উচ্ছেদেও থামছে না দখল

শেরশাহে সড়ক ফুটপাতে চলছে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ৯ জুন, ২০২১ at ৫:৫৮ পূর্বাহ্ণ

আবারো দখল হতে শুরু করেছে শেরশাহ এলাকার সড়ক ও ফুটপাত। রাতের অন্ধকারে ফুটপাতের উপর নির্মাণ করা হচ্ছে পাকা ও স্থায়ী দোকান। ইতোমধ্যে কয়েকটি দোকান চালুও হয়েছে। আরো অর্ধশতাধিক নির্মাণাধীন রয়েছে। এমন পরিস্থিতে প্রশ্ন ওঠেছে, অবৈধ দখলদারদের খুঁটির জোর কোথায়? সিটি কর্পোরেশনই বা নীরব কেন? স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন এসব দেখেও না দেখার ভান করে আছে কেন?
জানা গেছে, গত বছরের ১৯ ও ২০ অক্টোবর চসিক শেরশাহ এলাকায় পর পর দুদিন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে। প্রথমদিন শেরশাহ মেইন রোড, শিল্প এলাকা রোড, আবাসিক এলাকা রোডের প্রায় দুই শতাধিক অবৈধ দোকানপাট ও দখলদারকে উচ্ছেদ করা হয়। পরদিন শেরশাহ আবাসিক এলাকার সড়ক, আর্মড ব্যাটেলিয়ন সড়ক, বিআরটিসি ডিপো সড়ক থেকে অন্ধ কলোনি, বাংলাবাজার সড়ক, বায়েজিদ থানা সড়ক, তারাগেইট এলাকা, শেরশাহ গোল চত্বর মিনারসহ আশেপাশের এলাকা থেকে আরো দুই শতাধিক স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছিল।
অভিযানের পর দীর্ঘদন দখলমুক্ত থাকে ওই এলাকার সড়ক ও ফুটপাত। নির্বিঘ্নে ফুটপাতে হাঁটার সুযোগ হয় পথচারীদের। কিন্তু গত কিছুদিন ধরে আবারো পুরোনো রূপে ফিরে যেতে শুরু করেছে ফুটপাত। চলছে ফুটপাতের উপর আধাপাকা দোকান নির্মাণ। ইতোমধ্যে শেরশাহ মোড় থেকে শেরশাহ মিনার পর্যন্ত সড়কের দুপাশের ফুটপাত দখল হয়ে গেছে। সেখানে ইটের অবকাঠামো করে টিনের ছাদ দিয়ে নির্মাণ করা হয় দোকান। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, যাদের উচ্ছেদ করা হয়েছিল তারাই এসব দোকান নির্মাণ করছে। এসব অবৈধ দখলদারদের বেশিরভাগই ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী।
গতবার উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া চসিকের স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট জাহানারা ফেরদৌস দৈনিক আজাদীকে বলেন, আবারো আমরা উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করব। ফুটপাত দখলমুক্ত করে মানুষের চলাচলের উপযোগী করার বিষয়ে মেয়র মহোদয়ের নির্দেশনা রয়েছে। সেই আলোকে নিয়মিত আমরা কোথাও না কোথাও অভিযান পরিচালনা করি। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে আমাদের অভিজ্ঞতা হয়েছে, শেরশাহ ছাড়াও শহরের বিভিন্ন জায়গায় উচ্ছেদের কিছুদিন পর আবারো দখল হয়ে যায়। আসলে উচ্ছেদের পর দখলমুক্ত জায়গাটি উন্মুক্ত রাখার ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষকেও সহযোগিতা করতে হবে। তা নাহলে উচ্ছেদ-দখল চলতে থাকবে। ফুটপাত সিটি কর্পোরেশনের মালিকানাধীন। অবৈধ দখলদার উচ্ছেদের পর সেখানে কাঁটাতারের বেড়া দেয়া সম্ভব না। এতে লোকজন হাঁটতে পারবে না। এক্ষেত্রে উচ্ছেদের পর কিভাবে পুনরায় দখল হওয়া থেকে ফুটপাতকে রক্ষা করা যায় সে বিষয়ে সুধিজনদের কাছ থেকে আমরা পরামর্শ চাচ্ছি।
একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের হিসাব বিভাগে কর্মরত ইমরান আজাদীকে বলেন, সিটি কর্পোরেশন একটু আন্তরিক হলে সাধারণ মানুষ তাদের হাঁটার জায়গা ফুটপাত ফেরত পাবে। এদিকে চসিক সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে প্রথম শেরশাহ এলাকা থেকে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদে উদ্যোগ নেয় চসিক। ওই সময় অবৈধ দখলদারদের সরে যেতে নোটিশও দেয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে গত বছরের ১৩ অক্টোবর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে তিনদিনের মধ্যে অবৈধ দখলদারদের সরে যেতে নির্দেশনা দেয়া হয়। মাঝখানে বিভিন্ন সময়ে অভিযান চালায়। ২০১৯ সালের ১৩ মে শেরশাহ কলোনি সড়কের ওপর অবৈধভাবে গড়ে ওঠা স্থাপনা উচ্ছেদের সময় চসিকের ভ্রাম্যমাণ আদালতের উপর হামলা হয়েছিল। এতে একজন পুলিশ আহত এবং চসিকের চারটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। গত বছরের ২০ অক্টোবরও বাধা দেয়ার চেষ্টা করে স্থানীয়রা। এসময় স্থানীয়দের পক্ষে নেতৃত্ব দেয়া একজনকে আটক করে দিনভর নিজেদের হেফাজতে রাখে র‌্যাব।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপিছু ছাড়ছে না দুর্গতি
পরবর্তী নিবন্ধএক মাসে সর্বোচ্চ শনাক্ত ও মৃত্যু