ইন্দোনেশিয়ার স্টেডিয়ামে নিহতদের মধ্যে ৩২ শিশু

| মঙ্গলবার , ৪ অক্টোবর, ২০২২ at ৫:২৯ পূর্বাহ্ণ

ইন্দোনেশিয়ার একট ফুটবল স্টেডিয়ামে খেলার ফলাফল নিয়ে দাঙ্গার সময় পদদলিত হয়ে নিহত অন্তত ১২৫ জনের মধ্যে ৩২ শিশু রয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। ইন্দোনেশিয়ার ফুটবলে অনেকদিন ধরেই গুন্ডামি ও সহিংসতা চলে আসছে, বিশেষভাবে জাকার্তার মতো রাজধানী শহরে, কিন্তু শনিবার জাভার ছোট একটি শহরে ঘটা সমস্যাটিকে সামনে নিয়ে এসেছে। এর আগে নিহতদের মধ্যে ১৭ শিশু থাকার কথা বলা হলেও তা বেড়ে ৩২ জনে দাঁড়িয়েছে বলে দেশটির নারী ক্ষমতায়ন ও শিশু সুরক্ষা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা নাহার জানিয়েছেন। নিহত শিশুদের বয়স ৩ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে বলে জানিয়েছেন তিনি। খবর বিডিনিউজের।
দাঙ্গার মধ্যে পদদলিত হয়ে নিহত আহমাদ চাহিও (১৫) ও মুহাম্মদ ফারেলের (১৪) বড় বোন এন্দাহ ওয়াহিউনি বলেন, এমন পরিণতি ঘটবে তা আমি ও আমার পরিবার ভাবতেই পারিনি। তারা ফুটবল খেলা পছন্দ করতো, কিন্তু কখনোই কানজুরুহান স্টেডিয়ামে গিয়ে সরাসরি আরেমার খেলা দেখেনি। এই প্রথম তারা খেলা দেখতে গিয়েছিল। রোববার ভাইদের দাফনের সময় একথা বলেন তিনি। তারা সবাই আরেমা এফসির সমর্থক। সোমবার ইন্দোনেশিয়ার নিরাপত্তা মন্ত্রী মাহফুদ এমডি বলেন, সেদিন কী ঘটেছিল তা তদন্ত করে দেখতে সরকার একটি স্বাধীন ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং টিম গঠন করবে আর এতে শিক্ষাবিদ, ফুটবল বিশেষজ্ঞদের পাশাপাশি সরকারি কর্মকর্তারাও থাকবেন।
তিনি জানান, শোচনীয় ঘটনার জন্য কে দায়ী তার বের করার লক্ষে দলটি আগামী কয়েক সপ্তাহ ধরে তদন্ত চালাবে। ইন্দোনেশিয়ার দৈনিক কোরান টেম্পো সোমবার তাদের প্রথম পৃষ্ঠা পুরোটা কালো রেখে মাঝখানে লাল অক্ষরে আমাদের ফুটবল ট্র্যাজেডি লিখে সঙ্গে নিহতদের একটি তালিকা দিয়েছে। শনিবার রাতে আরেমা এফসি ও পারসেবায়া সুরায়া ক্লাবের ম্যাচ শেষে দাঙ্গা ও পদদলনের ঘটনাটি ঘটে। ইন্দোনেশিয়ার লিগা ওয়ানের ম্যাচটি ৩-২ গোলে জেতে পারসেবায়া। দুই দশকের বেশি সময় পর পারসেবায়ার কাছে হারায় আরেমার সমর্থকেরা ক্ষুব্ধ হয়ে মাঠে ঢুকে পড়ে দাঙ্গা শুরু করলে তাদের হটাতে পুলিশ কাঁদুনে গ্যাস ছোড়ে। এসময় আতঙ্কিত দর্শকরা জনাকীর্ণ স্টেডিয়ামটি থেকে একযোগে বের হওয়ার চেষ্টা করলে পদদলনের ঘটনা ঘটে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগ থেকে পারসেবায়ার সমর্থকদের কাছে টিকিট বিক্রি করা হয়নি। মন্ত্রী মাহফুদ রোববার জানিয়েছিলেন, স্টেডিয়ামটিতে ধারণ ক্ষমতার চেয়েও বেশি দর্শক ছিল। ৩৮ হাজার লোকের জন্য নকশা করা স্টেডিয়ামটিতে প্রায় ৪২ হাজার টিকিট ইস্যু করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন তিনি। বিশ্ব ফুটবলের অভিভাবক সংস্থা ফিফা ঘটনাকে জড়িতদের সবার জন্য একটি অন্ধকার দিন বলে আখ্যা দিয়েছে। ঘটনায় ইন্দোনেশিয়ার ফুটবল কর্তৃপক্ষের কাছে একটি প্রতিবেদন চেয়েছে তারা। বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্তা সংস্থা ফিফার নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী, মাঠে নিরাপত্তাকর্মীরা কখনোই আগ্নেয়াস্ত্র কিংবা দর্শক নিয়ন্ত্রণে গ্যাস ব্যবহার করতে পারেন না। পূর্ব জাভার পুলিশ আইনটির কথা জানত কিনা, সেই প্রশ্নের তাৎক্ষণিক কোনো জবাব পায়নি রয়টার্স। আরেমা এফসির সভাপতি গিলান উইদা প্রমাণা কান্নাবিজড়িত কণ্ঠে পদদলিত হয়ে নিহত ও আহতদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন এবং এই বিপর্যয়ের সব দায় গ্রহণ করেছেন। ফুটবল থেকে জীবনের দাম অনেক বেশি, এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধস্বল্প আয়ের মানুষের জন্য নির্মাণ হচ্ছে তিনটি আবাসিক ভবন
পরবর্তী নিবন্ধকাতার বিশ্বকাপে রেফারিদের কো-অর্ডিনেটর রাঙ্গুনিয়ার শিয়াকত