সৃষ্টি রয়েছে তোমা পানে চেয়ে, তুমি আছ চোখ বুজে’- কাজী নজরুল ইসলামের কবিতার লাইনগুলো পড়তেই মনে পড়ে গেল ১৯৯৪ সালে মাকসুদুল হকের ‘বঙ্গাব্দ ১৪০০’-এলবামের সেই গানটি ‘গঠিত হয়েছে এক উচ্চ পদস্থ কমিটি’। আজ থেকে ২৫ বছর আগে যে কমিটি গঠন করার কথা তা আজও হয়ে উঠেনি। যতই দিন যাচ্ছে করোনা মহামারির চেয়ে আরও ভয়ংকর রূপে আত্মপ্রকাশ করছে ‘পৈচাশিক ও নির্মম মানসিকতা’ নামের ভাইরাস। সংবাদ মাধ্যমের কল্যাণে যা আমাদের দৃষ্টিগোচর হচ্ছে তা রীতিমত লোমহর্ষক! কোন সেক্টরের কথা বলবো? সবইতো এক! প্রথমেই নারীর কথা বলি। ঘরে বাইরে সব জায়গায় নারী অবলা।স্বামী-সন্তান থেকেও নারী আজ অসহায়। তথাকথিত বিবেকবান মানুষদের দ্বারা গঠিত এ সমাজে নারীর নিশ্চয়তা নেই। কখনো রাতের আঁধারে কখনো প্রকাশ্য দিবালোকে নারীকে হেনস্তা হতে হয়। ধর্ষিতা নারীর সাথে সাথে পুরো সমাজব্যবস্থা-ই ধর্ষিত হচ্ছে। তাহলে এ লজ্জা কার? প্রায় সময় স্বীকার /অস্বীকারের নাটক শেষ হবার পর অন্যখাতে ঘটনা প্রবাহ নিয়ে যাওয়া হয়। তৎক্ষনাৎ সর্বোচ্চ শাস্তি না দিয়ে বলা হয় – ‘উচ্চ পদস্থ তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে’। প্রতিনিয়ত সড়ক ও নৌ দুর্ঘটনায় শিশু, আবাল, বৃদ্ধ, বনিতা প্রাণ হারাচ্ছে। ত্রুটির জায়গাগুলো কেউ খতিয়ে দেখে না। এর কোনো বিচার নেই। সাময়িক শোক, মানববন্ধন! কোনো দুর্ঘটনা ঘটার পরই সেই কমিটি গঠনের জন্য বোধোদয় হয়। তাই দয়া করে ‘উচ্চ পদস্থ’ শব্দটি ব্যবহার না করে একটি নিঃস্বার্থ, নির্ভেজাল, সত্যনিষ্ঠ যোগ্য কমিটি প্রতিটি সেক্টরে গঠন করা উচিত। মানুষের বিপদের আগেই যেন সেই কমিটি যথার্থ ব্যবস্থা নিতে পারে। তবেই দেশ ও দশের শান্তি। নতুবা অনাচার,অকল্যাণ,অমঙ্গল থেকে দেশ রক্ষা কঠিন হয়ে পড়বে।
লেখক: কবি ও সংগীতশিল্পী