ঈর্ষণীয় সাফল্যের সঙ্গে বাড়ছে চ্যালেঞ্জও

| শনিবার , ৮ অক্টোবর, ২০২২ at ৫:৪৬ পূর্বাহ্ণ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়তার প্রশংসা করতেই হয়। তাঁর আত্মবিশ্বাসের আত্ম-উদ্বোধন ঘটে বহু আগেই। তবে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে গণভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে একজন সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে যে কথা তিনি বলেছেন, তাতে যেমন তাঁর মানসিক দৃঢ়তার পরিচয় মেলে, তেমনি স্বচ্ছতার চিত্র ভেসে ওঠে। তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগের আগামী সম্মেলনে একজন কাউন্সিলরও যদি তাঁকে দলের নেতৃত্বে দেখতে না চান, তাহলে তিনি বিদায় নিতে প্রস্তুত আছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুধু বাংলাদেশের রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে নয়, বিশ্বের অন্যতম সর্বোচ্চ ক্ষমতাশালী ব্যক্তি হিসেবেও পরিগণিত। ২০২০ সালে ফোর্বস সাময়িকী একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ১০০ নারীর তালিকায় তাঁর অবস্থান ছিল ৩৯তম, ২০১৯ সালে তার অবস্থান ছিল ২৯তম, ২০১৮ সালে ২৬তম এবং ২০১৭ সালে ৩০তম। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক ফরেইন পলিসি নামক সাময়িকীর করা বিশ্বব্যাপী শীর্ষ ১০০ বৈশ্বিক চিন্তাবিদদের তালিকায় শেখ হাসিনা জায়গা করে নিয়েছেন। শেখ হাসিনা এখন বাংলাদেশের মর্যাদার প্রতীক। তিনি আজ সারা পৃথিবীতে সফলতার উজ্জ্বল উদাহরণ। তাঁর সুযোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ পৃথিবীতে জায়গা করে নিয়েছে মর্যাদার অনন্য আসনে। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার মূল চাবিকাঠি যাঁর হাতে, তিনি হলেন শেখ হাসিনা।
অল্প ক’দিন আগে মর্যাদাপূর্ণ মার্কিন সংবাদপত্র ওয়াশিংটন পোস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করে শিক্ষার সমপ্রসারণ এবং দারিদ্র্য বিমোচনে উল্লেখযোগ্য সাফল্যের পাশাপাশি নারীর ক্ষমতায়নে তার অক্লান্ত প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেছে। সমপ্রতি নর্দার্ন ভার্জিনিয়ার হোটেল রিটজ-কার্লটনের বলরুমে নেয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি সাক্ষাৎকারের ওপর ভিত্তি করে কলামিস্ট পেটুলা ডভোরাক’র নিবন্ধটি এই মার্কিন দৈনিকে প্রকাশিত হয়।
নিবন্ধে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বলিষ্ঠ নেতৃত্বের পাশাপাশি বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশকে একটি সম্মানজনক স্থানে নিয়ে আসার জন্য শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করা হয়।
বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীকে আশ্বস্ত করে বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি বেশ শক্তিশালী অবস্থানে থাকায় উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী দিক বিবেচনা করে, কোনো ঝুঁকির মধ্যে নেই। আমি আপনাদের সকলকে নিশ্চিত করতে পারি যে উদ্বেগের কিছু নেই। সরকার সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে অর্থনীতিকে প্রাণবন্ত করতে সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণের যে কোনো ধরনের দুর্ভোগ কমাতে তারা বিষয়টিতে মনোযোগ দিয়েছেন। তিনি বলেন, চিন্তার কোনো বিষয় নেই। আমরা সবাই যদি মনে করি এটা আমাদের দেশ এবং আমাদের সবাইকে একসঙ্গে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। তিনি বলেন, যেকোন ক্ষেত্রেই বাংলাদেশের কোন রিস্ক নেই, এটুকু আমি কথা দিতে পারি।
এ কথা সত্যি যে, আকাশচুম্বি চ্যালেঞ্জ আর একের পর এক ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে তিনি ছুটে চলেছেন তাঁর কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে। রচনা করে চলেছেন অগ্রগতির নতুন মাইলফলক। তাঁর সুযোগ্য নেতৃত্বে সৃষ্টি হচ্ছে নতুন নতুন সাফল্য-গাথা।
অর্থনীতি বিশ্লেষকরা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে খাদ্য নিরাপত্তা, সমুদ্র বিজয়, শিক্ষা, স্বাস্থ্য খাতের অগ্রগতি, শান্তি চুক্তি, নারীর ক্ষমতায়ন, শতভাগ বিদ্যুতায়ন, ডিজিটাল পদ্ধতির ব্যবহার, অর্থনৈতিক উন্নতি ইত্যাদি ক্ষেত্রে ঈর্ষণীয় সাফল্য এসেছে। বিশ্বের প্রভাবশালী দেশগুলো বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও চীনের সাথে সম্পর্কের ভারসাম্য রক্ষা করে উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখেছেন। জঙ্গিবাদের কারণে মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে ইন্দোনেশিয়া ও পাকিস্তান সংকটে রয়েছে সেখানে জঙ্গিবাদ মোকাবেলা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিস্ময় সাফল্য দেখিয়েছেন।’ তাঁর একক সিদ্ধান্তে ও পরিচালনায় নির্মিত হয়েছে গৌরবের প্রতীক পদ্মা সেতু। মেট্রোরেল, কর্তফুলী টানেলসহ দেশের চলমান আরো কয়েকটি মেগা প্রজেক্ট জনগণের জন্য উন্মুক্ত হলে দেশে আরো দ্রুত উন্নয়নের জোয়ার বইবে এবং জনগণের জীবন যাত্রার মান বাড়বে বলে সকলের মতো আমরাও আশাবাদী। বলা যায়, উন্নয়নের ক্ষেত্রে ঈর্ষণীয় সাফল্য এসেছে তাঁর হাতেই।
বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশকে একটি সম্মানজনক স্থানে নিয়ে আসার জন্য শেখ হাসিনার অবদান অপরিসীম। তাঁর নেতৃত্বে টানা কয়েক বছর ক্ষমতায় আওয়ামী লীগ। তবে এই ঈর্ষণীয় সাফল্যের সঙ্গে বাড়ছে চ্যালেঞ্জও। বাড়ছে ঝুঁকিও। ঝুঁকি মোকাবেলা করে তাঁকে চলতে হচ্ছে। আমরা মনে করি, তাঁর নেতৃত্বেই একের পর এক রচিত হবে উন্নয়নের সাফল্যগাথা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ৭৮৬
পরবর্তী নিবন্ধএই দিনে