উখিয়ায় পুলিশ-রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী ঘণ্টাব্যাপী বন্দুকযুদ্ধ

আমেরিকান এসল্ট রাইফেল, পিস্তল ও গোলাবারুদ উদ্ধার, আটক ২

উখিয়া প্রতিনিধি | শনিবার , ১৮ জুন, ২০২২ at ৬:০৮ পূর্বাহ্ণ

উখিয়ায় আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) ও রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের মধ্যে ঘণ্টাব্যাপী বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার রাত ১০ টার পর এ ঘটনা ঘটে। এতে একটি আমেরিকান অটোমেটিক এসল্ট রাইফেল, বিদেশি পিস্তল ও বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। গত এক সপ্তাহে গুরুতর অপরাধের ঘটনায় রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি স্থানীয় জনগোষ্ঠীও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।

গতকাল শুক্রবার সকালে উখিয়া সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে ৮ এপিবিএন এর অধিনায়ক (এসপি) এ সব ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে রোহিঙ্গাদের একাধিক গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে অপতৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে ক্যাম্পের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা কাউকে ছাড় দিচ্ছি না।

এপিবিএন অধিনায়ক মোঃ সিহাব কায়সার খান বলেন, উখিয়ার বালুখালী-১৮ নম্বর ক্যাম্প থেকে ১৫/১৬ জনের একদল রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী ক্যাম্প-২০ এর দিকে যাওয়ার গোয়েন্দা তথ্য ছিল। এমন খবরের ভিত্তিতে অধিনায়ক ও বালুখালী ময়নারঘোনা পুলিশ ক্যাম্প কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার আশফাকুজ্জামানের নেতৃত্বে একাধিক টিম রাত ৯ টার দিকে অভিযানে যান।

এপিবিএন অধিনায়ক বলেন, রাত ১০ টার পরে ক্যাম্প ১৮ এর এম/১৫ এর সাব ব্লকের রাস্তার পাশে এপিবিএনের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা গুলি ছুড়ে। এপিবিএনও পাল্টা গুলি ছুড়ে। ঘণ্টাব্যাপী বন্দুকযুদ্ধের এক পর্যায়ে ধাওয়ার মুখে সন্ত্রাসীরা গলিপথ ক্যাম্প-২০ এর দিকে পালিয়ে যায়। পরে ক্যাম্পের গলিপথে সন্ত্রাসীদের ফেলে যাওয়া একটি ব্যাগ তল্লাশি চালিয়ে আমেরিকান তৈরি একটি অটোমেটিক এসল্ট রাইফেল (ঈঙখঞ ঐঅজঞঋঙজউ, টঝঅ) এবং ৪৯২ রাউন্ড তাজাগুলি উদ্ধার করা হয়।

এপিবিএন অধিনায়ক বলেন, ক্যাম্প-১৮ থেকে ধাওয়া খেয়ে কিছু সশস্ত্র রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী ক্যাম্প – ১৫ এ আশ্রয় নেয়ার খবর পাওয়া যায়। ক্যাম্প-১৫ জামতলী পুলিশ ক্যাম্প কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ রবিউল ইসলামের নেতৃত্বে একযোগে অভিযান পরিচালনা করা হয়।

শুক্রবার রাত দেড়টায় ১৫ নম্বর ক্যাম্পের ই/৬ ব্লক থেকে মোঃ হোসেন (৩০) ও সি/১ ব্লক থেকে জাহেদ হোসেন (৩০) কে আটক করা হয়। তারা পুলিশের ধাওয়ার মুখে ক্যাম্প ১৮ থেকে পালিয়ে এসে আটক মোঃ হোসেনের ঘরে আশ্রয় নেয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, ৩ রাউন্ড গুলি ও ৬৩০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করার কথা জানান এপিবিএন অধিনায়ক।

স্থানীয় পালংখালী ইউপি চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ক্যাম্পে মাদকসহ নানা স্বার্থে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট সংঘাতে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এই গ্রুপগুলোর সঙ্গে মিয়ানমারের যোগাযোগ থাকার দাবি করেছেন কেউ কেউ।

আবার অনেকে এর পেছনে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর ইন্ধন থাকার অভিযোগ তুলেছেন। তাদের দাবি, রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর অস্ত্রের প্রধান উৎস মিয়ানমার। তাছাড়া সহায় সম্বল ফেলে পাঁচ বছর আগে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের হাতে কীভাবে এত অস্ত্র এলো প্রশ্ন অনেকের!

পূর্ববর্তী নিবন্ধমোটরসাইকেল চুরি করতে ছাত্রলীগ নেতার বাড়িতে ছাত্রদল নেতা
পরবর্তী নিবন্ধবন্যায় ভাসছে সিলেট