বনবিভাগের জায়গায় অবৈধভাবে গড়ে তোলা বসতি উচ্ছেদ করতে গেলে অভিযান ঠেকাতে এক মহিলা বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। গতকাল বাঁশখালীর দক্ষিণ জলদী সংরক্ষিত বনভূমির দখল উচ্ছেদ অভিযানে এ ঘটনা ঘটে। অভিযানে ১৫–২০ জন মহিলা বাধা দেন বলেও জানায় বন বিভাগ।
অভিযান পরিচালনাকারী জলদী অভয়ারণ্য রেঞ্জের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনিসুজ্জামান শেখ জানান, ৮ নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ জলদী ভিলেজার পাড়া মুসলিমাবাদ এলাকায় বনের জায়গায় নতুন ঘর নির্মাণ করেন স্থানীয় জামাল উদ্দিনের স্ত্রী নাছিমা আক্তার। তাকে বন বিভাগের পক্ষ থেকে ঘর নির্মাণ না করতে বাধা প্রদান করা হলেও তিনি পুনরায় ঘর নির্মাণ করেন। এদিকে গতকাল শনিবার সকালে বন বিভাগের পক্ষ থেকে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করতে গেলে সেখানে অবৈধভাবে বসবাসকারী ও সংঘবদ্ধ ১৫/২০ জন মহিলা বাধা দেন। পরে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঘর নির্মাণকারী নাছিমা আক্তার বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। নাছিমা আক্তারের স্বামী জামাল উদ্দিন ও তার ভাই মোক্তার হোসাইন বলেন, বিগত ১৫/২০ বছর যাবৎ আমাদের ঘর ছিল এই জায়গায়। গত ২–৩ বছর পূর্বে হাতির অত্যাচারে আমরা চট্টগ্রাম শহরে চলে যাই। ইতিপূর্বে আমরা শহর থেকে এসে ঘর তৈরি করতে গেলে বন বিভাগ আমাদের বাধা দেয়। পরবর্তীতে ৫০ হাজার টাকার চুক্তির ভিত্তিতে বন বিট কর্মকর্তাকে ২০ হাজার টাকা প্রদান করি। বাকি ৩০ হাজার টাকা দিতে দেরি হওয়ায় তারা আমাদের ঘর উচ্ছেদ করতে এসে নাছিমা আক্তারকে মারধর করেন। এই অপমান সহ্য করতে না পেরে সে নিজে বিষপান করে বলে তারা জানান।
এ ব্যাপারে জলদী অভয়ারণ্য রেঞ্জের ভারপ্রাপ্ত রেঞ্জ কর্মকর্তা আনিসুজ্জামান শেখ বলেন, পৌরসভার দক্ষিণ জলদী সংরক্ষিত বনভূমির ওপর অবৈধভাবে ঘর নির্মাণ করেন নাছিমা আক্তার। বিষয়টি জানার পর বনবিভাগের পক্ষ থেকে আমরা ৩ বার উচ্ছেদ অভিযানে গেলে ১৫–২০জন মহিলা এসে আমাদের কাজে বাধা দেয়। আমরা বাধ্য হয়ে ফিরে আসি। আমরা যাতে তাদের দখল উচ্ছেদ করতে না পারি তার জন্য নাছিমা নামে এক মহিলা বিষপান করে ঘটনাকে ভিন্নখাতে নেওয়ার চেষ্টা করেন এবং বিট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা’ অপবাদ রটাচ্ছেন। বন বিভাগ এই ঘরগুলো উচ্ছেদ করবে এবং সরকারি কাজে বাধা দেয়ায় তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে জানান তিনি। তিনি আরো বলেন, বিষয়টি বনবিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এবং উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।