ইবি ছাত্রলীগের পাঁচ জনকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার

নতুন হল বাছাই করলেন সেই নির্যাতিতা ছাত্রী

| রবিবার , ৫ মার্চ, ২০২৩ at ৬:০৭ পূর্বাহ্ণ

কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে ছাত্রীকে নির্যাতনের ঘটনায় ছাত্রলীগের পাঁচ নেতাকর্মীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। গতকাল শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে প্রক্টর শাহাদাত হোসেন জানান।

 

এদিকে উচ্চ আদালতের নির্দেশে কড়া নিরাপত্তায় গতকাল বেলা ১২টায় বাবার সঙ্গে ক্যাম্পাসে ফিরেছেন হলে নির্যাতনের শিকার প্রথম বর্ষের সেই ছাত্রী। পরে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাত করে নতুন হলের কথা জানান। ওই ছাত্রী বলেন, আগের হলে আমি যেতে চাই না। আমি অন্য হলে থাকতে

আতঙ্কিত। তাই আমি বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে থাকতে চাই। আমি সেটাই বাছাই করেছি। আমি সার্বিক নিরাপত্তা চাই। প্রক্টর শাহাদাত হোসেন বলেন, হাই কোর্টের নির্দেশনা মেনে ওই শিক্ষার্থীকে তার পছন্দের হল শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে আসন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তার নিরাপত্তার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আজ (গতকাল) শৃঙ্খলা কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছে। খবর বিডিনিউজের।

সাময়িকভাবে বহিষ্কার পাঁচ শিক্ষার্থী হলেন২০১৭১৮ শিক্ষাবর্ষের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, ২০২০২১ শিক্ষাবর্ষের চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মী হালিমা আক্তার ঊর্মি, ২০২০২১ শিক্ষাবর্ষের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান মীম, ২০২০২১ শিক্ষাবর্ষের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী তাবাসসুম ইসলাম এবং মোয়াবিয়া জাহান।

প্রক্টর বলেন, সভায় পাঁচ ছাত্রীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়ারও সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে তাদের জবাব দিতে হবে। জবাব সন্তোষজনক না হলে তাদের চূড়ান্তভাবে বহিষ্কার করা হবে।

গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে ডেকে রাত ১১টা থেকে রাত ৩টা পর্যন্ত ইবি শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরার নেতৃত্বে আরও কয়েকজন সহযোগীদের দ্বারা নবীন ওই ছাত্রীকে বিবস্ত্র করে মারধর ও শারীরিকভাবে নির্যাতন এবং

নির্যাতনের ঘটনা ভিডিও ধারণ করে নেটে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। পরদিন সকালে ভয়ে ক্যাম্পাস থেকে পালিয়ে বাড়ি চলে যান ওই ছাত্রী। পরে ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর ঘটনার বিবরণ দিয়ে লিখিত অভিযোগ দেন ওই ছাত্রী। এরপর ঘটনা তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং হল কর্তৃপক্ষ

দুটি কমিটি গঠন করে। এর বাইরে হাই কোর্টের নির্দেশে একটি বিচার বিভাগীয় এবং ছাত্রলীগ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা আরও দুটি কমিটি করেছে। এর মধ্যে আইন বিভাগের অধ্যাপক রেবা মন্ডলকে আহ্বায়ক করে ১৫ ফেব্রুয়ারি পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন উপাচার্য। কমিটিকে সাত কার্যদিবসের

মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। কমিটি ১৮ ফেব্রুয়ারি কার্যক্রম শুরু করে। ভুক্তভোগী, অভিযুক্ত ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার শেষে প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনা করা হয়। এরপর ২৬ ফেব্রুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। এরই মধ্যে ছাত্রলীগের পাঁচ নেতাকর্মীর হলের সিট স্থায়ীভাবে বাতিল করেছে কর্তৃপক্ষ। সংগঠন থেকেও তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহতাহতদের উদ্ধার কার্যক্রম তদারকে মেয়র ও জেলা প্রশাসক
পরবর্তী নিবন্ধলোহার গেট কেড়ে নিলো শিশু জাইরিনের প্রাণ