ইসি ৪ ভাগ হয়ে গেছে : পাটওয়ারী

| সোমবার , ২০ অক্টোবর, ২০২৫ at ১০:৪২ পূর্বাহ্ণ

এএমএম নাসির উদ্দিনের নির্বাচন কমিশন ‘চার ভাগ হয়ে গেছে’ বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। দলটির এ মুখ্য সমন্বয়ক বলছেন, ইসি চার ভাগ হয়ে রয়েছে, এর এক ভাগ নিয়ে গেছে আর্মি, বাকি তিন ভাগকে দলগুলো ভাগ করে নিয়েছে। মাঠ পর্যায়ের প্রিজাইডিং অফিসার, সেখানেও আওয়ামী লীগের লোক। পুলিশেও কোনো পরিবর্তন আসেনি, ব্যবসায়ীদের কোনো নিরাপত্তা নেই। এমন পরিস্থিতিতে ফেব্রুয়ারিতে কীভাবে নির্বাচন হবে, সেটা আমাদের প্রশ্ন। খবর বিডিনিউজের।

গতকাল রোববার নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদের সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলে এনসিপির প্রতিনিধি দল। শাপলা প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব না হওয়ায় তালিকা থেকে বিকল্প প্রতীক বাছাইয়ের শেষ সময় ছিল এদিন। নির্ধারিত সময়ে এনসিপি প্রতিনিধি দল লিখিত জবাব দিয়ে অনড় অবস্থান তুলে ধরেন।

বৈঠকের বিষয়ে পাটওয়ারী বলেন, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য গ্রহণযোগ্য ভোটার তালিকা থাকতে হবে, নিবন্ধন গ্রহণযোগ্য হতে হবে, দুর্নীতিমুক্ত প্রতিষ্ঠান হতে হবে, নির্বাচন কমিশনার দলদাস হতে পারবে না এসব বিষয় তাদের স্পষ্টা করেছি। ইসিতে কোনো ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণে যা খুশি চলতে পারে না বলে মন্তব্য করেন পাটওয়ারী।

তিনি বলেন, আমরা তাদের সতর্ক করে দিয়েছি আজ। যদি তারা এটা করে, এসব বিষয় সমাধান না করে, এ ইসির সবাইকে পদত্যাগ করাতে আমরা বাধ্য হব। বিষয়গুলো সুরাহা না হলে এএমএম নাসির উদ্দিন নেতৃত্বাধীন ইসির অধীনে ভোটে না যাওয়ার কথা জানান নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তিনি বলেন, এ কমিশনের অধীনে কীভাবে আমরা ভোটে যাব? যদি বিষয়গুলোর সুরাহা না করা হয়, আমরা তো ওয়ে আউট দেখাচ্ছি। আমরা ইসির সবার পদত্যাগের জন্য আসিনি। যে বিষয়গুলো হলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের দিকে যাব, সেসব বিষয় তুলে ধরেছি। যদি না করে তাহলে উনাদের অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে, এ নির্বাচনও প্রশ্নবিদ্ধ হবে। শাপলা প্রতীক এনসিপিকে বরাদ্দ দেওয়াসহ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে দুর্নীতিমুক্ত ও দলমুক্ত না হলে কমিশনকে জনরোষের মধ্যে পড়তে হবে বলেও মন্তব্য করেন পাটওয়ারী।

গেল বছরের নভেম্বরে দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রায় ১১ মাস অতিবাহিত করতে যাচ্ছে বর্তমান ইসি। ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের পথে প্রস্তুতি এগোচ্ছে। নতুন দল নিবন্ধনের কাজ চূড়ান্তের পথে রয়েছে। কিন্তু এনসিপিকে নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত এলেও প্রতীক এখনও চূড়ান্ত হয়নি। এর মধ্যে ইসির নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলল জুলাই অভ্যুত্থানের সামনের সারির নেতাদের হাতে গড়ে ওঠা দল এনসিপি। পাটওয়ারী বলেন, ইসির টেন্ডার থেকে এনআইডি কাজে দুর্নীতির খবর পাওয়া যাচ্ছে। কোনো প্রতিষ্ঠান দুর্নীতিগ্রস্ত হলে তাদের পক্ষে সুষ্ঠু নির্বাচন করাটা সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, শুধু শাপলার জন্য আসিনি। নতুন বাংলাদেশের স্বাধীন ইসি প্রতিষ্ঠার জন্য এসেছি। ইসিকে এনসিপির পছন্দের প্রতীক শাপলা দিতে হবে । আশা করি, শাপলা পাব এবং শাপলা নিয়ে নির্বাচন করব।

বিএনপি ও জামায়াতের ‘ক্ষমতার রাজনীতির’ সমালোচনাও করেন পাটওয়ারী। তিনি বলেন, বাংলাদেশে আসলে গণতন্ত্র নেই। বিএনপি যে গণতন্ত্র বলে, এ গণতন্ত্রের মধ্য দিয়ে আসলে জিয়া ফ্যামিলির কয়েকটা লোক ক্ষমতায় যেতে চায়। জামায়াতে ইসলামী যে গণতন্ত্রের কথা বলে, সে গণতন্ত্রের মধ্য দিয়ে তাদের একদুই লাখ লোক ক্ষমতায় যেতে চায়। আমরা যে গণতন্ত্র বলি, আমরা জনগণের ক্ষমতায়ন চাই। পাটওয়ারী বলেন, ইসিকে জাগানোর পাশাপাশি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের প্রচেষ্টায় এনসিপি কাজ করে যাচ্ছে। প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিয়ে কাজের নামে তারা আমোদপ্রমোদে ব্যস্ত; সেখানে তারা ঘুরে বেড়াচ্ছে। তিনি বলেন, সদিচ্ছা নিয়ে এ নির্বাচন কমিশন যদি দলদাস না হয়ে, ক্যান্টমেন্টের দাস না হয়ে এক মাস কাজ করে, একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেওয়া সম্ভব। সেই চ্যালেঞ্জটা ফেস করবে কিনা, এ সৎ সাহস তাদের নেই। কমিশন ঘুমিয়ে আছে, তাদের জাগানোর চেষ্টা করছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধডিজিটাল পেমেন্টে অভ্যস্ততা বাড়াতে গ্রাহক সচেতনতার পাশাপাশি প্রয়োজন প্রণোদনাও
পরবর্তী নিবন্ধইসির চাপিয়ে দেওয়া প্রতীক নেবে না এনসিপি : হাসনাত আব্দুল্লাহ