ঈদ মানে খুশি, ঈদ মানে আনন্দ। জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে এই ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে পড়ুক সবার মাঝে। বছরের এই উৎসবকে উপলক্ষ করে কর্মজীবনের বিরতিতে আনন্দ ভাগাভাগী করার জন্য নাড়ীর টানে স্বজনদের কাছে ছুটে যান অধিকাংশ মানুষ। উৎসব–পর্বনে এটাই বাঙালি সংস্কৃতির নিয়মিত অংশ। আবার কেউ কেউ এই ছুটিতে পর্যটক হিসেবে দেশের দর্শনীয় বিভিন্ন স্থান, পরিবেশ ও প্রকৃতি উপভোগ করতে ভ্রমণেও যান। যার কারণে দেশের অভ্যন্তরীণ রেলপথ, সড়কপথ, নৌ–পথে যোগাযোগ ব্যবস্থায় তুলনামূলক যাত্রীদের চাপ বেশি হয়। এই যাওয়া এবং ফিরে আসার ক্ষেত্রে পথিমধ্যে অনেকরই তড়িঘড়ি করার প্রবণতা দেখা যায়। নিজের নিরাপত্তার স্বার্থে এটি মোটেও উচিত নয়। কেননা, অসর্তকতায় প্রায় প্রতিবছর ঠিক এই সময়টাতে দেশের কোথাও না কোথাও প্রাণঘাতি দুর্ঘটনা হয়ে থাকে। তাই ঈদে যাওয়া এবং ঈদের পরে মানুষের ঘরে ফিরে আসা যাতে স্বস্তিদায়ক হয়, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবার সর্বোচ্চ সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে।
প্রতি বছরই ঈদ উৎসবকে উপলক্ষ করে কিছু সুযোগ সন্ধানী মানুষ তাদের স্বার্থ উদ্ধারে নেমে পড়ে। মানুষের দূর্বলতার সুযোগে তারা টিকিট কালোবাজারি, যানজট, ছিনতাই–ডাকাতি ও চাঁদাবাজি, জালনোট এবং কর্মজীবী শ্রমিকদের অসন্তোষের কারণে রাস্তা অবরোধ, সড়ক দুর্ঘটনাসহ বিভিন্ন কারণে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে বাড়তি অর্থ উপার্জনের জন্য পরিবহন ও টিকেটের স্বল্পতা দেখিয়ে কৃত্রিম সংকট তৈরী করে টিকেটের দাম বাড়িয়ে নেয়ার প্রবণতা দেখা যায়। যদিও এটি কারো কাম্য নয়। এসব অনিয়ম ও ভোগান্তি থেকে রক্ষা করে মানুষের ঈদ যাত্রা স্বস্তির করতে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নজরদারীর বিকল্প নেই।
পবিত্র মাহে রমজান মানুষকে মানবতার শিক্ষা দেয়। এই শিক্ষাকে সারা বছরব্যাপী প্রত্যেকেই নিজের মধ্যে লালন করার মাধ্যমে একে অপরের সব ভেদাভেদ দূর করে মানবিক সমাজ গড়ার লক্ষ্যে কাজে লাগানো উচিত। তাই মানবিকতা, সহমর্মিতা, সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন জাগ্রত করে সকল ধর্ম ও সকল বর্ণের মানুষ প্রাণখুলে ঈদ উৎসবের আনন্দে শরীক হোক এবং সকলের ঈদ যাত্রা আনন্দময় ও নিরাপদ হোক এই প্রত্যাশায়।