আফ্রিকান দেশ উগান্ডা। ক্রিকেটেও নতুন। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের উত্তাপটা বেশ ভালই টের পাচ্ছে দলটি। টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলতে এসে যেন নতুন করে ক্রিকেটটা রপ্ত করতে হচ্ছে। নিজেদের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৫৮ রান করতে পেরেছিল উগান্ডা। যদিও দ্বিতীয় ম্যাচে পাপুয়া নিউগিনিকে ৭৭ রানে অল আউট করে দিয়ে ঐতিহাসিক এক ম্যাচ জিতেছিল উগান্ডা। কিন্তু তৃতীয় ম্যাচে এসে এই উগান্ডাকে নিয়ে ক্রিকেট খেলল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ক্রিকেটটা কি জিনিস সেটা যেন শেখাল উগান্ডাকে। এই ক্রিকেট দিক্ষার দিনে মাত্র ৩৯ রানে অল আউট হয়ে লজ্জার রেকর্ড গড়ল আফ্রিকার দেশটি। সে সাথে ওয়েস্ট ইন্ডিজ জয়টা পেল ১৩৪ রানের বিশাল ব্যবধানে। উগান্ডার করা ৩৯ রান টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এটি যৌথভাবে সর্বনিম্ন। ২০১৪ আসরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৩৯ রানে থেমেছিল নেদারল্যান্ডস। অপরদিকে ক্যারিবিয়ানদের চেয়ে বিশ্বকাপে বড় জয় আছে কেবল একটি। ২০০৭ আসরে কেনিয়াকে ১৭২ রানে হারিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। টি–টোয়েন্টিতে এটাই ওয়েস্ট ইন্ডিজের সবচেয়ে বড় জয়। ২০১৪ বিশ্বকাপে মিরপুরে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৮৪ রানে পাওয়া জয়টি ছিল আগের রেকর্ড। প্রভডেন্স স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজের উদ্বোধনী জুটি ভাঙ্গে পঞ্চম ওভারে। ৮ বলে ১৩ রান করে ফিরেন ব্র্যান্ডন কিং। আরেক ওপেনার জনসন চার্লস উইকেটে ছিলেন লম্বা সময়। কিন্তু সেভাবে তার ইনিংস গতি পায়নি কখনও। ৪২ বলে দুই ছক্কা ও চারটি চারের সাহায্যে ৪৪ রান করে ফিরেন তিনি। ভালো শুরু করলেও নিজেদের ইনিংস বড় করতে পারেননি নিকোলাস পুরান, অধিনায়ক রভম্যান পাওয়েল ও শেরফেইন রাদারফোর্ড। পুরান ২২, পাওয়েল ২৩ এবং রাদারফোর্ড ২২ রান করে ফিরেন। তবে শেষ দিকে ১৭ বলে ৬টি চারের সাহায্যে ৩০ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলেন আন্দ্রে রাসেল। আর তাতেই ১৭৩ রান সংগ্রহ করে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১৭৪ রান তাড়া করে ম্যাচ জিততে পারবে উগান্ডা সেটা ছিল কল্পনারও বাইরে। তবে যতদূর যাওয়া যায় সেটাই হয়তো ছিল লক্ষ্য। কিন্তু সেটাও হয়নি। বেশিদূর যেতে পারলনা আফ্রিকার দেশটি। রান তাড়া করতে নেসে ক্যারিবীয়ান স্পিনার আকিল হোসেনের ঘূর্ণিতে শুরুতেই লন্ডভন্ড উগান্ডা। ইনিংসের দ্বিতীয় বলে রজার মুকাসাকে এলবিডব্লিউ করে তান্ডব শুরু করেন আকিল। বাঁহাতি এই স্পিনার পরে গুঁড়িয়ে দেন উগান্ডার মিডল অর্ডারও। শুরুটা আকিল করলেও পরের উইকেটটা নেন শেফার্ড। তার শিকার আরেক ওপেনার সাইমন। এরপর শুরু আকিল হোসেনের ঘূর্ণি জাদু। প্রায় প্রতি ওভারেই উইকেট নিয়েছেন এই স্পিনার। নয় নাম্বারে ব্যাট করতে নামা জুমা মিয়াজির অপরাজিত ১৩ রান ছাড়া উগান্ডার আর কোন ব্যাটারই যেতে পারেনি দুই অংকের ঘরে। আর তাতেই ৩৯ রানে অল আউট হয়ে যায় উগান্ডা মাত্র মাত্র ১২ ওভারে। ১১ রানে ৫ উইকেট নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সফলতম বোলার আকিল হোসেন। ক্যারিয়ারে এই প্রথম পেলেন পাঁচ উইকেট। আগের সেরা ছিল ২০২২ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ব্রিজটাউনে ৩০ রানে ৪ উইকেট। ৩ ওভারে মাত্র ৬ রানে ২ উইকেট নেন পেসার আলজারি জোসেফ। টানা ২ জয়ে গ্রুপে দুই নম্বরে রয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এত বড় জয়েও পেছনে ফেলতে আফগানিস্তানকে। রান রেটে এগিয়ে থেকে চূড়ায় রাশিদ খানের দল। এক জয়ে ২ পয়েন্ট নিয়ে তিনে উগান্ডা। গ্রুপে এখনও কোনো জয় পায়নি নিউজিল্যান্ড ও পাপুয়া নিউ গিনি।