কক্সবাজারের চকরিয়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৬৮ সালে। আশির দশকের দিকে জাতীয়করণ হওয়া নারী শিক্ষার একমাত্র সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে জর্জরিত হয়ে পড়েছে নানা সমস্যায়। ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক এবং একাডেমিক ভবনটিও। তন্মধ্যে একাডেমিক ভবনটি ভেঙে ফেলা হলেও মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে প্রশাসনিক কার্যক্রম চালানো হচ্ছে অনেক পুরোনো ভবনটিতে। এদিকে নারী শিক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসলেও বেশ কয়েক বছর ধরে এই বিদ্যালয়ের হাজারো শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকেরা প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টিপাত শুরু হলে দুর্ভোগের শিকার হয়ে আসছেন।
ভুক্তভোগীরা বলেছেন, বেশ কয়েক বছর আগেও একমাত্র সরকারি এই বালিকা বিদ্যালয়টির খেলার মাঠ বর্ষাকালে পানির নিচে তলিয়ে থাকতো না। শ্রেণি কক্ষসহ ভবনগুলোর নিচতলায় পানি প্রবেশ করতো না। কিন্তু পৌরসভার কর্তৃপক্ষের অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা, সেই সাথে বিদ্যালয়ের চারপাশের ব্যক্তি মালিকানার জায়গাগুলো অনেক উঁচু করে ভরাটের মাধ্যমে বাণিজ্যিক স্থাপনা ও বহুতল ভবন তৈরি করায় বাউন্ডারিসহ বালিকা বিদ্যালয়টি অনেকটা থলিতে পরিণত হয়েছে। এই কারণে বৃষ্টিপাত শুরু হলেই পুরো বিদ্যালয়ের মাঠ, একাধিক ভবনের নিচ তলা হাঁটু পরিমাণ পানিতে তলিয়ে থেকে ভয়াবহ জলাবদ্ধতায় নিমজ্জিত হয়। এই পরিস্থিতিতে বিদ্যালয়টির প্রায় হাজারো নারী শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক–কর্মচারীদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
গতকাল সোমবার সরজমিন গেলে কথা হয় ভুক্তভোগী শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে। তারা জানান, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টিপাত শুরু হলে সেই পানি জমতে জমতে কয়েক ফুট বৃদ্ধি পায়। এতে একনাগাড়ে কয়েকমাস পর্যন্ত ভয়াবহ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। দীর্ঘ সময় ধরে এই পানি জমে থাকার কারণে শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক–কর্মচারীরাও পানিবাহিত নানা রোগের শিকার হয়ে আসছেন। এবারের বর্ষা মৌসুমে একই পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে সকলকে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) পান্না বড়ুয়া দৈনিক আজাদীকে জানিয়েছেন, নারী শিক্ষার একমাত্র সরকারি এই বালিকা বিদ্যালয়টিতে যোগদান করেছেন গত বছরের বর্ষাকালে। তখন থেকেই বিদ্যালয়টির প্রধান সমস্যা জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে উপজেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে পত্র দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই সমস্যাটি এখনও সমাধান না হওয়ায় সকলকে এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম চালিয়ে নিতে হচ্ছে। প্রতিদিন অর্থের বিনিময়ে যন্ত্র ভাড়া করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌরসভার প্রশাসক মোহাম্মদ আতিকুর রহমান দৈনিক আজাদীকে বলেন, নারী শিক্ষার একমাত্র সরকারি বালিকা বিদ্যালয়টির এমন দুরাবস্থার চিত্র সরজমিন পরিদর্শন করা হবে। এরপর প্রথমে জলাবদ্ধমুক্ত করে বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনার কার্যক্রম শুরু করা হবে।