ইতিবাচক কর্মকাণ্ডে অটিস্টিকদের গ্রহণযোগ্যতা এসেছে সমাজে

অটিজম সচেতনতা দিবসের সভায় জেলা প্রশাসক

| বুধবার , ৩ এপ্রিল, ২০২৪ at ১১:১৭ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেছেন, বর্তমান সরকার অটিজম বান্ধব। অটিজম নিয়ে সরকারের পাশাপাশি ব্যক্তি বিশেষ ও বেসরকারি এনজিওগুলোর ইতিবাচক কর্মকাণ্ডের ফলে আমরা একটি অবস্থানে এসে পৌঁছেছি। প্রধানমন্ত্রী কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের নিরলস প্রচেষ্টায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অটিজম বিষয়ে সর্বত্র সচেতনতা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে সমাজে স্বাভাবিক মানুষের মতো অটিস্টিকদের কিছুটা হলেও গ্রহণযোগ্যতা এসেছে। এ জেলায় বর্তমানে পুরুষ, মহিলা ও হিজড়াসহ এনডিডি সম্পন্ন ব্যক্তির সংখ্যা ১৭ হাজার ২৭৬ জন। তদ্মধ্যে অটিজম ডিসঅর্ডার ৫ হাজার ২১৯ জন, ইন্টেলেকচুয়াল ডিসঅ্যাবিলিটি (বুদ্ধি প্রতিবন্ধী) ৭ হাজার ৩৩৪ জন, সেরিব্রাল পালসি ৪ হাজার ৩০৩ জন, ডাউন সিনড্রোম ৪২০ জন। এদের জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের বাইরে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে মাত্র ১১টি। ১১টি প্রতিষ্ঠানের ক্যাপাসিটি ১১শ। আমাদের আরও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান দরকার। যেগুলো আছে সেগুলোর সক্ষমতা আরও বৃদ্ধি করতে হবে এবং সেগুলোতে শিক্ষক, সাইকোলজিস্ট, সাইকিয়াট্রিস্ট ও ফিজিওথেরাপিস্টসহ ডাক্তারনার্সকর্মচারীদের সংখ্যা আরও বাড়াতে হবে।

গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে জেলা প্রশাসন ও সমাজসেবা কার্যালয় আয়োজিত ১৭তম বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য বিষয়– ‘সচেতনতাস্বীকৃতিমূল্যায়ন : শুধু বেঁচে থাকা থেকে সমৃদ্ধির পথে যাত্রা’। আলোচনা সভার পূর্বে সার্কিট হাউজের সামনে বেলুন উড়িয়ে দিবসটির উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান এবং চট্টগ্রাম হার্ট ফাউন্ডেশনের সিবিটি প্র্যাকটিশনার ও সাইকোলজিস্ট তানজিয়া রহমান।

বিভাগীয় সমাজসেবা কার্যালয়ের পরিচালক কাজী নাজিমুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও শহর সমাজসেবা অফিসার মোহাম্মদ আলমগীরের সঞ্চালনায় সভায় মূখ্য আলোচক ছিলেন চট্টগ্রাম হার্ট ফাউন্ডেশনের সিবিটি প্র্যাকটিশনার ও সাইকোলজিস্ট তানজিয়া রহমান, চট্টগ্রাম লেডিস ওয়েলফেয়ার ক্লাবের সভাপতি তানজিয়া রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. ফরিদুর আলম। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মেরিন সিটি মেডিকেল কলেজের শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের অধ্যাপক ও নিষ্পাপ অটিজম ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট ডা. বাসনা মুহুরী, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও অটিজম সংস্থাস্পেকট্রা স্কুল অব অটিজমের চেয়ারপারসন ডা. ফাহমিদা ইসলাম চৌধুরী ও অটিজম সংস্থাফেয়ার’র যুগ্ম সম্পাদক প্রফেসর মো. আবুল হোসেন। সমাজসেবা অদিপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, অটিজম সংস্থাপ্রয়াস, আশার আলো, ফাউন্ডেশন ফর অটিজম রিসার্চ এন্ড এডুকেশন (ফেয়ার), নিষ্পাপ অটিজম ফাউন্ডেশন, প্রেরণা অটিজম সেন্টার, অটিস্টিক চিলড্রেন ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন, সেহের অটিজম, দ্বিপালয় অটিজম চিলড্রেন একাডেমি, চিটাগাং অটিস্টিক সোসাইটি, সুইড বাংলাদেশ ও প্রশান্তি অটিজম স্কুলের কর্মকর্তাকর্মচারীরা অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

জেলা প্রশাসক বলেন, আগামী ২০৪১ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী আমাদেরকে একটি রূপকল্প দিয়েছেন। এতে বাংলাদেশের মাথাপিছু গড় আয় হবে ১২ হাজার ৫শ মার্কিন ডলার। আমাদের এ মুহূর্তে মাথাপিছু গড় আয় ২ হাজার ৭৬৫ মার্কিন ডলার। এটাকে চারগুণে উন্নীত করতে হবে। মানসিক ও এনডিডি সম্পন্ন ব্যক্তিসহ কাউকে পেছনে ফেলে নয়, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রথমে প্রত্যেক ব্যক্তিকে সমাজ বিনির্মাণে এগিয়ে আসতে হবে। সমাজের মূল কাঠামো অর্থনৈতিক চাহিদা শক্তির মূল স্রোতে সবাইকে শামিল হতে হবে। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাংলাদেশের মানুষের সহযোগিতা চায় মোহাম্মদ আলী ফাউন্ডেশন
পরবর্তী নিবন্ধইমরানের স্বপ্নপূরণ, ফারিণের আত্মপ্রকাশে সঙ্গী তাহসান