বইয়ের মৃত্যু নেই, বই অনন্ত যৌবনা স্রষ্টা, সৃষ্টি, শিক্ষা গবেষণা, বিজ্ঞান প্রযুক্তির প্রাথমিক উৎস বই, বই কিনে কেউ কখনো দেউলিয়া হয় না, বই যুগে যুগে জ্ঞানের ধারক ও বাহক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। বইয়ের প্রয়োজন কখনোই ফুরাবে না। বইয়ের প্রয়োজন ও চাহিদা যুগ যুগ ধরেই থাকবে। “নো মাস্ক নো সার্ভিস” এবং স্বাস্থ্য বিধি মেনে চট্টগ্রাম একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল বাংলাদেশে এই প্রথম ০১ ডিসেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মাসব্যাপী অনলাইন বাংলা বই মেলা, বই মেলার উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম একাডেমির চেয়ারম্যান সমাজ বিজ্ঞানী ড. অনুপম সেন, এই আয়োজনে বাংলাদেশে জন্মগ্রহণকারী ১৬০ জন লেখক অংশ নিয়েছেন। এদের মধ্যে যেমন বরেণ্য লেখক ছিলেন তেমন ছিলেন তরুণ লেখক। মাসব্যাপী অনলাইন বাংলা বই মেলার উল্লেখ্যযোগ্য দিক ছিল প্রতিদিন বিষয়ভিত্তিক সেমিনার। সেমিনারের উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলোর মধ্যে ছিল যেমন শিশু সাহিত্যচর্চা, চট্টগ্রামে মুক্তিযোদ্ধা লেখকদের প্রকাশনা, চট্টগ্রামে নজরুল চর্চা, বইয়ের ভবিষ্যৎ, সংগীতে চট্টগ্রাম, শিক্ষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির সমন্বয়, বাংলাদেশের প্রবন্ধ সাহিত্য, প্রেক্ষিত চট্টগ্রাম, জাতি গঠনে শিক্ষার গুরুত্ব, প্রকাশনা শিল্পে চট্টগ্রাম, চট্টগ্রামে নাট্যচর্চা ও নাট্যসাহিত্য, ডিজিটাল যুগের গ্লোবাল ভিলেজ ভ্রমণ সাহিত্য সাহিত্যে পরিবেশ চেতনা, স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে সাহিত্যের গতি প্রকৃতি ও প্রবণতা সাহিত্যে বিজ্ঞান চেতনা, চট্টগ্রামে সাহিত্য গবেষণা, রাজনীতিবিদদের সাহিত্য চিন্তা, সাহিত্যে চট্টগ্রামের নারী, আমার সাম্প্রতিক বই, কথা সাহিত্য, জাতিগঠনে শিক্ষার গুরুত্ব, কল্প বিজ্ঞান ও নিজের লেখালেখি শিক্ষা ও সংস্কৃতির সমন্বয়, চট্টগ্রামে সংগীত চর্চা, বইয়ের ভবিষ্যৎ চট্টগ্রামে নজরুল চর্চা, দক্ষিণ এশিয়ার কবিতা, চট্টগ্রামে রবীন্দ্রনাথ, চট্টগ্রামে লিটল ম্যাগাজিন চর্চা ইত্যাদি। পুরো একমাসব্যাপী অনুষ্ঠানের লাইভ সম্প্রচার করে ভূয়সী প্রশংসা অর্জন করেন অধ্যাপক সুপ্রতিম বড়ুয়া, সংগঠক কামাল উদ্দিন আহমদ ও কবি তসলিমা খাঁ। বিভিন্ন পর্বে আলোচকদের মধ্যে ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী, লেখক প্রাবন্ধিক ড. আহমেদ মওলা, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক সিরু বাঙালি, শিশুসাহিত্যিক সুজন বড়ুয়া, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. শিরীণ আখতার, প্রাবন্ধিক গল্পকার এমিলি মজুমদার, সংগীত শিল্পী অধ্যাপক মৃণালিনী চক্রবর্ত্তী, প্রাবন্ধিক অধ্যাপক বাসুদেব খাস্তগীর, প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী, সাংবাদিক ডেইজি মউদুদ, প্রফেসর ড. মোঃ আবুল কাসেম, প্রফেসর রীতা দত্ত, কবি সাংবাদিক বিশ্বজিৎ চৌধুরী, কবি সাংবাদিক আবুল কালাম বেলাল, প্রকাশক শাহ আলম নিপু, জামাল উদ্দিন, মিজানুর রহমান শামীম, নাট্যজন সনজীব বড়ুয়া, কবি সাংবাদিক বিপুল বড়ুয়া, কবি অমিত বড়ুয়া, কবি আজিজ রাহমান, শিশুসাহিত্যিক অরুণ শীল, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের চেয়ারম্যান ড. উজ্বল কুমার দেব, অধ্যাপক ড. উদিতি দাশ সোমা, কবি প্রাবন্ধিক মর্জিনা আখতার, ড. মুহম্মদ ইদ্রিস আলি, রাজনীতিবিদ এম.এ সালাম ও প্রদীপ দাশ সহ আরো অনেকে। মাসব্যাপী সার্ভার স্টেশনে দায়িত্ব পালন করেন অনুবাদক ফারজানা রহমান শিমু, সংগঠক এস এম আবদুল আজিজ, কবি গোফরান উদ্দিন টিটু ও শিশু সাহিত্যিক সৈয়দা সেলিমা আক্তার। বই মেলার ১১ তম দিনে বই মেলার আহবায়ক কবি সাহিত্যিক রাশেদ রউফ লেখক ও বইপ্রেমীদের মুখোমুখি হন। চমৎকার পর্ব ছিল এটি। ৩০ তম দিনে ছিল লেখকবৃন্দের নিজ নিজ বই নিয়ে একটা অনুষ্ঠান “আমার সাম্প্রতিক বই”। করোনাকালীন এ দুযোর্গের মধ্যে চমৎকারভাবে অনলাইন বাংলা বই মেলা সুন্দরভাবে সম্পন্ন করার জন্য চট্টগ্রাম একাডেমির প্রতি রইলো অশেষ ধন্যবাদ। বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম “অনলাইন বাংলা বইমেলা” উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।