার্থীরা হলে থাকতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। শেখ হাসিনা হল খুলে দেওয়ায় আবাসন সংকট কিছুটা কমেছে। এখন ফজিলাতুন নেছা মুজিব হল খুলে দিলে অনেক শিক্ষার্থীর থাকার ব্যবস্থা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসীমান্ত পরিস্থিতি ঠাণ্ডা মাথায় মোকাবিলা করছি : মোমেন
পরবর্তী নিবন্ধফটিকছড়িতে আবারও নৌকা পেলেন মেয়র ইসমাইল