পৃথিবীতে স্রষ্টার সৃষ্টি প্রতিটি মানুষই কিছু মানবাধিকার নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। আলো, বাতাস, পানি, জীবনযাপনের অধিকার ইত্যাদি। এ ক্ষেত্রে নারী পুরুষের মধ্যে কোন ভেদাভেদ নেই, কালের আবর্তনে সমাজ তথা দেশে ইভটিজিং নামক অভিশাপের প্রাদুর্ভাব ঘটে। ফলে প্রত্যেক নারী তাদের প্রাত্যহিক জীবনে নিজেদেরকে সংকীর্ণ, অনিরাপদ ও কৃত্রিম বেড়াজালে আবদ্ধ মনে করেন। ইভটিজিং বলতে বোঝায় কোনো নারী, যুবতী, কিশোরী বা মেয়ে শিশুকে তার স্বাভাবিক কাজকর্ম করা অবস্থায় অশ্লীল বা অশালীন মন্তব্য করা, বিভিন্ন ধরনের ভয়-ভীতি প্রদর্শন, তার নাম ধরে ডাকা বা বিকৃত নামে তাকে সম্বোধন, চিৎকার চেঁচামেচি করা, তার দিকে উদ্দেশ্য মূলকভাবে কোনোকিছু ছুঁড়া, ব্যক্তিত্বে আঘাত লাগে এমন ধরনের করাকে বোঝায়। বর্তমানে ইভটিজিং একটি সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। প্রতিনিয়ত নারী কোনো না কোনো ভাবে ইভটিজিং এর স্বীকার হচ্ছে। সাধারনত মেয়েশিশু, কিশোরী মেয়ে, স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গামী ছাত্রী, বিভিন্ন পোশাকশিল্পে নিয়োজিত নারী শ্রমিকরাই ইভটিজিং এর স্বীকার হয় বেশি। করোনার প্রকোপের কারণে ইভটিজিং প্রতিরোধের বিষয়টি হয়তো সকলের কাছে অদৃশ্যমান হয়ে গেছে, আজকাল প্রায়শই বিভিন্ন স্কুল কলেজের আশ পাশ এলাকা বিশেষ করে মফস্বল এলাকার রাস্তা ঘাটে দেখা যায় বখাটে ছেলেদের উৎপাত, ফলে কলেজ বিদ্যালয়গামী ছাত্রীদের মধ্যে সবসময় ভয় ভীতি কাজ করে, এক পর্যায়ে তারা কলেজ কিংবা বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করে দেয়, যা সুশীল সমাজ তথা স্বাধীন দেশে কারো কাম্য নয় বলে মন্তব্য করছেন বিশেষজ্ঞরা। সংবিধানের ৩৫৪নং ধারায় নারী’র নিরাপত্তায় ইভটিজারদের বিরুদ্ধে শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ৯(খ) ধারায় ও নারীদের নিরাপত্তার কথা বলা হয়েছে। কাজেই ইভটিজিং বা নারী উত্যক্তকারীদের বিরুদ্ধে সকলকে সোচ্চার হতে হবে, কোনো ধরনের ইভটিজিং এর ঘটনা ঘটলে সমাজের সকলকে ভিকটিমের পাশে থেকে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে এবং সঙ্গে সঙ্গেই প্রতিকারের জন্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা নিতে হবে।
লেখক : শিক্ষক












