উত্তরাঞ্চলে আর খাদ্য ঘাটতি নেই, দুর্ভিক্ষও নেই : প্রধানমন্ত্রী

| সোমবার , ১৭ জানুয়ারি, ২০২২ at ১০:৫০ পূর্বাহ্ণ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের উত্তরাঞ্চলে আর খাদ্য ঘাটতি নেই, এমনকি দুর্ভিক্ষও নেই। এই অঞ্চলের সার্বিক উন্নতির যে লক্ষ্য ছিল, আওয়ামী লীগ সরকার তা পূরণ করতে ‘সক্ষম হয়েছে’। গতকাল রোববার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নবনির্মিত ‘রংপুর বিভাগীয় সদর দপ্তর কমপ্লেক্স ভবন’ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে এ কথা বলেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, রংপুর বিভাগে যে সমস্ত শাক-সবজি, তরি-তরকারি হয়, সেগুলো যেন প্রক্রিয়াজাতকরণ করে বিদেশে রপ্তানি করা যায়, আওয়ামী লীগ সরকার সে পদক্ষেপ নিচ্ছে। এদেশে আর কখনও যেন মঙ্গা দেখা না দেয়, আর কখনও দুর্ভিক্ষ যেন না হয়, এদেশের মানুষ যেন আর কষ্ট না পায়। খবর বিডিনিউজের।
অতীতে রংপুর বিভাগের মানুষের নানা সংকটের কথা তুলে ধরে ওই অঞ্চলের উন্নয়নে আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা জানান সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েই কিন্তু রংপুরবাসী এই সব সুযোগ সুবিধাগুলো পেয়েছেন, সেটা বোধ হয় ভুললে চলবে না। আমি বলব, এই অঞ্চলে এখন আর খাদ্য ঘাটতি তো নেই-ই আর দুর্ভিক্ষও নেই। কাজেই এ অঞ্চলের সার্বিক উন্নতি সেটাই আমাদের লক্ষ্য ছিল। সেটা আমরা করতে পেরেছি।
রংপুর বিভাগের সার্বিক উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এখন উদ্বৃত্ত খাদ্যের অঞ্চল হয়ে গেছে রংপুর। যেখানে একসময় খাবারের অভাবে মানুষ ধুঁকে ধুঁকে মারা যেত।
টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এই ১৩ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর যত উন্নতি হয়েছে এর আগে অনেকেই তো, বিশেষ করে রংপুরের লোকই তো ক্ষমতায় ছিল, কিন্তু রংপুরের মানুষের তেমন কোনো ভাগ্য পরিবর্তন হয়নি। তারা নিজেদের ভাগ্য গড়েছে, সাধারণ মানুষের ভাগ্য গড়েনি।
শিক্ষার উন্নয়নে নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এই অঞ্চলে শিক্ষার হার কম ছিল, কিন্তু এখানে মেধাবী ছাত্র ছিল, কাজেই সেদিকে হিসেব করে আমরা এখন পদক্ষেপ নিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী জানান, কুড়িগ্রামে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় করা হয়েছে এবং লালমনিরহাটে অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারো-স্পেস ইউনিভার্সিটি, রংপুরে বেগম রোকেয়ার জন্মস্থান পায়রাবন্ধে তার নামে একটা কমপ্লেক্স এবং ট্রেনিং সেন্টার করা হয়েছে। রংপুর বিশ্ববিদ্যালয় বেগম রোকেয়ার নামেই আমরা করে দিয়েছি, তিনিই প্রথম শিক্ষার উদ্যোগ নিয়েছিলেন বলেই আমরা কিছু লেখাপড়ার সুযোগ পেয়েছি। এ অঞ্চলের প্রত্যেকটা জেলায় কিন্তু মেডিকেল কলেজ হচ্ছে।
রংপুরের সড়ক ও রেল যোগাযোগ উন্নত করা হচ্ছে এবং যমুনা নদীর ওপর আলাদা রেল সেতু নির্মাণের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা দ্রুত রেলের ব্যবস্থা করছি, চার লেনের ঢাকা রংপুর মহাসড়ক ছয় লেনের করা হয়েছে। প্রত্যেকটি বিভাগীয় সড়ককে আমরা চার লেনের করে দিচ্ছি আর হাইওয়ে ছয় লেনের করে দিচ্ছি। রংপুরসহ সকল বিভাগে ফুড টেস্টি ল্যাবরেটরি স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সারা দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, শিল্প কারখানা করতে হবে, কিন্তু যত্রতত্র না। কৃষিজমিও রক্ষা করতে হবে, কারণ এ অঞ্চলের জমি খুবই উর্বর। আর দেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলে যেন শিল্প গড়ে ওঠে। সেই শিল্প গড়ার সময় এবং যারা বিনিয়োগ করবেন তাদের আমি বলব, এই দিকটাও লক্ষ্য রাখতে হবে। ওই অঞ্চলভিত্তিক যে সমস্ত পণ্য উৎপাদিত হয়, সেগুলো প্রক্রিয়াজাত করা এবং সংরক্ষণ করার ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, খাদ্য উৎপাদনে আমাদের যেহেতু প্রাকৃতিক দেশ, সেজন্য আমরা এখানও সাইলো নির্মাণ করে দিচ্ছি, যেখানে আমাদের খাদ্য আমরা অন্তত দুই থেকে তিন বছর রাখতে পারি, নষ্ট না হয়।
দেশের উন্নয়নে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন তিনি। আধুনিক প্রযুক্তিজ্ঞান সম্পন্ন জাতি গঠন করে বাংলাদেশকে উন্নত, সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধউষ্ণায়নে অপরিণত শিশু বেশি জন্মাচ্ছে
পরবর্তী নিবন্ধসিরাজুল ইসলাম