উচ্চ শিক্ষা নিয়ে ফাইল সইয়ের মানসিকতা পরিহার করতে হবে

জেলা পরিষদের বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপমন্ত্রী

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ২৪ অক্টোবর, ২০২০ at ৯:০৭ পূর্বাহ্ণ

শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, নতুন প্রজন্মকে জীবনভিত্তিক শিক্ষা অর্জনের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। উচ্চশিক্ষা অর্জন করে শুধু চেয়ার-টেবিলে বসে ফাইল সই করার মানসিকতা পরিহার করে প্রকৃত শিক্ষা অর্জন করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর চিন্তা-চেতনায় সর্বাগ্রে ছিল শিক্ষা। এ কারণেই তিনি পঞ্চাশের দশকে ছাত্রলীগের দায়িত্বে থাকাকালে পূর্ব পাকিস্তানে প্রাথমিক শিক্ষা বিস্তারের জন্য আন্দোলন করে কারাবরণ করেন। বঙ্গবন্ধুর এ চেতনাকে ধারণ করে সকলকে শিক্ষা অর্জনে ব্রতী হতে হবে। এক্ষেত্রে সকলকে প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে যে শিক্ষা দুর্নীতিমুক্ত অগ্রসর জাতি গঠনের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। তিনি শিক্ষা ক্ষেত্রে জেলা পরিষদের গৃহীত কার্যক্রমের প্রশংসা করেন। গতকাল শুক্রবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে আয়োজিত জেলা পরিষদের শিক্ষাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দক্ষতাভিত্তিক প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষার ওপর জোর দিয়েছেন। এছাড়াও শিক্ষাকে যুগোপযোগীভাবে এগিয়ে নিতে নানামূখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ সালামের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রদীপ চক্রবর্ত্তী। চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের উপসহকারী প্রকৌশলী অপু কুমার বড়ুয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাব্বির ইকবাল।
জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম বলেন, শিক্ষার কোন বিকল্প নেই। শিক্ষা একান্ত নিজস্ব। শিক্ষার অংশীদার নেই, উত্তরাধিকার নেই। শিক্ষা চুরি হয়না, ছিনতাই হয় না, ডাকাতি হয় না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষার উৎসাহীকরণে বছরের প্রথম দিনেই শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিচ্ছেন। পাশাপাশি মেধাবী, গরিব ও অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি দিচ্ছেন। তারই অংশ হিসেবে জেলা পরিষদের এই শিক্ষা বৃত্তি প্রদান।
জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাব্বির ইকবাল স্বাগত বক্তব্যে বলেন, বর্তমান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ২০১১ সালে প্রশাসক হিসেবে এবং পরবর্তীতে চেয়ারম্যান হিসেবে জেলা পরিষদের দায়িত্ব গ্রহণ করার পর পরিষদের বিপুল পরিমাণ অবৈধ দখলে থাকা ভূ-সম্পত্তি উদ্ধার করেন। ফলে আয় বিগত দশ বছরে দশগুণের চেয়েও বেশি বৃদ্ধি করেছেন বিধায় শিক্ষা ক্ষেত্রে বর্তমানে অনেক বেশি অবদান রাখতে পারছে।
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর প্রদীপ চক্রবর্ত্তী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, জেলা পরিষদের শিক্ষাবৃত্তি পেয়ে তোমরা দেশের কাছে ঋণী হয়ে গেলে। এখন তোমাদের সুশিক্ষিত হয়ে দেশের কল্যাণে কাজ করতে হবে। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের উপসচিব মোহাম্মদ বেলাল উদ্দিন, জেলা পরিষদের সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম, পরিষদের সদস্য কাজী আবদুল ওহাব, শেখ মোহাম্মদ আতাউর রহমান, জাফর আহমেদ, শওকত আলম শওকত, আ ম ম দিলসাদ, মোহাম্মদ ইউনুছ, দিলোয়ারা ইউসুফ, রেহানা ফেরদৌস চৌধুরী, অ্যাডভোকেট উম্মে হাবিবা, জেলা পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, গরীব ও মেধাবী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দ। উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ প্রতি অর্থবছরে রাজস্ব বাজেটের একটি অংশ গরীব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের অর্থ সহায়তা প্রদান করে থাকে। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও কলেজ, মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩২৪ জন শিক্ষার্থীদের মধ্যে কলেজ পর্যায়ে প্রতি জনে ৮ হাজার টাকা এবং বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে প্রতি জনে ১০হাজার টাকা হারে সর্বমোট ২৭ দশমিক ৮০ লক্ষ টাকা বৃত্তি প্রদান করা হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমাতৃত্ব ভাতাভোগীদের নিয়ে হেলথ ক্যাম্প
পরবর্তী নিবন্ধসংসারে পেঁয়াজের ঝাঁজ