ঈদের অনাবিল আনন্দে ধনী-গরিব সবাই শামিল হোন

আ ব ম খোরশিদ আলম খান | শনিবার , ২৯ মার্চ, ২০২৫ at ৫:১৫ পূর্বাহ্ণ

মাসব্যাপী সিয়াম সাধনা শেষে দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদুল ফিতর। ঈদ আসছে অনাবিল আনন্দখুশির বার্তা নিয়ে। মুসলিম উম্মাহ ঘটা করে ঈদ উৎসব পালন করে। মুসলমান মাত্রই ঈদের আনন্দের মহাসাগরে অবগাহন করে। যারা সর্বান্তকরণে আপাদমস্তক সিয়াম সাধনায় রত থেকেছে মূলত ঈদের আনন্দ তাদের জন্যই। পুরো এক মাস দিনের বেলায় খানাপিনা নিষিদ্ধ ছিল। ঈদের দিনে এই বিধিনিষেধ উঠে যায়। ঈদের আনন্দে উৎসবে সবাই একাকার হয়ে যায়। ঈদের দিনে ঘরে ঘরে খাবার দাবারের ধুম পড়ে। ধনীগরিব সবাই ঈদের আদর আপ্যায়নে শামিল হয়। ধনীগরিব সাদা কালো নানা জাত পাতের মানুষ ব্যবধান ছিন্ন করে সবাই ঈদের জামাতে শরিক হয়। নামাজ শেষে পরস্পর হাত মেলায়। গড়াগড়িকোলাকুলি করে বন্ধুত্বের জানান দেয় প্রতিটি মানুষ। ঈদের নতুন চমকপ্রদ পোশাক পরে ছেলেবুড়ো সবাই ঈদগাহে জমায়েত হয়ে আল্লাহর দরবারে সিজদা দিয়ে আল্লাহর কাছে নিজেদের সমর্পণ করে। ঈদ শুধু আমাদের কাছে আনন্দের নয়, ইবাদতও বটে। তাই তো ঈদের রাতে ইবাদতের তাগিদ দিয়েছেন প্রিয় নবী (.)। হযরত আবু ওমামা (রা.) থেকে হাদিসে এসেছে, রাসূলে পাক (.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি দুই ঈদের রাতে আল্লাহপাকের সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে জেগে জেগে ইবাদত করবে তার কলব ওই দিন (কিয়ামত দিবসে) মৃত্যুবরণ করবে না, যেদিন সকল অন্তর মুর্দা হয়ে যাবে।’ (ইবনে মাজাহ, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ১২৭)। দ্বিতীয় হিজরি সনে ঈদের নামাজ ওয়াজিব হয়। ঈদের বিধান আসার পর হযরত নবী করিম (.) ওফাত পর্যন্ত ঈদের নামাজ পড়া কখনো বাদ দেন নি। সাহাবায়ে কেরাম, খোলাফায়ে রাশেদিন কেউ বাদ দেন নি। অতএব, ঈদের নামাজ না পড়া বড় গুনাহ।

ঈদ সর্বজনীন আনন্দোৎসব হলেও গরিব দুস্থ অভাবী সুবিধাবঞ্চিত মানুষেরা ঈদের আনন্দে সমভাবে শামিল হতে পারে না। এই ঈদে বেছে বেছে গরিব পরিবারের ছেলেমেয়েদেরকে নতুন জামা কাপড় কিনে দিতে হবে ধনীবিত্তবানদের। গরিব পরিবারগুলোকে ঈদের শাড়ি ও পাজামা পাঞ্জাবি লুঙ্গি কিনে দিয়ে তাদেরকেও ঈদের আনন্দে শামিল করতে হবে। তবেই ঈদের আনন্দখুশি পরিপূর্ণতা পাবে। আপনি হয়তো নাড়ির টানে গ্রামে ছুটে যাচ্ছেন ঈদ উদযাপনের জন্য। আপনার আত্মীয় স্বজন, পাড়া প্রতিবেশীদের যারা অতিশয় গরিব তাদেরকে খুঁজে খুঁজে আপনি ঈদের নতুন জামা কাপড় কিনে দিন। এই ঈদে গরিব দারিদ্র্যপীড়িত মানুষের চোখেমুখেও থাকে যেন ঈদের অনাবিল হাসিআনন্দ। ঈদের আনন্দে ধনীগরিব সবাই শামিল হোন। জাকাত ফিতরা যারা এখনো দেননি, হিসেব করে পরিকল্পিতভাবে জাকাত ফিতরা বণ্টন করে গরিব মানুষের ভাগ্য বদলে দিন। তবেই আল্লাহ পাক খুশি হবেন এ আশা করা যায়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপবিত্র জুমাতুল বিদা পালিত
পরবর্তী নিবন্ধসম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে চায় ঢাকা-বেইজিং