ঈদের ছুটি শেষ হয়েছে দুদিন আগে। তবে ভোগ্যপণ্যের বৃহৎ পাইকারি বাজার চাক্তাই খাতুনগঞ্জ এখনো সুনসান। গতকাল চাক্তাই খাতুনগঞ্জে দোকান খুলেছে ৪০ শতাংশের মতো। অধিকাংশ ব্যবসায়ী পুরনো কিছু লেনদেনের জন্য দোকানে এসেছেন। স্বাভাবিক দিনগুলোতে চাক্তাই খাতুনগঞ্জের রাস্তার দুই পাশে ট্রাক কাভার্ডভ্যানের দীর্ঘ সারি থাকতো। এছাড়া শ্রমিকের হাঁকডাকে কর্মচঞ্চল থাকতো পুরো এলাকা। বর্তমানে ঈদের ছুটির আমেজ থাকায় পুরো চাক্তাই খাতুনগঞ্জ এলাকা ক্রেতাশূন্য। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদের ছুটির প্রথম সপ্তাহে সাধারণত বাজারে ক্রেতার খুব একটা দেখা মিলে না। অনেক ব্যবসায়ী এখনো প্রতিষ্ঠান খুলেনি। কিছু কিছু ব্যবসায়ী ব্যাংকের লেনদেন থাকায় এসেছেন। দোকানের কর্মচারীরা তাই পারস্পরিক খোশগল্প এবং খুনশুটি করে সময় পার করছেন।
খাতুনগঞ্জের কয়েকজন আড়তদার বলছেন, খাতুনগঞ্জের প্রায় প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক কর্মচারীরা এখনো কাজে যোগ দেয়নি। তারা কাজে যোগ দিতে দিতে সপ্তাহ খানেক লেগে যেতে পারে। তাই অনেকে এখনো প্রতিষ্ঠান খুলেনি। অন্যদিকে করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার দফায় দফায় লকডাউন বাড়ানোর প্রভাবে এমনিতে ব্যবসা বাণিজ্যের অবস্থা শোচনীয়। এছাড়া গত তিন মাস ধরে সব ধরনের ভোগ্যপণ্যের বাজার নিম্নমুখী। অন্যদিকে ব্যবসা বাণিজ্য পুরোদমে শুরু হলেও আগের মতো পরিবহন সংকট থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। লকডাউনের কারণে পণ্য পরিবহনের খরচ বেড়ে গেছে। উল্টোদিকে বেচাবিক্রি নেমে গেছে অর্ধেকে।
গতকাল চাক্তাইয়ের চালপট্টির আড়তদার আবদুল আলিম বলেন, এক প্রকার নিয়মরক্ষার জন্যই প্রতিষ্ঠান খোলা হয়েছে। সকাল থেকে একজন ক্রেতাও আসেনি। তবে সন্ধ্যার পরে কিশোরগঞ্জ থেকে দুই ট্রাক চাল আসার কথা রয়েছে। সেইসব চাল রিসিভ করার অপেক্ষায় আছি। পুরোদমে বেচাবিক্রি শুরু হতে হতে আরো সপ্তাহ দশদিন লাগতে পারে।
চাক্তাইয়ের আফরা ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী আলাউদ্দিন আলো বলেন, বেচাকেনা না হলেও প্রতিষ্ঠান খুলেছি কিছু পুরনো হিসেব নিকাশের জন্য। এমনিতেই তো ব্যবসা বাণিজ্যের অবস্থা খারাপ। লকডাউনে আমরা একেবারে পথে নামার অবস্থা।
চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন দৈনিক আজাদীকে বলেন, চাক্তাইয়ের খাতুনগঞ্জে সব মিলিয়ে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠান খুলেছে। তবে বাজারে ক্রেতা নেই। আসলে মাত্র তো ঈদ গেল। দোকানের শ্রমিক কর্মচারীদের অধিকাংশই গ্রামের বাড়ি থেকে ফিরেনি। যার ফলে চাক্তাই খাতুনগঞ্জে চিরচেনা সেই ব্যস্ততা দেখা যাচ্ছে না। আশা করা যায়, আগামী সপ্তাহে শ্রমিক কর্মচারীরা কাজে যোগ দিলে তখন পুরোদমে কর্মচঞ্চল হয়ে উঠবে চাক্তাই খাতুনগঞ্জ।