ইতিবাচক চিন্তা জীবনকে পরিবর্তন করতে পারে

টুম্পা ভট্টাচার্য্য | রবিবার , ৪ এপ্রিল, ২০২১ at ৬:৪০ পূর্বাহ্ণ

হাজারো নারীর মনে আলো জ্বালাতে সাহায্য করেছেন এই দুজন নারী। যারা হতাশাকে দূর করে বিশ্বজয় করেছেন। একজন হলেন লিজি ভেলাস্কুইজ, যিনি বিশ্বব্যাপী অভিপ্রায়কারী স্পীকার, সামাজিক মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও লেখিকা।
লিজি জন্মগতভাবে বিরল একটি রোগে আক্রান্ত।এই রোগের কারণে তাকে দেখতে খুব অস্বাভাবিক লাগে। ছোটবেলা থেকে প্রতিবেশীর বাচ্চারা লিজিকে দেখে ভয় পেতো বলে সবাই বলতো তাকে মেরে ফেলার জন্য। এর থেকে একটা নির্মম পরিস্থিতি কোনো মানুষের পক্ষে হতে পারে বলে আমার জানা নেই। তবুও লিজি হার মানেননি, জীবনের হতাশাকে দূরে ঠেলে উঠে দাঁড়িয়েছেন। আজ তাই তিনি তাঁর জীবনের উপর ভিত্তি করে পুরস্কার-বিজয়ী তথ্যচিত্রের একটি নির্বাহী প্রযোজক। ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের একটি অ্যাকাডেমি-ক্যুইফাইং রিলিজ এবং স্প্রিং ২০১৬ সালে আন্তর্জাতিক প্রকাশনার উদ্বোধন করেন। ২০১২ সালের ৬ জুন মুক্তিলাভকারী লিজির সর্বশেষ বই ‘ডের টু বে কাইন্ড: হিউ এঙটেনডেরনাল ক্যাসেশন্স ট্রান্সফরম ইন দ্য ওয়ার্ল্ড” প্রকাশিত হয়। তিনিই একজন সফল নারী ব্যক্তিত্ব হিসেবে সমস্ত নারীকে আশার আলো দেখিয়ে যাচ্ছেন যার কাছে বাহ্যিক সৌন্দর্য একেবারে গৌণ।
দ্বিতীয় জন নারী হলেন ‘লুইস হ্যা’। যিনি ছোটো থেকে কুৎসিত সমাজের শিকার হন বার বার।
লুইসের জন্মের আগে তার বাবা মাকে ছেড়ে চলে যায় অন্যত্র। চার বছর বয়সে লুইস প্রতিবেশীর দ্বারা ধর্ষিত হন। লুইসের জন্মের পর তার মা আবার বিয়ে করে এবং মায়ের বিয়ে করা স্বামীর কাছ থেকেও তাকে বার বার শারীরিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়। চৌদ্দ বছর বয়সে সে প্রেগনেন্ট হয়। কিন্তু অভাবের কারণে তার সন্তানকে দত্তক দিয়ে চলে যায় শিকাগোতে। সেখানে মডেলিং করতে গিয়ে বিয়ে হয় একজন ইংলিস ম্যানের সাথে। প্রায় অনেক বছর সংসার করার পর বোঝাপড়ায় অমিল থাকার কারণে ডিভোর্স হয় তাদের। এরপর বিতৃষ্ণা আর অবসাদে তার জীবন বিষময় হয়ে ওঠে।একদিন তিনি ভাবলেন জীবনে এভাবে হাল ছেড়ে দিলে চলবে না। তাকে কিছু করতে হবে।এরপর তিনি চার্চে জীবন নিয়ে বক্তৃতা দিতেন এবং সেখান থেকে আস্তে আস্তে তিনি একজন খ্যাতিমান বক্তা ও লেখকে পরিণত হন। বিভিন্ন মোটিভেশনাল সেমিনারে তাঁকে বক্তৃতা দেয়ার জন্য দেশবিদেশ থেকে আমন্ত্রণ জানানো হতো। তাঁর লেখা মোটিভেশনাল বই ‘ইউ ক্যান হিল ইওর লাইফ’ থেকে অনেকে উৎসাহ নিয়ে জীবন পাল্টে ফেলেছেন। লুইস মনে করেন চিন্তাধারা বদলানোর মাধ্যমে জীবনকে বদলে ফেলা সম্ভব। তিনি শুধু জীবন নয়, ইতিবাচক চিন্তার মাধ্যমে তার ক্যান্সার রোগ থেকেও আরোগ্য লাভ করেন।
সত্যি এমন দৃষ্টান্ত থাকার পরেও আমরা ছোট ছোট বাধা বিপত্তি কিংবা হতাশাকে প্রশ্রয় দিয়ে থাকি এবং আত্মহত্যার কথা ভাবি। লুইসও একজন মানুষ, লিজিও একজন মানুষ। তাঁদের এমন মনোবল শক্তি থাকতে পারলে আমাদেরও নিশ্চিত থাকতে পারে। আমরাও পারি সব বাধাকে অতিক্রম করে স্বপ্ন ছোঁয়ার পরিকল্পনায় এগিয়ে যেতে। শুধুমাত্র ধৈর্য ও ইতিবাচক চিন্তা জীবনকে পরিবর্তন করে দিতে পারে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রাম ওয়াসার কাছে খোলা চিঠি
পরবর্তী নিবন্ধযুদ্ধ দিনের কথা