ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেকের সৃষ্টি দৈনিক আজাদী সমাজ পরিবর্তনে আলোর দিশারী

স্মরণ সভায় অভিমত

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ১২ নভেম্বর, ২০২১ at ৫:১৬ পূর্বাহ্ণ

ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ আবদুল খালেকের মতো মানুষকে স্মরণ করলে জীবন পূর্ণতার দিকে এগিয়ে যায়। তিনি ছিলেন একজন সমাজ সংস্কারক, দূরদৃষ্টি সম্পন্ন ব্যক্তিত্ব। তাঁর কর্মময় জীবনে মানব মুক্তির চিন্তা ও চেষ্টাই মুখ্য ছিল। তিনি লাইব্রেরি করেছিলেন। এর উদ্দেশ্য শুধু বই বিক্রি ছিল না। মূল উদ্দেশ্যটা ছিল পাঠক তৈরি করা। এটা অনেক বড়ো একটি কাজ। তিনি শিশুদের বই প্রকাশে মনোযোগী হয়েছিলেন। তাদের সামনে মনীষীদের জীবনী তুলে ধরেছিলেন। তাঁর মানবিক গুণাবলীর পরিচয় পাই আমরা, যখন দেখি, হতদরিদ্র মানুষকে প্রতিষ্ঠিত হতে সাহায্য করে গেছেন তিনি। ভিক্ষুকের হাতকে শ্রমিকের হাতে পরিণত করেছিলেন। তাঁর বিনয়, উদারতা, নিরহংকারের যে পরিচয় আমরা পাই, সে পরিচয় তাঁর উত্তরাধিকাররা বহন করে চলেছেন, যেকোনো ভালো কাজে আজাদীকে সম্পৃক্ত করার মধ্য দিয়ে। এ সময় ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেকের মতো মানুষের খুব প্রয়োজন ছিল, যারা এ সমাজকে বদলে সুখী সমৃদ্ধ সমাজ গড়তে নেতৃত্ব দেবেন। তরুণদের মাঝে সে স্বপ্নের বীজ বপন করতে তাঁর মতো কীর্তিমান ব্যক্তিত্বদের মূল্যায়ন করতে হবে। গতকাল ১১ নভেম্বর বিকেল চারটায় চট্টগ্রাম একাডেমি মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু একাডেমি কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সংবাদপত্র দৈনিক আজাদীর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ আবদুল খালেকের ৫৯তম মৃত্যুবার্ষিকীতে ‘অগ্নিকোণের অগ্নিপুরুষ’ শীর্ষক স্মরণসভায় আলোচকবৃন্দ এ অভিমত ব্যক্ত করেন। ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক স্মরণসভা কমিটির আহ্বায়ক মঈনুদ্দীন কাদের লাভলুর সভাপতিত্বে এবং বঙ্গবন্ধু একাডেমি কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ দিদার আশরাফীর সঞ্চালনায় স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কুয়েতের প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এসএম আবুল কালাম বলেছেন, আবদুল খালেক ইঞ্জিনিয়ার আপাদমস্তক একজন ধর্মপ্রাণ ও মানবিক মানুষ ছিলেন। তাঁর সৃষ্টি সমাজ পরিবর্তনের আলোক দিশারী ‘দৈনিক আজাদী’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধসহ দেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে এ পত্রিকাটি সাহসী ভূমিকা পালন করে চলেছে। এতে আমরা বীর চট্টলাবাসী গর্বিত। তিনি বলেন, মানবিকতার দিক দিয়ে আবদুল খালেক ইঞ্জিনিয়ার গরীব ও মেহনতি মানুষের পাশে থেকে তাদের কর্মের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হতে উৎসাহ যুগিয়েছেন। তিনি এ অঞ্চলের হাজারো দরিদ্র মানুষকে নীরবে দান করেন এবং তাদেরকে কর্মের প্রতি মনোনিবেশ করার জন্য সব সময় তাগিদ দিয়েছেন।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এএইচএম জিয়াউদ্দিন বলেন, মুসলমানদের শিক্ষা ও জ্ঞান বিকাশের স্বার্থে তিনি যেমন অকাতরে পৃষ্ঠপোষকতা করেছিলেন তেমনি স্বাধীনতার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপ ও সংগ্রামকে নৈপথ্যে থেকে এগিয়ে নিয়েছিলেন। কবি ও সাংবাদিক নাজিমুদ্দীন শ্যামল স্মারক বক্তব্যে বলেন, সকল অপশক্তির বিরুদ্ধে ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক প্রতিষ্ঠিত দৈনিক আজাদী সোচ্চার ছিল। এছাড়া সমাজ পরিবর্তনের আধুনিক ক্ষণজন্মা মানব আবদুল খালেক ইঞ্জিনিয়ারের অনুপম আদর্শ ও চরিত্র বাঙালির জাতীয় জীবনে বাস্তবায়ন করতে পারলে সুন্দর দেশ ও সমাজ গঠন করা সম্ভব হবে। স্মরণ সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী মিসেস দিলোয়ারা ইউসুফ, বঞ্চিত নারী ও শিশু অধিকার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান লায়ন এম জাফর উল্লাহ, শ্রমিক নেতা কামাল উদ্দীন চৌধুরী ও চট্টগ্রাম মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মর্জিনা আক্তার লুসি। স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রণবরাজ বড়ুয়া। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক শিব প্রসাদ, মুক্তিযোদ্ধা দুলাল কান্তি বড়ুয়া, মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ নাছির, এমআরএস রাসেল, পারভিন চৌধুরী, আসিফ ইকবাল, সজল দাশ, হাজী ইউনুস সওদাগর, এসএম হাসান উদ্দীন, কাজী আইয়ুব, আল্লামা মাহবুবুর রহমান, মো. তিতাস, শিল্পী হানিফুল ইসলাম, শিল্পী শিউলী আক্তার, আবদুর রাজ্জাক, আঞ্জুমান আরা, জেসমিন আক্তার জেসি, রাশেদা আকতার সুমি, আলমগীর চৌধুরী, জিএম পারভেজ প্রমুখ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসমুদ্রে সম্পদ আহরণে বেসরকারি খাতে সহায়তা করবে সরকার
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামের করোনায় নতুন শনাক্ত ২ জন