প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সাবেক অধ্যাপক, ‘আ হিস্ট্রি অব চিটাগাং’সহ অনেক গ্রন্থের রচয়িতা ড. সুনীতি ভূষণ কানুনগো আর নেই। গতকাল শনিবার বিকালে তিনি পরলোক গমন করেছেন। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, গতকাল বিকাল ৪টার পরে বোয়ালখালী উপজেলার কানুনগোপাড়ার বাড়ি থেকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯১ বছর। তিনি দীর্ঘদিন অসুস্থ অবস্থায় চাচাতো ভাই গিটারিস্ট দোলন কানুনগোর তত্ত্বাবধানে ছিলেন।
দোলন কানুনগো বলেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। গতকাল বিকালে কানুনগোপাড়ার বাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়লে পটিয়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়ার পথে উনার মৃত্যু হয়। তিনি জানান, আজ রোববার বেলা ১১টায় নিজ বাড়িতে উনার শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হবে।
সুনীতি ভূষণ কানুনগোর এক ছেলে যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন। এ ইতিহাসবিদের স্ত্রী অধ্যাপক লীলা কানুনগো এবং আরেক সন্তান আগেই মারা গেছেন। তিনি তার কাকাতো ভাইদের সঙ্গে কানুনগোপাড়ায় নিজ বাড়িতে থাকতেন।
পুলিনবিহারী কানুনগো ও সুচারুপ্রভা কানুনগোর ছেলে সুনীতি ভূষণ কানুনগো ১৯৩৪ সালের ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার কানুনগোপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। উপমহাদেশের বিখ্যাত ঐতিহাসিক ড. কালিকারঞ্জন কানুনগো তার চাচা।
সুনীতি ভূষণ ১৯৬০ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আধুনিক ইতিহাসে এমএ এবং ১৯৭২ সালে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ১৯৬১ সালে স্যার আশুতোষ সরকারি কলেজে শিক্ষকতার মধ্য দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘ সময় শিক্ষকতার পর ১৯৯৯ সালে অবসরে যান।
তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে আ হিস্ট্রি অব চিটাগং, বাংলার ইতিহাস, বাংলার শাসনতান্ত্রিক ইতিহাস, দ্য চিটাগং লিভল্ট, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে চট্টগ্রাম, আ হিস্ট্রি অব দ্য চিটাগং হিল ট্র্যাকস, চাকমা রেসিসটেন্স টু ব্রিটিশ ডমিনেশন, বাংলায় বৈষ্ণব আন্দোলন, বাংলায় ভক্তিবাদ, চট্টগ্রাম চরিতাভিধান ও চট্টগ্রামের প্রাচীন ইতিহাস।
সুনীতি ভূষণ কানুনগোর মৃত্যুতে চট্টগ্রাম ভাষা পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোঃ আবুল কাসেম, চট্টগ্রাম একাডেমির মহাপরিচালক জাহাঙ্গীর মিঞা, স্যার আশুতোষ সরকারি কলেজ প্রাক্তন ছাত্রছাত্রী সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দীপেন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মুস্তফা নঈম, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল মোমেন শোক প্রকাশ করেছেন।