ইস্তাম্বুলের মেয়র ইমামোগলুকে জেলে পাঠাল তুরস্কের আদালত

| সোমবার , ২৪ মার্চ, ২০২৫ at ৬:৪১ পূর্বাহ্ণ

তুরস্কের একটি আদালত দুর্নীতির অভিযোগে বিচার শুরুর অপেক্ষায় থাকা ইস্তাম্বুলের মেয়র ইকরাম ইমামোগলুকে জেলে পাঠানোর আদেশ দিয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম ও একাধিক সমপ্রচারমাধ্যম।

তুর্কি আদালতের গতকাল রোববারের এ পদক্ষেপ এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এরদোয়ানবিরোধী সবচেয়ে বড় বিক্ষোভে ইন্ধন জোগাবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। ইমামোগলুকে এই মুহূর্তে এরদোয়ানের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করা হচ্ছে, দিন কয়েক আগে তাকে দুর্নীতি, সন্ত্রাসী সংগঠনকে সহায়তাসহ একাধিক অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। খবর বিডিনিউজের। গতকাল জেলে পাঠানোর আগেই, তুরস্কের প্রধান বিরোধীদল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি) ও হাজার হাজার বিক্ষোভকারীদের পাশাপাশি ইউরোপের নেতারাও ইমামোগলুকে আটক করার ঘটনাকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও অগণতান্ত্রিক’ অ্যাখ্যা দিয়েছেন, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

তুরস্কের সরকারি কৌঁসুলিরা গত সপ্তাহে ইস্তাম্বুলের এ মেয়রের বিরুদ্ধে দুটি তদন্ত শুরু করে। তার মধ্যে দুর্নীতির অভিযোগে হওয়া তদন্তের অংশ হিসেবেই ৫৪ বছর বয়সী ইমামোগলু ও আরও অন্তত ২০ জনকে জেলে পাঠানো হয়েছে, বলেছে আদালত।

সন্ত্রাসসংশ্লিষ্ট অন্য তদন্তের ক্ষেত্রে আদালত তাকে শর্তাধীন মুক্তি দিয়েছে বলে সমপ্রচারমাধ্যম হাল্ক টিভি ও আহাবেরের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। আদালতের এমন সিদ্ধান্তের ফলে তুরস্কের বৃহত্তম শহর ইস্তাম্বুল পরিচালনায় সরকার মেয়রের পরিবর্তে কোনো ট্রাস্টি নিয়োগ দিতে পারবে না বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। বেশ কয়েকটি জরিপে জনপ্রিয়তায় এরদোয়ানের চেয়ে এগিয়ে থাকা ইমামোগলু তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এগুলো অকল্পনীয় অভিযোগ ও অপবাদ, বলেছেন তিনি।

ইমামোগলুকে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী করা হবে কিনা তা নিয়ে গতকাল সিএইচপি সদস্যদের মধ্যে ভোটাভুটিও চলেছে। ২০২৮ সালের আগে দেশটিতে পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা নয়। ওই বছরই এরদোয়ানের মেয়াদ শেষ হবে। কিন্তু ২২ বছর ধরে দেশ শাসন করা এরদোয়ান যদি ফের প্রেসিডেন্ট হতে চান তবে তাকে অবশ্যই মেয়াদপূর্তির আগেই ভোট ডাকতে হবে।

সিএইচপির সদস্য, আঙ্কারার মেয়র মনসুর ইয়াভাস রোববার সাংবাদিকদের কাছে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ইমামোগলুকে জেলে পাঠানোর ঘটনায় বিচার ব্যবস্থা কলঙ্কিত হলো। তুরস্কের সরকার ইমামোগলুর বিরুদ্ধে তদন্তকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ মানতে নারাজ। তুরস্কের আদালত স্বাধীন, এবং সেগুলো স্বাধীনভাবেই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, বলছে তারা। ইমামোগলুকে গ্রেপ্তারের পর দেশজুড়ে সভাসমাবেশে ৪ দিনের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল, শনিবার ওই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ আরও ৪ দিনের জন্য বাড়ানো হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিক্ষোভ করার ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে সতর্কও করা হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপাঁচ সপ্তাহ হাসপাতালে ভর্তি থাকার পর ভ্যাটিকান ফিরছেন পোপ
পরবর্তী নিবন্ধসন্দ্বীপের সঙ্গে সরাসরি ফেরি যোগাযোগ শুরু