চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে গতকাল মঙ্গলবার ‘কালো পতাকা সমাবেশ’ করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা। সংগঠনের ঢাকা মহানগরীর সাবেক সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ রইস উদ্দিনের ‘হত্যাকারীদের’ গ্রেপ্তারের দাবিতে সোমবার মুরাদপুরে সড়ক অবরোধকারীদের উপর হামলার প্রতিবাদে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশের শুরুতে বিক্ষোভ মিছিল করতে চাইলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। পরে উপস্থিতির সংখ্যা বাড়লে পুলিশ বাধা দেয়নি। তবে তাদের রাস্তার একপাশে সরিয়ে দেয়। সমাবেশ থেকে ‘রইস উদ্দিন হত্যার বিচার এবং অবরোধ কর্মসূচি থেকে গ্রেপ্তারকৃত নেতাকর্মীদের মুক্তি ছাড়া আন্দোলন থামবে না’ ঘোষণা দিয়ে ছাত্রসেনার নেতৃবৃন্দ বলেন, ন্যায়বিচারের প্রশ্নে তারা কোনো আপস করবে না, প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। সমাবেশ থেকে আগামী শুক্রবার বাদে জুমা দেশব্যাপী উপজেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ মিছিলের ঘোষণা দেওয়া হয়। মিছিল হবে আহলে সুন্নত ওয়াল জামাআত ও ছাত্রসেনার ব্যানারে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, বিগত সময়ে পুলিশের সঙ্গে ‘হেলমেট বাহিনী’ নামে পরিচিত একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠি বিভিন্ন শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা চালিয়েছে। এখনো সেই অপশক্তির ছায়া বিদ্যমান। সোমবার যারা ছাত্রসেনার নিরস্ত্র কর্মীদের ওপর আক্রমণ করেছে, তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
তারা বলেন, রইস উদ্দিনের হত্যাকাণ্ড প্রমাণ করে–দেশে সত্য ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পথে এক ভয়ংকর বাধা তৈরি করা হয়েছে। এখনো খুনিদের গ্রেপ্তার না করা এবং শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বর্বরোচিত হামলা রাষ্ট্রের নৈতিক ও মানবিক ব্যর্থতার চরম উদাহরণ।
সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট প্রেসিডিয়াম সদস্য এম সোলায়মান ফরিদ। প্রধান বক্তা ছিলেন ছাত্রসেনার কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ সাহেদুল আলম। ছাত্রনেতা মুহাম্মদ ওসমানের সভাপতিত্বে ও মাওলানা সোহাইল উদ্দীন আনসারীর সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন মাওলানা আবদুন নবী আলকাদেরী, সৈয়দ মুহাম্মদ আবু আজম, নাছির উদ্দিন মাহমুদ, মাওলানা এনাম রেজা, শাহজাদা নিজামুল করিম সুজন, মুহাম্মদ আলমগীর বঈদী, এইচ এম শহীদুল্লাহ, এনামুল হক সিদ্দিকী, মুহাম্মদ ইব্রাহিম খলীল, আমান উল্লাহ, মঈনুদ্দীন কাদেরী, মুহাম্মদ নুরুদ্দীন কাদেরী, মুহাম্মদ বাহাউদ্দীন কাদেরী, সৈয়দ মুহাম্মদ তারেক, শফিউল ইসলাম, মুহাম্মদ ফারুক হোসাইন, মোজাম্মেল হক শাহেদ, এনামুল হক মুন্না, মফিজুল আলম, জিকু প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত ২৭ এপ্রিল গাজীপুরের হায়দারাবাদ এলাকায় রইস উদ্দিনকে গাছে বেঁধে মারধর করে একদল মানুষ। পরে তাকে পুলিশে সোপর্দ করে। পরদিন ভোরে কারাগারে তার মৃত্যু হয়। রইসের মৃত্যুকে ‘পরিকল্পিত’ হত্যাকাণ্ড দাবি করেছে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত। ‘হত্যাকারীদের’ গ্রেপ্তারের দাবিতে গত সোমবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সারা দেশে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনার পূর্বঘোষিত সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি ছিল। এদিন নগরের মুরাদপুরে সড়ক অবরোধকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে পুলিশ। অবরোধকারী ও পুলিশের সাথে ধাওয়া–পাল্টা–ধাওয়া হয়েছে।