উত্তর ও দক্ষিণ জেলার কর্মসূচি শহরে

প্রেস ক্লাবের সামনে অনুমতি পায়নি নগর বিএনপি

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ১১ মার্চ, ২০২৩ at ৪:২৫ পূর্বাহ্ণ

আওতাভুক্ত সাংগঠনিক ইউনিটে নয়, শহরেই কেন্দ্রঘোষিত আজকের ‘মানববন্ধন’ কর্মসূচি পালন করবে চট্টগ্রাম উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মাঝে। তবে বিএনপির সাংগঠনিক ইউনিট দুটির সিনিয়র নেতারা বলছেন, জেলা সদর হিসেবে শহরে কর্মসূচি বাস্তবায়নে বাধা নেই। এদিকে নগর বিএনপি আজকের কর্মসূচিকে ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে বলে দলটির সিনিয়র নেতারা জানিয়েছেন। তবে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে কর্মসূচি করতে চাইলেও পুলিশ সেখানে করার অনুমতি দেয়নি বলে জানিয়েছেন তারা।

জানা গেছে, বিদ্যুৎগ্যাস, চালডাল, তেল, চিনিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমানো, বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর দমননিপীড়ন বন্ধ করা, দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াসহ কারাবন্দী নেতাকর্মীদের মুক্তি, সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বাতিল করে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন নির্বাচনসহ ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ১০ দফা’ দাবিতে আজকের মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় বিএনপি।

সংশ্লিষ্টরা জানান, নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে নূর আহম্মদ সড়কে আজ সকাল ১১ টায় নগর বিএনপির মানববন্ধন আয়োজন করা হবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। একই সময়ে উত্তর জেলা বিএনপির উদ্যোগে মানববন্ধন জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ গেইট থেকে আলমাস সিনেমা হল পর্যন্ত এলাকায় আয়োজন করা হবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন। দক্ষিণ জেলা বিএনপির মানববন্ধন শাহ আমানত ব্রিজ সংলগ্ন গোল চত্বরের পাশে আয়োজন করা হবে। সকাল ১১টয় অনুষ্ঠেয় কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি থাকবেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান। উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির দুই সিনিয়র নেতা নাম প্রকাশ করার শর্তে দৈনিক আজাদীকে বলেন, উত্তর ও দক্ষিণ জেলার আওতায় ১৫টি সাংগঠনিক উপজেলা এবং ১৪টি পৌরসভা রয়েছে। যেহেতু চলমান কর্মসূচিগুলো ধারাবাহিকভাবে হচ্ছে তাই একেকবার একেক উপজেলায় করা উচিত। এতে তৃণমূলের কর্মীরা উদ্বুদ্ধ হবেন। একইসঙ্গে তৃণমূলের সঙ্গে জেলার যোগাযোগটাও বৃদ্ধি পাবে। এ বিষয়ে উত্তর জেলা বিএনপির আহবায়ক গোলাম আকবর খোন্দকার দৈনিক আজাদীকে বলেন, যেহেতু এটা জেলার প্রোগ্রাম তাই জেলা সদরেই করছি। যদি উপজেলায় করি তাহলে সেটা উপজেলার প্রোগ্রাম হয়ে যাবে। শুধু বিএনপি না, বাংলাদেশে যত দলই আছে সবাই জেলার কর্মসূচিগুলো জেলা সদরে করে থাকে। আজকের কর্মসূচিতে লোক সমাগম কেমন হবে জানতে চাইলে বলেন, উত্তর জেলার আওতাধীন প্রতিটি উপজেলা থেকে নেতাকর্মীরা আসবেন। তাই আশা করছি উপস্থিতি ভালই হবে। উপস্থিতি হাজার ছাড়িয়ে যাবে।

দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান আজাদীকে বলেন, আমাদের জেলা সদর হচ্ছে চট্টগ্রাম শহর। তাই সদরে করছি। তাছাড়া দক্ষিণ জেলার কার্যালয়ও কিন্তু শহরে। যদি দক্ষিণ জেলা সদর অন্য কোনো উপজেলায় হতো তাহলে সেখানে করতাম। আওয়ামী লীগ বা অন্য দলগুলোও কিন্তু তাদের জেলার কর্মসূচি শহরে বাস্তবায়ন করে। এরপরও আমরা বোয়ালখালী এবং পটিয়ায় দক্ষিণ জেলার কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছি। উপজেলায় কর্মসূচি বাস্তবায়ন করলে তা কম মানুষের দৃষ্টিগোচর হয় জানিয়ে তিনি বলেন, শহরে বিভিন্ন উপজেলার মানুষের যাতায়াত থাকে। এখানে লোকসংখ্যাও বেশি। তাই শহরে কর্মসূচি বাস্তবায়ন করলে তা বেশি মানুষের চোখে পড়ে। নগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন দৈনিক আজাদীকে বলেন, প্রতিটি ওয়ার্ড ও থানায় প্রস্তুতি সভা হয়েছে। অঙ্গসংগঠনগুলোও আলাদা প্রস্তুতি নিয়েছে। তাই আশা করছি ভালো উপস্থিতি হবে। মানবন্ধন কাজীর দেউড়ি মোড় থেকে এনায়েত বাজার পর্যন্ত ছাড়িয়ে যাবে। তিনি বলেন, আমাদের ইচ্ছে ছিল চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে কর্মসূচি বাস্তবায়ন করার। কিন্তু সিএমপি থেকে সেখানে করার অনুমতি দেয়নি। পার্টি অফিসের সামনে করার জন্য বলেছে। তাতে অবশ্য আমাদের সমস্যা নাই। কারণ আমরা ভাতের এবং ভোটের অধিকারের জন্য আন্দোলন করছি। আজকের মানববন্ধন কর্মসূচির মূল্য উদ্দেশ্য সম্পর্কে শাহাদাত বলেন, দলীয় সরকারের অধীনে অগ্রহণযোগ্য আর কোনো নির্বাচন হবে না, সেটা আমরা জানিয়ে দিতে চাই। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। আমাদের চেয়ারপার্সনসহ কারাবন্দী সকল নেতাকর্মীর নি:শর্ত মুক্তির দাবিতেই আমাদের কর্মসূচি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধফেল থেকে পাস ৭৬ জন
পরবর্তী নিবন্ধরমজানে বিদ্যুৎ পানি গ্যাস সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখুন