ঈদকে ঘিরে সিএমপির একাধিক নির্দেশনা

অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও মৌসুমী কাউন্টার স্থাপন করা যাবে না

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ১৮ এপ্রিল, ২০২২ at ৪:৪৭ পূর্বাহ্ণ

রমজান মাসে নগর জুড়ে মানুষের চলাচল বেড়ে যায়; সাথে বাড়ে যানবাহনের চাপ। দুর্ভোগে পড়েন নগরবাসী, তা নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খেতে হয় ট্রাফিক বিভাগকে। রমজানের শুরুতেই বিষয়টি আঁচ করতে পেরে সিএমপির ট্রাফিক বিভাগ বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছেন। তবে বাস্তবতা হলো এর সুফল পাচ্ছে না নগরবাসী।
এ প্রসঙ্গে সিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) শ্যামল কুমার নাথ আজাদীকে বলেন, যানজট সহনীয় পর্যায়ে রাখতে তিন শিফটে দায়িত্ব পালন করছে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা। ইফতারের সময় যাতে কোনো ট্রাফিক পুলিশকে ঘরে বা দোকানে গিয়ে ইফতার করতে না হয় সেজন্য সবাইকে দেয়া হচ্ছে বিনামূল্যে ইফতার। এছাড়া ১০ রমজানের পর মাঠে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেশি থাকছে পুলিশের বাড়তি ফোর্স।
তিনি আরো বলেন, রোজাদারেরা যাতে নির্বিঘ্নে বাসায় পৌঁছে ইফতার করতে পারেন, সেটা নিশ্চিত করতে চট্টগ্রামের সড়কে পুলিশের বাড়তি প্রস্তুতি রয়েছে। ট্রাফিক কন্ট্রোল রুম থেকে যানজট পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। অফিস এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সময়সূচি মাথায় রেখে, সকাল ও বিকেলে বিশেষ জোর দিয়ে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সাজানো হয়েছে। নগরীর উত্তর, দক্ষিণ এবং পশ্চিম বিভাগে প্রায় ৬শ ট্রাফিক পুলিশ এবং ট্রাফিক সার্জেন্ট দায়িত্ব পালন করছেন। যানজট নিরসনে তারা তীব্র রোদ, গরম উপেক্ষা করে সড়কে যানবাহনের নিয়ন্ত্রণ ও যাত্রীদের দুর্ভোগ লাঘবে কাজ করছেন।
এদিকে গতকাল রোববার দুপুরে সিএমপির গণসংযোগ শাখা থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দূরপাল্লার সব যাত্রীবাহী বাস বিকল্প সড়ক হিসেবে বায়েজিদ লিঙ্ক রোড ব্যবহার করবে। নগরীর ভেতর স্থাপিত বাস কাউন্টারগুলোর সামনে ১০ মিনিটের বেশি কোন বাস যাত্রী তুলতে পারবে না। ঈদ উপলক্ষে বাড়তি ভাড়া আদায় করা হলে অভিযান চালাবে ট্রাফিক পুলিশ। ঈদের ছুটিকে সামনে রেখে অস্থায়ীভাবে কাউন্টার স্থাপন করে টিকিট বিক্রি করা যাবে না। পাশাপাশি মার্কেট কেন্দ্রীক যানজট নিরসনে সড়কে কোন পার্কিংয়ের ব্যবস্থা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
সিএমপি থেকে আরও জানানো হয়, রমজান মাসে খাতুনগঞ্জগামী মালবাহী ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানগুলো টেরিবাজার রোড দিয়ে প্রবেশ না করে জেল রোড (শাহ আমানত মাজার রোড) দিয়ে খাতুনগঞ্জে প্রবেশ করবে এবং লোড-আনলোড শেষে সকল গাড়ি মেরিন ড্রাইভ রোড দিয়ে বের হয়ে যাবে। তাছাড়া নগরীর টেরিবাজার ও হাজারী গলির মুখে যানজট নিরসনে টেরিবাজার মেইন রোড গ্যাপ বন্ধ রাখা হবে এবং টেরিবাজার রোডে সকল ধরনের ভারী যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। চাক্তাইগামী মালবাহী সকল ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানগুলো রাজাখালী রোড দিয়ে প্রবেশ করবে এবং লোড-আনলোড শেষে সকল গাড়ি চাক্তাই রোড ব্যবহার করে মেরিন ড্রাইভ রোড দিয়ে হয়ে বের হয়ে যাবে।
গরিবুল্লাহ শাহ মাজার কেন্দ্রীক দূরপাল্লাগামী এসি বাসগুলো স্কুল চলাকালীন জাকির হোসেন রোড ব্যবহার না করে বায়েজিদ লিংক রোড ব্যবহার করবে এবং যাত্রী ওঠানামার জন্য প্রতি কাউন্টারের সামনে একটি বাস ১০ মিনিটের বেশি সময় দাঁড়াতে পারবে না। সকাল ৮টা থেকে রাত ১০ টার মধ্যে আন্তঃজেলার কোনো নন-এসি বাস শহরের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে পারবে না। তাছাড়া কঙবাজার, রাঙামাটি, বান্দরবান হতে ঢাকা বা দূরবর্তী জেলার যাত্রীবাহী বাসগুলো বায়েজিদ লিংক রোড দিয়ে চলাচল করবে।
রমজান ও ঈদকে সামনে রেখে কোনো অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা যাবে না এবং অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তাছাড়া ঈদের ছুটিকে সামনে রেখে অস্থায়ীভাবে কাউন্টার বা মৌসুমী কাউন্টার স্থাপন করে টিকিট বিক্রি করা যাবে না। ঈদকে সামনে রেখে স্বল্পপাল্লার (সিটি সার্ভিস বা টাউন সার্ভিস) বাস দিয়ে দূরপাল্লার রুটে যাত্রী পরিবহন করা যাবে না। নগরীর সড়কে যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং বা যাত্রী ওঠানামা করা যাবে না এবং অবৈধ পার্কিংয়ের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মার্কেট কেন্দ্রিক সকল ধরনের মালামাল লোড-আনলোড রাত ১২ টা থেকে সকাল ৭ টার মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে এবং নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে কোনো মালামাল লোড-আনলোড করা যাবে না। রমজান মাসে প্রত্যেক মার্কেটের সামনে আগত ও গমনাগমনকৃত যানবাহন ব্যবস্থাপনা ও যানজট নিরসনে মার্কেট ব্যবসায়ী মালিক সমিতি পর্যাপ্ত সংখ্যক জনবল বা সিকিউরিটি নিয়োগ করে তাদের কার্যক্রম তদারকি করতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ৬১ জেলা পরিষদ বিলুপ্ত
পরবর্তী নিবন্ধঈদের ছুটি বাড়ানোর আলোচনা হতে পারে মন্ত্রিসভায়