আন্তর্জাতিক শাহাদাতে কারবালা মাহফিলের ৯ম দিনে গতকাল মঙ্গলবার বিদেশি আলোচক ছিলেন ইরাক বাগদাদ শরীফ বড়পীর শেখ সৈয়দ আব্দুল কাদের জিলানি (রা.) এর বংশধর শাহ্ সূফি আল্লামা সৈয়দ আফিফ আব্দুল কাদের মনসুর আল–জিলানি আল–বাগদাদী।
তিনি বলেন, ইসলামের নামে দুনিয়ার ইতিহাসে প্রথম রাজতন্ত্রের সূচনাকারী পাষণ্ড ইয়াজিদ। অন্যায় অগণতান্ত্রিকভাবে গায়ের জোরে মসনদে বসে সমস্ত অন্যায় অপকর্ম সে বৈধতা দিয়েছিল। মদ জুয়া সুদ ব্যভিচারকে বৈধতা দিয়ে ইয়াজিদ জঘন্য জুলুমতন্ত্র কায়েম করেছিল। ইসলামের নামে বীভৎস জুলুমতন্ত্র চাপিয়ে দেয়ায় যুগে যুগে ধিক্কারের পাত্র হবে পাষণ্ড ইয়াজিদ। আর হযরত ইমাম হোসাইনের (রা.) নাম বিজয়ী হিসেবে সত্যান্বেষী মানুষের মণিকোঠায় চিরকাল ঠাঁই পাবে। আল্লামা আফিফ জিলানি বলেন, আহলে বায়তে রাসূলের (দ.) নিষ্কলুষ পরিচ্ছন্ন জীবন যাপন, সকল দোষ–ত্রুটি, আবিলতা–পংকিলতা থেকে যে তাঁরা মুক্ত স্বয়ং আল্লাহ পাক কুরআন মজিদে এর ঘোষণা দিয়েছেন।
পাপ গ্লানি ও মানবিক যাবতীয় কলুষতা থেকেও তাঁরা পবিত্র। সকল প্রকার অপবিত্রতা থেকে আল্লাহ পাক তাঁদের সুরক্ষিত রেখেছেন–এটাই হচ্ছে ইসলামী আক্কিদা। তাই, আহলে বায়তে রাসূলের (দ.) শান মর্যাদা হানি হয় এমন কোনো মন্তব্য করা যাবে না। আল্লামা আফিফ জিলানির বক্তব্য বাংলায় ভাষান্তর করে শোনান ড. আল্লামা সাইফুল ইসলাম আজহারি।
আহলে বায়তে রাসূল (দ.) স্মরণে শাহাদাতে কারবালা মাহফিল পরিচালনা পর্ষদের আয়োজনে ১০ দিনব্যাপী ৩৯তম আন্তর্জাতিক শাহাদাতে কারবালা মাহফিলের গতকাল ৯ম দিনে সভাপতিত্ব করেন জমিয়তুল ফালাহ শাহাদাতে কারবালা মাহফিল পরিচালনা পর্ষদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও চেয়ারম্যান এবং পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান একুশে পদকপ্রাপ্ত আলহাজ্ব সূফী মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।
তিনি বলেন, বিনয়ী, সৎ ও উদার হোন। সমুদ্রের মতো বিশালতা, আকাশের মতো উদারতা, পাহাড়ের মতো দৃঢ় ও অবিচল থাকা, বিপদে ধৈর্য ধারণ এবং সর্বাবস্থায় আল্লাহ পাকের প্রতি শোকর ও সবরের পরাকাষ্ঠা দেখাতে হবে আমাদেরকে। মানুষের প্রতি অসম্মান করা যাবেনা। কারো ক্ষতি করা যাবে না।
মানুষকে সুন্দর কথা বলে প্রফুল্ল রাখা এটাও ইবাদত। লোভ–মোহ থেকে দূরে থাকুন। আপনার কাছে যা আছে তাই নিয়ে সন্তুষ্ট থাকুন। কঠোর পরিশ্রম করে নিজের ভাগ্য বদলে দিন।
হাশরের ময়দানে রাসুলুল্লাহর (দ) শান বিষয়ে আলোচনা করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. আল্লামা জাফর উল্লাহ। তিনি বলেন, হাশরের ময়দানে প্রিয় নবী (দ) গুনাহগার উম্মতকে সুপারিশ করে জান্নাতে নিয়ে যাবেন। সেদিন হাউজে কাউসারের পানি পান করাবেন প্রিয় নবী (দ)। সকল নবী– রাসূলের চেয়ে তাঁর ব্যতিক্রমী শান মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য সেদিন প্রকাশ পাবে। যুব সমাজের অবক্ষয় রোধে আমাদের করণীয় বিষয়ে আলোচনা করেন মাওলানা হাসান আজহারি। তিনি বলেন, যুব সমাজের অবক্ষয় রোধে ইসলামের দাওয়াত তাদের মাঝে পৌঁছে দিতে হবে।
মাহফিলে বিশেষ অতিথি ছিলেন, আঞ্জুমান–এ–রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের সিনিয়র সহসভাপতি মোহাম্মদ মহসিন, আমির ভান্ডার দরবার শরীফের সাজ্জাদানশীন শাহসুফী সৈয়দ মুহাম্মদ সিরাজুল মোস্তফা শাহ্ আমিরভান্ডারী, ছিপাতলি জামেয়া গাউছিয়া মুঈনীয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ পীরে ত্বরিকত আল্লামা আবুল ফারাহ মুহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন আলকাদেরী, গাউছিয়া কমিটি বাংলাদেশের চেয়ারম্যান পেয়ার মুহাম্মদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা লায়ন মুহাম্মদ দিদারুল আলম চৌধুরী, জমিয়তুল ফালাহ মসজিদের সাবেক পেশ ইমাম মাওলানা নুর মোহাম্মদ সিদ্দিকী, জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলীয়া মাদ্রাসার আরবী প্রভাষক মাওলানা মীর মুহাম্মদ আলাউদ্দিন, হযরত শাহ আমানত দরবার শরীফের মুতাওয়াল্লী শাহজাদা শরফুদ্দীন মুহাম্মদ শাহীন, ব্যাংকার ইস্কান্দার আলম।
নাতে রাসুল (দ) পেশ করেন শায়ের মোহাম্মদ মহিউদ্দীন তানভীর। মুহাম্মদ আব্দুল হাই মাসুম ও হাফেজ ছালামত উল্লাহর সঞ্চালনায় মাহফিলে আরও উপস্থিত ছিলেন পিএইচপি ফ্যামিলির পরিচালক ও মাহফিলের প্রধান সমন্বয়ক মোহাম্মদ আলী হোসেন সোহাগ, মোহাম্মদ খোরশেদুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ারুল হক, আলহাজ্ব সিরাজুল মোস্তফা, প্রফেসর কামাল উদ্দিন আহমদ, আলহাজ্ব দিলশাদ আহমেদ, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, এস এম শফি, মাইনুদ্দিন মিঠু, মাহবুবুল আলম, আবুল মনসুর সিকদার, জাফর আহমদ সওদাগর, সাহেদ করিম, নাজিব আশরাফ, আবদুর রহিম, রফিক আশরাফি, আবদুর রহমান, অধ্যাপক অহিদুল আলম প্রমুখ। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।