ফিলিস্তিনের প্রায় দুর্ভিক্ষ কবলিত ছিটমহল গাজার উত্তরাঞ্চলে মানবিক ত্রাণের জন্য অপেক্ষারত ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি সেনাদের নির্বিচার গুলিতে অন্তত ৩০ জন নিহত হয়েছেন। খবর বিডিনিউজের।
বুধবার এ ঘটনা ঘটেছে বলে গাজার শাসক গোষ্ঠী হামাস পরিচালিত সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি জানিয়েছে। গাজার সিভিল ডিফেন্সের এক মুখপাত্র আন্তর্জাতিক এক বার্তা সংস্থাকে জানিয়েছেন, ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে আরও ৩০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। ইসরায়েল জানিয়েছে, এই ঘটনার বিস্তারিত এখনও পরীক্ষা করে দেখছে তারা। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, জিকিম ক্রসিংয়ের তিন কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে ত্রাণবাহী ট্রাকগুলোর চারপাশে গাজার বাসিন্দারা জড়ো হওয়ার পর তারা সতর্ক করে গুলি ছুড়েছিল, কিন্তু সেখানে আইডিএফের গুলিতে কেউ হতাহত হয়েছে কি না’ তা তাদের জানা নেই। গাজা সিটির আল–শিফা হাসপাতালের পরিচালক মোহাম্মদ আবু সালমিয়া ওই বার্তা সংস্থাকে জানিয়েছেন, এ ঘটনার পর তার হাসপাতালে ৩৫টি মৃতদেহ এসেছে। পরে হাসপাতালটি জানায়, ওই ঘটনায় অন্তত ৪৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। পৃথকভাবে গাজার হাসপাতালের সূত্রগুলো বিবিসিকে জানায়, গাজার দক্ষিণাঞ্চলের রাফা শহরে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে ও ইসরায়েলের সমর্থনে স্থাপিত গাজা হিউম্যানেটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) কাছে বুধবার সকালে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে ছয় ফিলিস্তিনি নিহত হন। জিএইচএফ বিবিসিকে জানিয়েছে, বুধবার তাদের ওই স্থাপনায় বা তার আশপাশে কোনো হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেনি।
আইডিএফ বিবিসিকে জানিয়েছে, তাদের সেনাদের কাছে জড়ো হওয়া সন্দেহভাজনদের দূরে সরে যেতে বলেছিল তারা, পরে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ওই ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র থেকে কয়েকশ মিটার দূরত্বে সতর্কীকরণ গুলিবর্ণ করে। বাহিনীটি আরও বলেছে, প্রাথমিক পর্যালোচনায় ধারণা পাওয়া গেছে, আইডিএফের কাছে যে তথ্য আছে তার সঙ্গে খবরে প্রকাশিত হতাহতের সংখ্যা মিলছে না। জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গাজায় মে মাসের শেষ দিক থেকে ত্রাণ নিতে গিয়ে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে এক হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গাজার হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৩ সালে গাজায় ইসরায়েলি হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে ১৫০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি অনাহারে মারা গেছেন যাদের ৮৯ জনই শিশু। গাজায় ২২ মাস ধরে চলা ইসরায়েলি হামলায় ৬০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।