উত্তর ও দক্ষিণ চট্টগ্রামে পৃথক দুটি সরকারি মেডিকেল কলেজ সময়ের দাবি : প্রেক্ষাপট সিআরবি

আ.ফ.ম. মোদাচ্ছের আলী | শুক্রবার , ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১ at ৫:২৪ পূর্বাহ্ণ

ঢাকা মহানগরকে ভাগ করে দুটি সিটি কর্পোরেশন করা হয়েছে। এই মহানগরে আছে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল। এই চারটি মেডিকেল কলেজ ঢাকা শহরের বিভিন্ন প্রান্ত জুড়ে বিস্তৃত। অথচ চট্টগ্রাম মহানগরে আছে মাত্র একটি সরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়টির অবকাঠামো ও জনবল নিয়োগ এখনো সম্পন্ন হয়নি। মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পূর্বের সেশন এর ছাত্র ছাত্রীরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পরের সেশনের ছাত্র ছাত্রীরা চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এর অধীন। এখানেও তুঘলকি কাণ্ড। প্রতিটি মেডিকেল কলেজে দুইটি গভর্ণিং বডি। একটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যটি চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের। প্রতিটি মেডিকেল কলেজকে প্রতিবছর দুই জায়গাতেই লক্ষাধিক টাকার উপর এফিলিয়েশন ফি দিতে হয়। এবার আসি মূল আলোচনায়। সরকারি দল আওয়ামী লীগসহ প্রতিটি রাজনৈতিক দলের রয়েছে চট্টগ্রাম মহানগর, উওর ও দক্ষিণ জেলা কমিটি। দেখা যায় উত্তর ও দক্ষিণ জেলার অস্তিত্ব প্রবল। দেখা যাক এই দুইটি জেলার অবস্থা কী? চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ৮ টি উপজেলা নিয়ে গঠিত। এগুলো হচ্ছে, কর্ণফুলি, বোয়ালখালি, আনোয়ারা, বাঁশখালী, পটিয়া, চন্দনাইশ লোহাগাড়া ও সাতকানিয়া। পক্ষান্তরে চট্টগ্রাম উওর জেলা ৬টি উপজেলা, মিরশ্বরাই, সীতাকুণ্ড, হাটহাজারী, ফটিকছড়ি, রাউজান ও রাঙ্গুনিয়া নিয়ে গঠিত। ফটিকছড়ি উপজেলার বিস্তৃতি বিশাল। কক্সবাজারে পৃথক জেলা হিসেবে একটি সরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল আছে। পার্বত্য রাঙামাটি জেলায় ও পৃথক সরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল আছে। নেই শুধু এই দুই প্রান্তের বিশাল জেলায়। সেখানে যেসব বেসরকারি হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙ ও ক্লিনিক রয়েছে সেগুলো রোগীর সামান্য অবস্থা খারাপ দেখলেই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে পাঠিয়ে দেয়। ফলে একদিকে চট্টগ্রামের একমাত্র সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপর আছে প্রচণ্ড চাপ এবং চিকিৎসার অব্যবস্থা। অনেকে নগরে যত্রতত্র গজিয়ে উঠা বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়, পরাভূত হয় বেনিয়াদের আর্থিক লালসার কাছে। অথচ উত্তর ও দক্ষিণ চট্টগ্রামের সিংহভাগ মানুষ ব্যবসা বাণিজ্য, রেমিট্যান্স দিয়ে সরকারি কোষাগারকে সমৃদ্ধ করছে। দ্বিতীয়ত ঢাকা শহরেই যদি চারটি সরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল থাকতে পারে তবে বসবাসের ঘনত্ব বিবেচনায় চট্টগ্রাম উত্তর ও দক্ষিণ জেলায় দুইটি সরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল নির্মাণের জন্য আমাদের সোচ্চার হওয়া কি অযৌক্তিক? মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বারবার যেখানে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ, শিক্ষা ও চিকিৎসার আলো ছড়িয়ে দেয়ার কথা বলছেন আমি নিশ্চিত এই দুই জেলার সর্বস্তরের মানুষ সোচ্চার হলে এখানে দুটি সরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা কোন মতেই অসম্ভব নয়।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে চট্টগ্রাম উওর ও দক্ষিণ জেলায় অনেক সরকারি পতিত জমি আছে সেটি রেলওয়ে বা অন্য প্রতিষ্ঠানের। তবে সিংহভাগ রেলওয়ের জায়গা। সুতরাং হেরিটেজ ঘোষণাকৃত সিআরবি নিয়ে আর এক্কাদোক্কা না খেলে চট্টগ্রামের দুই অংশে দুইটি সরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের অনুমোদন দিলে উপকৃত হবে সাধারণ মানুষ। এটি এখন সময়ের দাবী।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহালিশহর-দেওয়ানহাট এলাকায় দখলমুক্ত ফুটপাত চাই
পরবর্তী নিবন্ধস্কুল ক্যাম্পাস থেকে বলছি