ইটের খোয়া, মাটি ও বালু দিয়ে প্রকাশ্যে চলছে কর্ণফুলী নদী ভরাট

জে. জাহেদ, নিজস্ব প্রতিবেদক | বুধবার , ২১ আগস্ট, ২০২৪ at ৯:৪২ পূর্বাহ্ণ

ইটের খোয়া, মাটি ও বালি দিয়ে কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণপাড় শাহ আমানত সেতুর (নতুন ব্রিজ) নিচে প্রকাশ্যে ‘কর্ণফুলী নদী’ ভরাট করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে দুই প্রভাবশালী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।

গত দুই মাস যাবৎ শিকলবাহা ইউনিয়নের নদী পাড়ে দিনদুপুরে প্রকাশ্যে নদী ভরাটের এই কর্মযজ্ঞ চললেও স্থানীয় প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নেয়নি। পরে এলাকাবাসীর দাবি ও জনরোষে স্থানীয় প্রশাসন, বন্দর কতৃপক্ষ ও পরিবেশ অধিদপ্তরের লোকজন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন বলে সূত্র জানায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, কাজ বন্ধ করে মাটি সরিয়ে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে প্রশাসনের নির্দেশনার পরেও ভরাট করা নদী সংলগ্ন জমির চারপাশে টিনের বেড়া দিয়ে ঘেরাও করে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে কর্ণফুলীর সহকারী কমিশনার ভূমিকে বারবার অবগত করা হলেও তিনি বিষয়টি গুরুত্ব দেননি বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।

এতে এলাকাবাসীর দাবি, কর্ণফুলী উপজেলার নতুন ব্রিজের নিচের অনেকটা অংশ ভরাট করে জেটি নির্মাণ করছে প্রভাবশালী একটি মহল। এতে নদীর গতিপথ ও প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। নদীকে সংকীর্ণ করে বাঁধা দেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসী শুরু থেকেই সোচ্চার ছিলেন। কিন্তু দেশের বর্তমান পরিস্থিতির সুযোগ নিয়েছে নদী দখলদারেরা।

খোঁজ নিয়ে আরো জানা যায়, কর্ণফুলী এলাকার মেসার্স নাহার ট্রেডিং ও মেসার্স বার আউলিয়া কর্পোরেশন নামে দুটি প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে নদীগর্ভে বালি ভরাট করে অবৈধ দখলের পাঁয়তারা করছেন।

স্থানীয়রা বলছেন, ব্যক্তি মালিকানার জমিতে কোনো ব্যক্তি প্রকল্প করতেই পারে। কিন্তু অপরিকল্পিতভাবে নদীর স্বার্থ রক্ষা না করে নদী ভরাট করা অন্যায়।

এ প্রসঙ্গে নদী নিরাপত্তার সামাজিক সংগঠন নোঙর-এর মুখপাত্র সুমন শামস আজাদীকে বলেন, ‘সিএস-আরএস ম্যাপ অনুযায়ী কর্ণফুলী নদী চিহ্নিত করা দরকার। আইন অনুযায়ী খাল, নদী ও জলাশয় দেখা ভাল করেন মূলত জেলা প্রশাসক। তাঁরা কতটুকু সহযোগিতা আর দায়িত্ব পাল করেন সেটার উপর নির্ভর করে নদী দখল পরিস্থিতি। নদী উদ্ধারে শক্তি দরকার। আশা করছি প্রশাসনের সেই শক্তি রয়েছে।’

এ ব্যাপারে কর্ণফুলী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রয়া ত্রিপুরা কোন মন্তব্য না করলেও উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মাসুমা জান্নাত বলেন, ‘শাহ আমানত সেতুর নিচে কর্ণফুলী নদী মাটি ও বালু দিয়ে ভরাট করে অবৈধভাবে দখল করছে বলে অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের প্রেক্ষিতে এসিল্যাণ্ড, বন্দর কতৃপক্ষের সহকারি ম্যানেজার ও পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শকসহ নদী তীরবর্তী এলাকা পরিদর্শন করেছেন।’

ইউএনও আরও বলেন, ‘ঘটনার সত্যতা পেয়ে অভিযুক্ত দুই প্রতিষ্ঠানকে দুই দিনের মধ্যে বালি অপসারণের নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। নতুবা বন্দর কর্তৃপক্ষ ও পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক মামলা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে।’

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রাম বন্দরের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান সোহায়েল আটক
পরবর্তী নিবন্ধসোনার দামে ফের রেকর্ড, ভরি ১ লাখ ২৪ হাজার ৫০১ টাকা