শ্রমিকদের দাবি–দাওয়া মেনে ঈদুল আজহার ছুটির আগেই তাদের বেতন–বোনাস পরিশোধের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বলেছেন, প্রত্যেকবার ঈদের আগে শ্রমিকদের ধর্মঘট করা একটা রেওয়াজ ছিল। কিন্তু এবার থেকে আর এমন পরিস্থিতি তৈরি করা যাবে না। প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় শ্রমিক–মালিক পক্ষ একসঙ্গে বসে শ্রমিকদের যে চাহিদা ছিল, তা আমার মালিক ভাইয়েরা মেনে নিয়েছেন। যা চাহিদা ছিল সবকিছুর সমাধান হয়েছে। রাজধানীতে শ্রম ভবনে গতকাল বুধবার দুপুরে শ্রমিক ও মালিক পক্ষকে নিয়ে সভায় বসে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। ওই বৈঠকেই এসব সিদ্ধান্ত হয়েছে সাংবাদিকদের জানান প্রতিমন্ত্রী। খবর বিডিনিউজের।
তিনি বলেন, শ্রমিকরা যে দাবি করেছে এগুলো আসলে দাবি না, তাদের প্রাপ্য। তাদের প্রাপ্যের বিষয়ে মালিকপক্ষ সমর্থন দিয়েছে এবং জানিয়েছে এগুলো তারা বাস্তবায়ন করবে। রেশনিংয়ের একটা বিষয় ছিল। রেশন কীভাবে দিলে শ্রমিকরা সুন্দরভাবে পাবে তা বসে আমরা নির্ধারণ করব। রেশন দেওয়া হবে, এটা প্রধানমন্ত্রী বলে দিয়েছে। সুতরাং শ্রমিকরা এটা পাবেই। এবারের কোরবানির ঈদ হচ্ছে জুনের তৃতীয় সপ্তাহে। শ্রম মন্ত্রণালয়ে সভায় মে মাসের বেতনের সঙ্গে জুনের অর্ধেকের বেতনও দাবি করেন শ্রমিক নেতারা। বাংলাদেশ জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম রনি সভা শেষে সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের দাবি ছিল ঈদ যেহেতু জুন মাসে, তাই মে মাসের বেতন নিশ্চিত করে, জুন মাসেরও যেন অর্ধেক বেতন দেয়। কিন্তু সেটা বাস্তবতার সঙ্গে মানানসই হচ্ছে না। তাই মে মাসেরটাই দেওয়া হবে সিদ্ধান্ত হয়েছে। শ্রমিকদের বেতন বাড়ানোর পরেও মূল্যস্ফীতির কারণে শ্রমিকরা ‘ভালো নেই’ বলে রনির ভাষ্য। নিম্ন আয়ের শ্রমিকদের সংগ্রামের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, যারা হেলপার বা আরও ছোট চাকরি করে তাদের বেতন ১২ হাজার টাকা। এটা দিয়ে সংসার তো চলে না। আবার ওভারটাইম করারও সুযোগ খুব একটা থাকে না। তাই বেতন আরও বাড়ানোর দাবি করেছি আমরা। প্রত্যেক ঈদের আগে একসঙ্গে পোশাক কারখানাগুলো ছুটি হলে সড়কে ব্যাপক চাপ পড়ে। তীব্র যানজট তৈরি হয়। এ অবস্থা নিরসনে পোশাক কারখানাগুলোর ছুটির বিষয়েও বৈঠকের কথা জানান শ্রম প্রতিমন্ত্রী মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী। সভায় মালিক পক্ষে বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশন, বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফেকচারার্স অ্যান্ড এঙপোর্টার্স এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফেকচারার্স অ্যান্ড এঙপোর্টার্স এসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। শ্রমিকদের পক্ষে ছিলেন জাতীয় শ্রমিক লীগ, বাংলাদেশ জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী লীগ, জাতীয় শ্রমিক জোট, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের প্রতিনিধিরা।