ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের আয়কর রিটার্ন অনলাইনে দাখিলের সময় প্রমাণের জন্য সহায়ক কোনো নথি আপলোড করতে হবে না বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।
গতকাল বুধবার এনবিআর ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ই–রিটার্নের জন্য আপাতত নথি জমা দেওয়ার প্রয়োজন নেই এবং করদাতার দেওয়া তথ্যকেই নির্ভুল মনে করবে এনবিআর। তবে রিটার্ন জমা দেওয়ার পর কোনো অসঙ্গতি পাওয়া গেলে করদাতাকে দায়ী করা হবে বলে জানান তিনি। মূলত করদাতাদের অনলাইনে রিটার্ন জমা প্রক্রিয়া উৎসাহিত করতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। খবর বিডিনিউজের।
বর্তমানে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে আয়কর রিটার্ন জমা দিতে গেলে করদাতাদের বিভিন্ন সহায়ক নথি, যেমন–আয়ের প্রমাণ, ব্যাংক হিসাবের বিবরণী, ঋণ, বাড়ির সম্পত্তির বিবরণীসহ বেশ কিছু নথি জমা দিতে হয়। আয়কর আইনেও এর বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে ই–রিটার্ন জনপ্রিয় করতে এসব নথি আপলোড করতে হবে না।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, গত পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে এনবিআর ই–রিটার্ন সিস্টেম উন্নতিতে কাজ করছে। তবে করদাতাদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়নি। তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ২০২৩–২৪ অর্থবছরে প্রায় ৪৪ লাখ করদাতা রিটার্ন দাখিল করেছেন, যার মধ্যে মাত্র ৫ লাখ রিটার্ন অনলাইনে জমা দেওয়া হয়েছিল। কিছু ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর জমা দিতে গেলে সেখানে করের শতাংশ হিসাবে উচ্চ ফি নেয়ার প্রসঙ্গে আবদুর রহমান খান বলেন, এই প্রথা অযৌক্তিক। ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেছি। করের পরিমাণের ওপর শতাংশ হারে যেন কোনো চার্জ নির্ধারণ করা না হয়। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, কর ফাইল ২০ হাজার টাকা হোক কিংবা ২ কোটি টাকা হোক–বিষয় একই। তাহলে, কেন করের পরিমাণের উপর শতাংশ ভিত্তিক ফি নেবে?
এনবিআর চেয়ারম্যান আরও বলেন, প্রয়োজনে করদাতাদের বাড়িতে ভলান্টিয়ার পাঠিয়ে করদাতাদের আয়কর অফিসে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তা কমানো হবে। এক্ষেত্রে আমরা স্বল্প সময়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অনুষদের শিক্ষার্থীদের যুক্ত করার পরিকল্পনা করছি, যারা করদাতাদের বাড়িতে গিয়ে আয়কর রিটার্ন প্রস্তুতে প্রয়োজনীয় সহায়তা করবে।
কালো টাকা সাদা করার সুবিধা আংশিক বাতিল করা হয়েছে; জমি ও ফ্ল্যাটের ক্ষেত্রে ভাবনা কী জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাজেটে বিষয়টা আমরা বিবেচনা করব অথবা অপরিহার্য হলে তার আগেও পরিবর্তন করতে পারি। এ বছর করমেলা হবে না কি কর সেবা মাস হবে, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, কর সেবা থাকবে তবে কর মেলার মতো হবে না। প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনা অনুযায়ী সেবা নিতেও করদাতারা আয়কর অফিসে আসবে না। এক্ষেত্রে কল সেন্টারের আওতা বাড়ানো হবে।