‘ত্রিভুবনের প্রিয় মোহাম্মদ এলোরে দুনিয়ায়। আয়রে সাগর-আকাশ-বাতাস, দেখবি যদি আয়’। আর মাত্র কয়েকদিন পরেই দেশব্যাপী উদযাপিত পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.)। এ উপলক্ষে বর্ণিল আলোয় সেজেছে বন্দর নগরী চট্টগ্রাম।
নগরীর প্রধান প্রধান সড়কে নির্মাণ করা হয়েছে অস্থায়ী তোরণ। ছোট ছোট বাঁশের সাথে লাগানো হয়েছে সবুজ রঙের সুন্নি পতাকার নিশান। ব্যানারে-ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে। রাতে চোখ ধাঁধানো বর্ণিল আলো জশনে জুলুসকে আরো বর্ণিল করে তুলেছে। বর্ণিল এই আলোকসজ্জা ফুটিয়ে তুলেছে নগীরর শোভা।
আগামী ৯ অক্টোবর আনজুমানে রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের উদ্যোগে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) উদযাপিত হবে। এশিয়ার বৃহত্তম জুলুসটি এ বছর ৫০ বছরে পা রাখবে। যা জশনে জুলুসে আরও একটি বড় খুশির জোয়ার বয়ে আনবে।
পবিত্র মিলাদুন্নবী উপলক্ষে গত ২৮ সেপ্টেম্বর রবিউল আউয়াল মাসের ১ তারিখ থেকেই নগরের মূল ও অলিগলির সড়কে ব্যানার, ফেস্টুন, কালেমাখচিত সবুজ পতাকাসহ নানা উপকরণে আলোকসজ্জা শুরু করেছে। সড়ক, আইল্যান্ড, উড়ালসেতু, পিলারসহ বিভিন্নস্থানে করা রঙের আলোকসজ্জা। গতকাল সোমবার রাতে সরেজমিনে দেখা গেছে, সুন্নিয়া মাদরাসা প্রাঙ্গণ মাঠজুড়ে তৈরি করা হয়েছে বিশাল অস্থায়ী প্যান্ডেল। তার মধ্যে করা হয়েছে হুজুর কেবলাসহ সুন্নি আলেমদের জন্য সুদর্শিত স্টেজ।
এছাড়া নগরীর মুরাদপুর মোড়ে রাত দশটায় গেলে দেখা যায়, আইল্যান্ডে থাকা গাছের ডালে ঝোলানো আছে নানান রঙের বাতি। এছাড়াও জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া, আলমগীর খানকা, দায়েম নাজির জামে মসজিদ, মহিলা মাদরাসা ভবনের সামনেও আলোকসজ্জা করা হয়েছে। ৫০ তম জশনে জুলুসকে বিগত বছরের চেয়ে আরও প্রাণবন্ত করতে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে বলে দৈনিক আজাদীকে জানান আনজুমানের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মহসিন। তিনি বলেন, একদিকে এ বছর জশনে জুলুসের ৫০ বছর পূর্তি অন্যদিকে ৩ বছর পর বাংলার জমিনে আওলাদে রাসূল আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ তাহের শাহ (মাজিআ) এর আগমন জুলুসের শোভা ও লোক সগমাগম বিগত বছরের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে বলে আমাদের আশা করছি। তিনি বলেন, আগামীকাল বুধবার আওলাদে রাসূল আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ তাহের শাহ (মাজিআ), আওলাদে রাসূল আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ ছাবের শাহ (মাজিআ) ও আওলাদে রাসূল আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ কাশেম শাহ (মাজিআ) ঢাকায় তশরীফ আনবেন। বৃহস্পতিবার ঢাকায় জশনে জুলুসের পর শুক্রবার বাদ জুমা হুজুর কেবলা চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা দিবেন। ১২ রবিউল আউয়াল হুজুর কেবলা আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ তাহের শাহের ছদারতে জশনে জুলুস বের হবে। তিনি আরও বলেন, আশা করছি এবারের জুলসে ৬০ লাখের অধিক মানুষের সমাগম হবে। জশ্নে জুলুসে অংশগ্রহণ করতে সুন্নি জনতার প্রতি আহ্বানও জানান তিনি।
এদিকে নগরীতে আলোকসজ্জা ও সার্বিক প্রস্তুতির বিষয়ে গাউসিয়া কমটির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট মোছাহেব উদ্দিন বখতিয়ার দৈনিক আজাদীকে বলেন, আনজুমানের নির্দেশনায় নগরের ৪১ ওয়ার্ডে গাউসিয়া কমিটি ও আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের অনুসারীরা নিজেদের অর্থায়ন, স্বেচ্ছাশ্রমে আলোকসজ্জা, কলেমা ও ধর্মীয় বাণী খচিত পতাকা, ব্যানার, ফেস্টুন টাঙানোর কাজ করেছেন। তিনি বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারও জুলুসের শৃঙ্খলা রক্ষায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি আনজুমান সিকিউরিটি ফোর্স, গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের কর্মীরা দায়িত্ব পালন করবেন। তিনি বলেন, হুজুর কেবলার আগমনে চট্টগ্রামসহ সারাদেশে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। ইতোমধ্যে মারদপুর সুন্নিয়া মাদরাসা প্রাঙ্গণে হুজুরের আনুগত্য লাভের জন্য ভক্তগণ উপস্থিত হয়েছেন।