ঈদের ছুটিতে দেশের প্রধান অবকাশ যাপন কেন্দ্র কক্সবাজার এখন টইটুম্বর। পর্যটকবোঝাই যানবাহনের চাপে শহরের রাস্তাঘাটে চলছে মারাত্মক ট্রাফিক জ্যাম। হোটেলগুলোতে খালি নেই কোন কক্ষ। হোটেল মালিকরা বলছেন, কক্সবাজারে পর্যটকদের এই উপচে পড়া ভীড় আগামী শনিবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।
এবারের ঈদের ছুটি উপলক্ষে ঈদের আগে কক্সবাজারের হোটেলগুলোতে আশানুরূপ আগাম বুকিং হয়নি। এতে হোটেল মালিকরা ধরে নিয়েছিলেন যে, এবারের ঈদের ছুটিতে তুলনামূলকভাবে অনেক কম পর্যটক কক্সবাজারে বেড়াতে আসবেন। হোটেলের অধিকাংশ কক্ষই থাকবে খালি। কিন্তু সবাইকে বিস্মিত করে দিয়ে ঈদের তৃতীয় দিনে গতকাল মঙ্গলবার কক্সবাজারে আসেন এক লক্ষাধিক পর্যটক। আর এসব পর্যটকের চাপে শহরের ৫ শতাধিক আবাসিক হোটেলের কোন কক্ষই আর খালি নেই বলে জানান বাংলাদেশ ট্যুরিজম সার্ভিসেস এসোসিয়েশন কক্সবাজার জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও কঙবাজার হোটেল–মোটেল–গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার।
তিনি বলেন, আগামী শনিবার পর্যন্ত এই চাপ অব্যাহত থাকবে এবং এই সময়ে প্রতিদিন লক্ষাধিক পর্যটক কঙবাজার ভ্রমণে আসবেন বলে আশা করছেন হোটেল মালিকরা। হোটেল মালিকরা জানান, বর্তমানে কক্সবাজার শহরের ছোটবড় ৫ শতাধিক আবাসিক হোটেল ও গেস্ট হাউসে প্রায় দেড়লাখ পর্যটক রাত যাপন করতে পারে। তবে সেন্টমার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় সেখানকার হোটেলগুলো ছাড়া জেলার অন্যান্য পর্যটন উপশহরগুলোতেও এখন উপচে পড়া ভীড়।
কক্সবাজার ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশন (টোয়াক বাংলাদেশ) এর প্রতিষ্ঠাতা–সভাপতি এসএম কিবরিয়া খান জানান, গত কয়েকদিন ধরেই কঙবাজার শহর থেকে টেকনাফ পর্যন্ত ১২০ কিলোমিটার সৈকতজুড়েই মানুষের বিচরণ দেখা গেছে। তবে ঈদের ছুটিতে আসা পর্যটকরা শহরে ট্রাফিক জ্যামের কারণে চরম বিরক্তি প্রকাশ করছে। শহরবাসীও একই কারণে ভোগান্তি পোহাচ্ছে। পাশাপাশি যানবাহন সংকটের কারণে কয়েকগুণ অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে যানবাহন চালকরা।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলাম বলেন, কঙবাজারে পর্যটকদের নিরাপত্তায় ঈদের আগেরদিন থেকে শহর ও সমুদ্র সৈকতকে বিশেষ নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলেছে পুলিশ। আগামী রোববার পর্যন্ত তিন স্তরের এ কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. শাহীন ইমরান জানান, ঈদের ছুটিতে কক্সবাজারে পর্যটকেরা যাতে হয়রানির শিকার না হয় তা নিশ্চিত করতে পুলিশের পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের বীচকর্মীরা দায়িত্ব পালন করবে। দুইজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পর্যটন এলাকায় ভ্রাম্যমান আদালতও সক্রিয় করা হয়েছে। কোন অপরাধ ঘটলে সাথে সাথে মোবাইল কোর্ট বসিয়ে বিচারের ব্যবস্থা করা হবে।












