ইরানে পুলিশ হেফাজতে মাশা আমিনির মৃত্যু ঘিরে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভে সরকারের সহিংস দমনপীড়নের শিকার বিক্ষোভকারীদের সমর্থনে শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন, লস অ্যাঞ্জেলেস ও জার্মানির বার্লিনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল মল থেকে হোয়াইট হাউজ অভিমুখে সব বয়সের হাজার হাজার নারী-পুরুষ ইরানের পতাকার সবুজ, সাদা, লাল রঙের পোশাক পরে পায়ে হেঁটে মিছিল করেছে। গোটা যুক্তরাষ্ট্রে থেকে মাঠ পর্যায়ের সংগঠকরা একযোগে এই বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন। এর মধ্যে অনেক ইরানিও ছিলেন। আবার অনেকে টরেন্টো থেকে এসে এই মিছিলে সামিল হয়েছেন। খবর বিডিনিউজের।
ইরানের বাইরে লস অ্যাঞ্জেলেসেই সবচেয়ে বেশি ইরানির বাস। সেখানে বিক্ষোভকারীরা মিছিল করে ইরান সরকারের পতন দাবি করেছে। শত শত ইরানি পতাকাও উড়িয়েছে তারা। মিছিলে নারী স্বাধীনতা ও ইরানে ন্যায়বিচার চেয়ে স্লোগান দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। ওয়াশিংটন ডিসি তে বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দেওয়ার পাশাপাশি জীবন ও স্বাধীনতা বিষয়ক ঐতিহ্যবাহী পার্সি গানও গেয়েছে। জার্মানির বার্লিনে লাখ খানেক মানুষ ইরানের বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে বিক্ষোভ করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ‘উইমেন লাইফ ফ্রিডম কালেকটিভ’ এ বিক্ষোভ আয়োজন করে। জার্মানির বিভিন্ন স্থান এবং ইউরোপের অন্যান্য দেশ থেকেও মানুষ এ বিক্ষোভে সামিল হয়েছে।
নেদারল্যান্ডস থেকে এসে বার্লিনের এই বিক্ষোভে যোগ দেওয়া এক ইরানি বলেন, আমাদের এখানে সামিল হওয়া, ইরানের জনগণের কণ্ঠ হওয়া জরুরি। যারা রাস্তায় রাস্তায় নিহত হচ্ছে। ইরানে এটি এখন আর বিক্ষোভ নয়, এটি বিপ্লবে রূপ নিয়েছে। বিশ্বের মানুষকেও সেটি দেখতে হবে। গত মাসে ঠিকমত হিজাব না পরায় মাশা আমিনি নামের ২২ বছরের এক তরুণীকে নীতি পুলিশ আটক করার পর তাদের হেফাজতে সেই তরুণীর মৃত্যু হলে ইরানজুড়ে এর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। মাশার দাফনের দিন থেকে যে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল তার আগুন এখন পুরো ইরান জুড়ে জ্বলছে। এবারের বিক্ষোভে নারীদের অংশগ্রহণও উল্লেখ করার মতো। বিক্ষোভে সরকারের দমনাভিযানে এরই মধ্যে দেড় শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে। তারপরও চলছে বিক্ষোভ। নিরাপত্তা বাহিনীর ধরপাকড়, গুলি, দমন-পীড়নেও বিক্ষোভ থামছে না।